Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অস্ট্রেলিয়াকে পেয়ে রোমাঞ্চিত মুশফিকরা

| প্রকাশের সময় : ৮ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : চট্টগ্রামে কন্ডিশনিং কাম্পে গত তিনদিন নিবিড় অনুশীলন করার মধ্য দিয়ে টিম বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের বেশ ভালো সময় কেটেছে। প্রস্তুতি পর্বটা ভালো হওয়ায় খুশি দলের খেলোয়াড়রা। আগামীকাল থেকে চট্টগ্রাম ভেন্যু জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হচ্ছে তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। এজন্য আজ মুশফিকেেদর কোন অনুশীলন নেই, থাকবেন পূর্ণ বিশ্রামে।
ক্যাম্পের ক্রিকেটাররা দু’ভাগে ভাগ হয়ে কাল মাঠে নামবেন। প্রস্তুতি ম্যাচটিকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ার জন্য সকল খেলোয়াড়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ দলপতি মুশফিকুর রহিম। তিনি মনে করেন, এই প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্সের বিচারে টেস্ট স্কোয়াড হতে পারে। তাছাড়া চট্টগ্রাম ভেন্যুর যে উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে, সেই উইকেটেই হচ্ছে এই প্রস্তুতি ম্যাচ। এ কারণে উইকেটের সঙ্গে খাঁপ খাইয়ে নিতেও প্রস্তুতি ম্যাচটি খেলোয়াড়দের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এ প্রসঙ্গে কন্ডিশনিং ক্যাম্পের অনুশীলন শেষে গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশ দলপতি বলেন, ‘চট্টগ্রামে আমাদের খুব বেশি খেলার সুযোগ হয় না। যে কোনো হোম সিরিজের আগে মিরপুরেই প্র্যাকটিস করা হয় সবসময়। চট্টগ্রামে যেহেতু ম্যাচ রয়েছে, তাই এই ভেন্যুতে কন্ডিশনিং ক্যাম্প করার পরিকল্পনাটা বেশ ভালো। এখানে এসে প্র্যাকটিস করতে পেরে এখানকার কন্ডিশনের সঙ্গে যেমন মানিয়ে নেয়ার সুযোগ পাচ্ছি, তেমনি আমাদের মাইন্ড ফ্রেসনেসের ক্ষেত্রেও এটি দারুণভাবে কাজ করছে। তাছাড়া এখানকার যে উইকেটে টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে, সেই উইকেটে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলবো। এর ফলে যে অভিজ্ঞতা হবে তা ম্যাচে কাজে লাগানো যাবে। সবমিলিয়ে আমাদের প্রস্তুতিটা এবার অনেক ভালো হচ্ছে। এরসঙ্গে হোম সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারলে ফলাফল আমাদের পক্ষেই থাকবে।’
দীর্ঘ একযুগের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রথম বারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলার সুযোগ পাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। শুধু তিনিই নন, এই দলের কারোরই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তাই সকলেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার সুযোগ পেয়ে রোমাঞ্চিত। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে প্রথমবারের এই মোকাবিলায় জয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না বাংলাদেশ দলপতি। কারণ আবার কখন অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলার সুযোগ হবে তা তার জানা নেই। এ কারণেই জয় তুলে নিয়ে এই সুযোগটি শতভাগ কাজে লাগাতে চান তিনি । হোম সিরিজটি জয়ের প্রসঙ্গে মুশফিক বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে ভালো কিছু করার এটাই সঠিক সময়। দীর্ঘদিন পর অস্ট্রেলিয়ার মতো পেশাদার দলের বিপক্ষে খেলার জন্য দলের সকলেই মুখিয়ে আছেন। আমাদের এই দলটা অনেক দিন ধরেই একসঙ্গে খেলছে। ভালো কিছু করার সামর্থও রয়েছে এই দলটির। গতবছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা হোম সিরিজে একটি টেস্টে জয় পেয়েছি। এ বছর শ্রীলংকায় গিয়েও প্রথম ম্যাচে হারার পর দ্বিতীয় ম্যাচে জয় তুলে নিতে পেরেছি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে এসবই আমাদের বড় অনুপ্রেরণা। তারমধ্যে এই হোম সিরিজ খেলার আগে আমরা দুই মাস সময় পাচ্ছি নিজেদের প্রস্তুত করার জন্য। গত ১২ বছরে এভাবে কোনো সিরিজের আগে নিজেদের প্রস্তুত করার এত সময় পাইনি। তাই আশা করছি, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই হোম সিরিজে আমরা ভালো কিছু করতে পারবো। আমাদের প্রস্তুতি বেশ ভালো। দলের সকলেই কঠোর পরিশ্রম করছে। আমাদের ভালো কিছু করার সামর্থও রয়েছে। সেইসঙ্গে রয়েছে আত্মবিশ্বাসও।’ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজেদের কৌশলের কথা উল্লেখ করে মুশফিক বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েক বছর ধরেই ডিফেন্সিভ খেলছি না। এ কারণে ব্যাটিংয়ে অনেক রান আসছে। বল হাতেও উইকেট পাওয়া যাচ্ছে। এরফলে অধিকাংশ ম্যাচই আর ড্র হচ্ছে না। ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে। তাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ডিফেন্সিভ খেলার পরিকল্পনা নেই তবে ব্যালেন্সিভ খেলতে চাই। তাদের বিরুদ্ধে ভালো একটা শুরু করতে পারলে ফলাফল বের করা সম্ভব।’ অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে নিজের ব্যক্তিগত টার্গেটাও জানিয়ে রাখলেন তিনি, ‘আমি সব সময়ই চেষ্টা করি ভালো কিছু করার জন্য। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও ভালো কিছু করতে চাই।’
টেস্ট ক্রিকেটে জয়ের জন্য টেল এন্ডারদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মুশফিক বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে টেল এন্ডারদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশ কয়েকটি দল এই সুবিধাটি পেয়ে থাকে। নতুন ব্যাটিং কোচ মার্ক ও’নিল বেশ ভালো। তার পরামর্শ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কাজে লাগাতে চাই। তার একটি ভালো দিক তিনি বারবার রিমান্ডার দেন। তাছাড়া তিনি টেল এন্ডারদের নিয়ে বেশি কাজ করছেন। যার সুফলতা দু’এক বছরের মধ্যেই পাওয়া যাবে।’
হোম কন্ডিশনের সুযোগটাও পুরোটা কাজে লাগাতে চান মুশফিক, ‘এর আগেও হোম সিরিজে আমরা অনেক ভালো টেস্ট খেলেছি। তাই হোম কন্ডিশনকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। বরং হোমে নিজেদের পছন্দের উইকেটে আমরা ভালো করতে পারছি। অস্ট্রেলিয়া তাদের নিজেদের মাটিতে যেমন ভালো খেলে, তেমনি এই উপ-মহাদেশেও তারা খারাপ খেলে না। তাই তাদের বিপক্ষে এই সিরিজটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। তবে আমাদের এই দলটি আর আগের বাংলাদেশ দল নয়। আমাদের বিশ্বমানের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার রয়েছেন। পাঁচ বছর ধরে ব্যাটিংয়ে ধারাবাহিকতা এসেছে। প্রতিটি সিরিজেই আমাদের নতুন বোলার দলে আসছে। তাই বোলিংয়ে ধারাবাহিকতা আসতে আরো একটু সময় লাগবে।’ তারপরও মিরাজ, সাকিব, তাসকিন, তাইজুল, রুবেল ও শফিউলদের ২০ উইকেট নেয়ার ক্ষমতা আছে বলে মনে করেন মুশফিক। বিশ্বমানের খেলোয়াড় সাকিব ও তামিমের উপরও নিজের আস্থার কথা জানান তিনি। দলের সকলেই নিজ নিজ জায়গায় ভালো খেলতে পারলে যে কোনো দলকেই হারানো সম্ভব বলে জানান টাইগার টেস্ট অধিনায়ক। এই লক্ষ্যে তার দলও আত্মবিশ্বাসী বলে জানান, ‘এজন্য দলের সকল সদস্যই কঠোর পরিশ্রম করছেন। আশা করছি, মাঠে এর প্রতিফলন দেখা যাবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুশফিক

১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ