পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : লেখক (ডব্লিউ জে ওয়ালাচাউ) লিখিত সংবিধানের বিচার বিভাগীয় পর্যালোচনার প্রশ্নে সৃষ্ট অচলাবস্থার নিরসন কামনা করেছেন। তিনি দুটা গ্রুপের বর্ণনা দিয়েছেন। তার কথায় গ্রুপ দুটো হচ্ছে ‘বুস্টারস’(সমর্থমক) ও ‘ব্যাশারস’(সমালোচক)। ‘বুস্টারস’ গ্রুপটি ‘কানাডিয়ান চার্টার অব রাইটস’-কে সমুন্নত রাখতে প্রত্যাশী, অপরদিকে ‘ব্যাশারস’ গ্রুপটি এর সমালোচনা করে। ‘বুস্টারস’ গ্রুপটি সংবিধানের প্রতি দৃঢ়তার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ থেকে সংবিধানকে আরও মূল্যবান করে তোলে। ‘ব্যাশারস’ গ্রুপের মতে এটি লিখিত সংবিধানের অন্যতম প্রধান ত্রুটি। লেখক সাংবিধানিক বা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে উত্তরণে সক্ষম করে তোলার একটি গ্রহণযোগ্য বিষয়ের কথা বলেছেন, যা নির্ভরযোগ্য অথচ নমনীয়। তিনি বলেন, অধিকার সংরক্ষনের বিষয়টি সনাতনী প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতির ওপর ছেড়ে দিতে হবে। এ প্রতিষ্ঠানটি হলো অনির্বাচিত বিচার বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি গাওয়েরের (Gwyer) মতানুযায়ী, সংবিধানের ব্যাখ্যা দেয়া যাদের দায়িত্ব তাদেরকে ব্যাপক ও উদার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হতে হবে। তবে এর অর্র্থ এই নয় যে, তারা অবাধে যেকোন আইগত কিংবা সাংবিধানিক তত্তে¡র অজুহাত দেখিয়ে, এমন কি বাদ পড়ে যাওয়া শব্দ বা অংশ জুড়ে দেয়ার কিংবা ভুল-ভ্রান্তি সংশোধনের অজুহাতে বিধিবদ্ধ আইনের ভাষা বিস্তৃত কিংবা বিকৃত করতে পারবেন না। কেন্দ্রীয় আদালত তার অবস্থান জোরদার করবে না, বরং নমনীয় করবে; আইন ঘোষনা ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি কোন কিছু করতে চাইলে সরকারের সংবিধান যে একটি জীবন্ত ও জৈবিক বিষয় তা যথাযথভাবে প্রতিফলিত করতে হবে। আর এ দলিলটি সব দলিলের সেরা হিসেবে এই বোঝানোর দাবি করতে পারে যে, ut res magis valent quam pareat অর্থাৎ আইনকে বাতিল না করে তা এমনভাবে বোঝনোর চেষ্টা করা যাতে তা অর্থবোধক হয়। আইনকে ধ্বংস না করে তাকে কার্যকারিতা দেয়া উচিত (১৯৩৯) এফসিআর ১৮, ৩৬(৩৯)।
এই আপিলে (আপিল বেঞ্চে) উত্থাপিত যুক্তি তর্কের moot question ছিল সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আইন-২০১৪-তে সংবিধানের মৌলিক কাঠামো লঙ্ঘিত হয়েছে কিনা। সে ব্যাপারে এই আদালতের সুষ্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজন। প্রকৃতপক্ষে এটিই এই আপিলের মূল বিষয়। দৃশ্যতঃ এই প্রশ্নটি কোন ক্ষতিকর মনে নাও হতে পারে এবং হতে পারে এটি অকপট সোজাসাপটা । তবে আসলে সহজে সমাধান করার মত বিষয়টি ততটা সহজ নয়। বরং এই প্রশ্নের সমাধান সাধারণভাবে বিগত সাত দশকে (১৯৪৭-২০১৬), বিশেষ করে গত সাড়ে চার দশকে আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে ঘটে যাওয়া অত্যন্ত জটিল ও অতল গহীন কিছু ঘটনাবলী ও বিষয়সমূহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। এটি যদি সংবিধান সংশোধনীর সহজ চ্যালেঞ্জ হতো তবে তা সমাধান করে রায় প্রদান করা সহজতর হতো। কিন্তু আমাদের একটি দীর্ঘ ও বর্ণাঢ্য ইতিহাস রয়েছে। আর সে কারণে এই আদালতের শুধু মূল মতামত নিয়ে সমস্যার সংক্ষিপ্ত রায় প্রদান করা উচিত হবে না।
যে প্রশ্নগুলো এই আপিল আদালতে উত্থাপিত হয়েছে তা আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়ে ঘটেছে। তবে আমাদের জাতীয় জীবনে অনিশ্চয়তা ও অস্থিতিশীলতার কারণে এখনো তার সুনির্দিষ্ট কোন সমাধান হয়নি। অন্যতম বিতর্কের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সাথে অভিন্ন প্রশ্নটি হচ্ছেঃ
‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের পদ্ধতি পার্লামেন্টের হতে দেয়া হলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুন্ন এবং/ কিংবা ক্ষতিগ্রস্ত হবে কিনা?’
বিশ্বের প্রথম গণতান্ত্রিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রেও অনুরূপ বিষয়ে বিতর্ক হয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগে স্থিতিশীলতা আনায়নকারী সুষ্ঠু রাজনৈতিক-বিচার বিভাগ পরিমার্জিত করতে কয়েকশ’ বছর পেরিয়ে গেছে। তাদের প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ২২০ বছর পরেও এই বিতর্ক এখনও শেষ হয় নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই শেষ না হওয়ার অর্থ অসম্পূর্ণতা কিংবা বিশৃঙ্খলা নয়। বরং তাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সঠিক পরিকল্পনা, সংজ্ঞায়িত ও পূনঃসংজ্ঞায়িত করতে প্রতিবারই তারা আরও সুসংহত, সুষ্ঠু এবং সুসমন্বিত উপায় বের করতে সৃজনশীলভাবে বিভিন্ন বিকল্প খুঁজেছে; যাতে করে তাদর সমাজ আরও স্থিতিশীল হয় এবং সংবিধানে বর্ণিত প্রতিশ্রুতি পূরণে সক্ষম হয়। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।