২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় আড়াইলাখ মানুষ নতুন করে প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। তার মধ্যে ৩০ হাজারের মত মৃত্যু ঘটে। প্রোষ্টেট গø্যান্ডের কোষ যখন ফুলে উঠে এবং তা ম্যালিগন্যান্ট কোষে রুপ নেয়, তখন ক্যান্সারে পরিবর্তিত হয় তবে প্রোষ্টেট গø্যান্ড বড় হওয়া মানেই যে ক্যান্সার, তা কিন্তু নয়। ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার রিসার্চ ফান্ড ইন্টারন্যাশনালের একটি পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমান পর্যন্ত প্রোষ্টেট ক্যান্সারের যে কোষ নথিভুক্ত হয়েছে তার মধ্যে সকল ধরনের নতুন ক্যান্সার কোষের ৮ শতাংশ। বর্তমানে পোষ্টেট ক্যান্সার সফলভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব এবং বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ পুরুষ সফলভাবে চিকিৎসার পরে বেঁচে আছে।
প্রোষ্টেট কি? : শ্রোনীচক্রের ভিতরের একটি ছোট গ্রন্থি যা একমাত্র পুরুষেদেরই থাকে। আখরোট আকারের এ গ্রন্থিটি পুরুষাঙ্গ ও মূত্রাশয়ের মধ্যে অবস্থান করে। এটি মুত্রানালী ঘিরে থাকে, যা মুত্রাশয় হতে পুরুষাঙ্গে মূত্র বহনকারী নল। প্রোষ্টেট বীর্য উৎপাদনে সাহায্য করে। প্রোষ্টেট থেকে এক ধরনের সাদা তরল পদার্থ তৈরী হয় যা শুক্রাশয়ে উৎপন্ন শুক্রানুর সাথে যুক্ত হয়ে বীর্য সৃষ্টি করে।
প্রোষ্টেট ক্যান্সারের লক্ষণাবলী : প্রোষ্টেট ক্যান্সার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, তাই কয়েক বছর পর্যন্ত সব লক্ষণ অনুভব নাও হতে পারে। তবে প্রোষ্টেট বড় হয়ে যখন মুত্রনালীকে আক্রান্ত করে তখনই কিছু লক্ষণ দেখা যায়। রোগী তখন প্র¯্রাব করতে বেশ কিছু অসুবিধাবোধ করে। যেমন-
হঠাৎ বেশী বেগে প্র¯্রাব পাওয়া।
প্র¯্রাবের সময় ব্যথা অনুভব হওয়া।
প্র¯্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া।
বীর্যরসের সাথে রক্ত যাওয়া।
কোমর ও তলপেটে ব্যথা অনুভব হওয়া
ঘন ঘন প্র¯্রাব হওয়া, বিশেষ করে রাতের বেলা বেশী।
প্র¯্রাবের বেগ আটকে রাখা কষ্টকর হওয়া।
মুত্রত্যাগের শুরুতে প্র¯্রাব আসতে দেরী হওয়া, প্র¯্রাব শেষ করতে বেশী সময় লাগা।
মুত্রত্যাগের পরেও মনে হয় বেগ আছে।
কিছু ক্ষেত্রে বিনাইন প্রোষ্টেটিক হাইপারপ্লাসিয়ার কারণেও হতে পারে। তাই উপযুক্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা করেই নিশ্চিত হতে হবে।
প্রোষ্টেট ক্যান্সার কাদের হয় এবং কেন হয় : এখন পর্যন্ত প্রোষ্টেট ক্যান্সারের কারণ জানা যায় নি। কায়েকটি বিষয় আছে যা এ রোগের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি করতে পারে। পুরুষদের যত ক্যান্সার হয় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী হয় কোলরেক্টাল ও ফুসফুস ক্যান্সার। এর পরই হয় প্রোষ্টেট ক্যান্সার।
বয়স বৃদ্ধি অর্থাৎ ৫০ বছরের উপর পুরুষদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশী থাকে। তবে প্রোষ্টেট ক্যান্সার আক্রান্তের গড় বয়স ৬৬।
বাবা ভাই বা চাচা এমন নিকটাতœীয়ের প্রোষ্টেট ক্যান্সার হওয়ার ইতিহাস থাকলে অন্যদের তুলনায় এ রোগে আক্রান্তের ঝুঁকি আড়াই গুন বেশী থাকে।
গবেষণায় দেখা গেছে, কোন নিকট মহিলা আত্মীয়ের স্তন ক্যান্সারের ইতিহাস থাকলে, তাহলে পুরুষদের প্রোষ্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি প্রায় দেড় গুন বেড়ে যায়।
সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে, অতিরিক্ত ওজন বা স্থ’ূলতা প্রোষ্টেট ক্যান্সার হওয়ার সাথে সম্পর্কিত।
কালো চামড়ার পুরুষদের প্রোষ্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশী।
নিয়মিত শারীরিক চর্চা অনুশীলনকারী ব্যক্তিরা প্রোষ্টেট ক্যান্সার হওয়ার কম ঝুঁকিতে থাকে।
ধুমপায়ীদের প্রোষ্টেট ক্যান্সার অধূমপায়ীদের তুলনায় বেশী।
প্রোষ্টেট ক্যান্সার ও খাদ্যাভ্যাসের মধ্যে সম্পর্ক নিরুপনের জন্য গবেষণা চলছে। গবেষণা অনুসারে দেখা যায়, উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার প্রোষ্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
গবেষণায় দেখা যায় যারা নির্দিষ্ট পুষ্টি উপাদান, যেমনঃ লাইকোপিন, সেলেনিয়ামযুক্ত খাবার কম খান তাদের প্রোষ্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি বেশী। টমেটো সহ লাল ফলে লাইকোপিন ও বাদামে সেলেনিয়াম থাকে।
কিভাবে রোগ নির্নয় করবেন: প্রোষ্টেট ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য একক কোন পরীক্ষা নেই। তবে রোগ নির্ণয়ের জন্য প্রচলিত পরীক্ষা গুলোর উপকার ও অপকার উভয়ই আছে, তবে চিকিৎসক রোগীর সাথে আলোচনা সাপেক্ষে পরীক্ষা করেন পরীক্ষা গুলোর মধ্যে-
পায়ুপথে আঙুল দিয়ে চিকিৎসক প্রোষ্টেট গ্রান্ডের পরিবর্তিত অবস্থা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা করতে পারেন।
রক্তে প্রোষ্টেট স্পেসিফিক এন্টিজেনের (পি এস এ) মাত্রা নির্ণয়ের পরীক্ষা। এ পরীক্ষা দ্বারা প্রাথমিক অবস্থার প্রোষ্টেট ক্যান্সার নির্ণয় করা যেতে পারে।
সংক্রমণ আছে কিনা তা জানার জন্য মূত্রের পরীক্ষা।
প্রোষ্টেট ক্যান্সারের পাশাপাশি অন্যান্য কিছু রোগেও যেমনঃ ক্যান্সার বিহীনভাবে প্রোষ্টেট বৃদ্ধি এবং মূত্রনালীর প্রদাহের কারণেও পি এস এ এর মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে পি এস এ এর মাত্রা উচ্চ থাকলে তা প্রোষ্টেট ক্যান্সার এমনটা কিন্তু নয়।
প্রোষ্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসা : যেহেতু প্রোষ্টেট ক্যান্সার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়, তাই অনেক বছর যাবৎ লক্ষণ প্রকাশ নাও হতে পারে। তবে-
প্রোষ্টেট ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর কার্যকরী চিকিৎসা হচ্ছে সার্জারীর মাধ্যমে প্রোষ্টেট অপসারণ। তবে রোগীর বয়স ও অন্যান্য শারীরিক অসুবিধার কারণে অনেক ক্ষেত্রে তা সম্ভবপর হয় না।
অনেক ক্ষেত্রে রেডিও থেরাপি, কেমোথেরাপি, হরমোন থেরাপি, প্রোটন থেরাপিও প্রয়োজন হয়। তবে সেক্ষেত্রে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় রোগীর বয়স ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারনেও ঝুঁকি থাকে।
হোমিওপ্যাথি মতে লক্ষণ দেখে প্রোষ্টেট এর সমস্যাসহ ক্যান্সার থেকে নিরাময় পাওয়া সম্ভব।
পুরুষাঙ্গের উত্থানজনিত সমস্যা, প্র¯্রাবের বেগ ধারনে অক্ষমতা প্রভৃতি শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি ক্যান্সারের চিকিৎসা গ্রহনের কারণে রোগী দুশ্চিন্তায় পড়তে পারেন। এতে হতাশার কিছু নেই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে গ্রহণ করলে, এই রোগ হতে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব।
ডাঃ মোঃ হুমায়ুন কবীর
ডিজিটাল হোমিওপ্যাথিক
ট্রিটমেন্ট নেটওয়ার্ক উঐঞঘ
৮২/৮ উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা-১২০৪।
মোবাইলঃ ০১৭১৭৪৬১৪৫০।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।