Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফেনীর মুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

| প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোঃ ওমর ফারুক, ফেনী থেকে : ফেনীর মুহুরী নদীর অব্যহত ভাঙনে সোনাগাজীর আমিরাবাদের উপকুলীয় অঞ্চলের শতাধিক পরিবার ভিটেবাড়ি হারিয়েছে। সর্বস্ব হারানো এসকল মানুষেরা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এছাড়া ভাঙন আতংকে রয়েছে ইউনিয়নের চরকৃঞ্চজয়, চরলামছি, চরডুব্বা, পূর্ব সোনাপুর ও বাদামতলি এলাকাসহ সদর ইউনিয়নের ৭ গ্রামের মানুষ।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, মুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দিয়ে মাছের ঘের তৈরির কারণে উপজেলার আমিরাবাদ ও সদর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, মুহুরী নদী থেকে সরকারদলীয় প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং নদীর মাঝখানে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দিয়ে মৎস্য চাষ করে যাচ্ছে। এতে পানির স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ বাধার সম্মুখীন হয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের কারণে ভাঙনের মুখে পড়ছে নদী পাশের গ্রামগুলো।
এই ছাড়া চলতি মৌসুমে উপকূলীয় এলাকায় নতুনভাবে বিভিন্ন খাল খননের কারণে বর্ষায় পানির গতিপ্রবাহ প্রচুরভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ষাটের দশকে নির্মিত পুরাতন ¯øুইস গেইট ভেঙে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে গ্রামগুলোকে নদী ভাসিয়ে নিচ্ছে। এলাকাবাসী জানান, ভাঙনের কবলে সোনাগাজী উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের পূর্ব চরকৃষ্ণজয় (গুচ্ছগ্রাম), চরলামছি,চরডুব্বা, পূর্ব সোনাপুর ও বাদামতলী গ্রামের ঘর-বাড়ি এবং শতশত একর ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
একইভাবে সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম- চর খোন্দকার, চর নারায়ন এর বাড়ি-ঘর, মৎস্য চাষ প্রকল্প ও অধিকাংশ ফসলি জমি নদীগর্ভে ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। চর খোন্দকার গ্রামে মজিবুল হক মেম্বারের বাড়ির সম্মুখের মসজিদটি যেকোনো সময়ে নদী ভাঙনে তলিয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে উক্ত গ্রামের একটি রাস্তা ও ১০টি বাড়ি মুহুরী নদী গ্রাস করেছে।
আমিরাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম জহির বলেন, ফেনী সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দীন হাজারীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এছাড়া পাউবো ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী ও সহকারী প্রকৌশলীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি আরো বলেন,কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে আমিরাবাদ ও সোনাগাজী ইউনিয়নের ঘর-বাড়ি এবং ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে উক্ত এলাকার বাসিন্দাগণ নিঃস্ব বাস্তুহারা হয়ে যাবে। সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল আরেফিন বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এই এলাকায় বেড়িবাঁধ নির্মাণসহ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে এলাকার জনগণ জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদানসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান জানান, একদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, অপরদিকে চট্টগ্রামের মিরসরাই এলাকার লোকজন নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছের ঘের তৈরি করে নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ রুদ্ধ করে দিয়েছে। এতে ভাঙনের কবলে পড়ছে মুহুরী নদীর দু’পাশের গ্রামগুলো। এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ