পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1720111736](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবু হেনা মুক্তি, খুলনা থেকে : সুন্দরবনের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের দাবিতে এ যাবত কালের আন্দোলন যেন ব্যুমেরং। গতি পাচ্ছে না আন্দোলনকারীরা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখী কর্মসূচী বানচালের পর আরো বেশ কিছু কর্মসূচীও ফ্লপ হয়েছে। এগিয়ে যাচ্ছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিশাল কর্মযজ্ঞ্য। বিভিন্ন সংস্থার উদ্বেগ বা বিএনপি’র মাঠে ময়দানের অগ্নিঝরা সংলাপ কিম্বা তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির আন্দোলন কোনটিই কাজে আসছে না। তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে আভাস পাওয়া গেছে যে শিগগিরি আবার আসছে কঠোর কর্মসূচী। এমনকি লাগাতার কর্মসূচীও আসতে পারে।
এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পদ্মাসেতুর কারণে বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে ইতিবাচক নির্বাচন কেন্দ্রীক মেরুকরণ হচ্ছে। নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়ার ক্ষেত্রে পদ্মা সেতু একটি সম্ভাবনাময় মাইল ফলক। কিন্তু সেই আশার আলো কিছুটা হলেও ¤øান হতে পারে এই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকান্ড। তবে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কুফলের দিকগুলো গন মানুষের অন্তরে কতটুকু আঘাত হানবে বা বিরোধী শিবিরের পক্ষ থেকে এই ইস্যুকে নির্বাচনের ক্ষেত্রে কতখানি প্রভাব ফেলতে পারবে সে বিষয়টি বিচার বিশ্লেষন করছে অভিজ্ঞ মহল।
সূত্রমতে, প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিতব্য ব্যাপক আলোচিত রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণচুক্তি বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে তেল গ্যাস রক্ষা কমিটি সহ বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো। এ নিয়ে অবরোধ, হরতাল, মানববন্ধন, লং মার্চ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ঘেরাও প্রভৃতি কর্মকান্ড অব্যাহত থাকলেও সরকার তাদের রোডম্যাপে অনঢ় রয়েছে। ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এই কেন্দ্রটিতে ২০১৯ সালে উৎপাদন শুরুর সম্ভাবনা প্রবল। বিশ্ব ম্যানগ্রোভ ফরেষ্ট সুন্দরবন ও পরিবেশকে বিপন্ন করে রামপালে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন এখন আমজনতার গলার কাটা। আর সরকারের কাছেও যেন বিষফোঁড়া। বিশিষ্টজনেরা বলছেন, সরকার প্রকল্পটি যেমন বন্ধ করতে পারছে না তেমনি বাস্তবায়ন করতে হলে একটি বিশাল জনগোষ্ঠির রোষানলে পড়তে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুন্দরবন থেকে সরকারি হিসাবে মাত্র ১৪ কিলোমিটার দুরত্বে অবস্থিত রামপাল বিদ্যুাকেন্দ্রে যে লক্ষ লক্ষ টন কয়লা পোড়ানো হবে তা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোয়া, ছাই, রাসয়নিক পদার্থ ইত্যাদি আশে-পাশের বায়ু, পানি, মাটিকে দূষিত করবে। এই দূষণ পানি ও বাতাসের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়ে বিশ্বের সর্ববৃহা ম্যানগ্রোপ বনাঞ্চল সুন্দরবনকে বিপন্ন করবে। রামপাল বিদ্যুাকেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় বিপুল পরিমান কয়লা বহনকারী জাহাজ আসা-যাওয়া করবে বনের ভিতর দিয়ে। বহুল সমালোচিত এই প্রকল্প নিয়ে ইতিমধ্যে শুধু দেশে নয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থাও প্রশ্ন তুলেছে। তবে ইউনেস্কো এই মুহুর্তে সরকারের পাশেই আছে।
আবার এই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতার স্মারক। কেন্দ্রটি স্থাপনের জন্য বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠান বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) ও ভারতের সরকারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার কোম্পানির (এনটিপিসি) যৌথ উদ্যোগে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিআইএফপিসিএল)। বর্তমানে বাংলাদেশের বিদ্যুৎসচিব এই কোম্পানির চেয়ারম্যান। আর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনটিপিসির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
সূত্রমতে ২০১০সালের ডিসেম্বর থেকেই রামপালে ১৮৩৪ একর জমি অধিগ্রহণ এবং মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়। সব বিরোধীতা উপেক্ষা করে ২০১৩ সালের ৫ আগষ্ট রামপাল বিদ্যুাকেন্দ্র স্থাপনের পরিবেশগত ছাড়পত্র দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। গত ৫ অক্টোবর’১৩ প্রকল্প থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় কেন্দ্রটি উম্বোধন করা হয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র-প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রটি নির্মাণের জন্য ঠিকাদার নির্বাচিত হয় ভারত হেভি ইলেকট্রিক লিমিটেড (ভেল)। বর্তমানে প্রকল্পের কাজ দ্রæতগতিতে এগিয়ে চলছে। অপরদিকে বামমোর্চার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, শুরু থেকে সরকার ও তাদের পক্ষের কিছু বিশেষজ্ঞ প্রচার চালাচ্ছে যে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুাকেন্দ্র সুন্দরবনের কোন ক্ষতি করবে না। কয়লার কারনে পরিবেশ দূষণ না হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ভারত-চীনের পরিবেশ রক্ষা দপ্তরগুলো কয়লাভিত্তিক বিদ্যুাকেন্দ্রের কারনে ভয়াবহ পরিবেশ দূষণের কথা বলছে কোন যুক্তিতে? রামপালে কয়লা পুড়বে বছরে ৪৭ লাখ ২০ হাজার টন, প্রতিদিন ১৩ হাজার মেট্রিক টন। এতে ছাই হবে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ মেট্রিক টন। সূত্রমতে, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদিত প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুতের দামের বিপরীতে স্থানীয় উন্নয়নের জন্য তিন পয়সা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআইএফপিসিএল। এতে বছরে প্রায় ২৭ কোটি টাকা হবে। এই টাকা স্থানীয় রাস্তাঘাট, হাসপাতাল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।