Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘এল ক্ল্যাসিকো’ বার্সার

| প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : গেল মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং লা লিগার কোনটাই জিততে পারেনি বার্সেলোনা। দুটি শিরোপাই গেছে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের ঘরে। এবার নিশ্চয় দুটি শিরোপাই পুনরুদ্ধার করতে চাইবে কাতালানরা। এজন্য নতুন মৌসুম শুরু হওয়ার আগে রিয়াল মাদ্রিদকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েই শেষ প্রস্তুতিটা নিয়ে রাখল স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
হোক না এটা ছিল নেহাত একটা প্রীতি ম্যাচ। তবুও ‘এল ক্ল্যাসিকো’ বলে কথা। উত্তেজনার বাড়তি একটা রেশ তো থাকেই, যে পৃথীবির যে প্রান্তেই হোক না কেন। পুরো বিশ্বের ফুটবল রোমান্টিকদের তাই নজর ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামিতে। আশানুরুপ টানটান উত্তেজনাকর একটি ম্যাচেরই সাক্ষী হয়েছে মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়াম।
সবকিছু ভেবে চিন্তে দু’দলই এদিন পূর্ণ শক্তির দল মাঠে নামায়। জিনেদিন জিদানের দলে ছিলেন না কেবল ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ব্যক্তিগত কারণে তিনি অবশ্য পুরো প্রাক মৌসুম প্রস্তুতি আসরেই অনুপস্থিত। এছাড়া বার্নাব্যুর দলে ছিলেন বেল, বেনজেমা, রামোস, মার্সেলো সবাই। বার্সা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দেও মেসি-নেইমার-সুয়ারেজে গড়া সেরা একাদশই মাঠে নামান।
৬৬ হাজার দর্শকে ঠাসা গ্যালারি মাতাতে মাত্র তিন মিনিট সময় নেন ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি। সভাবসুলভ ড্রিবলিংয়ে একজনকে কাটিয়ে গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে পরাস্থ করেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। চার মিনিট পর নেইমারের সহায়তায় ব্যবধান দ্বিগুন করে দেন ইভান রাকিটিচ। ছয় মিনিট পর ক্ল্যাসিকোর রং ফিকে করে নিতে পারতেন সুয়ারেজ। কিন্তু সহজ সুযোগ হাতছাড়া করায় সে যাত্রা বেঁচে যায় রিয়াল। এসময় যারা ভাবছিলেন একপেশে এক ক্ল্যাসিকোর সাক্ষী হতে যাচ্ছেন তারা, তাদের ভুল প্রমানিত করে পরের মিনিটেই মাতেও কোভাসিচের গোলে দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফিরে আসে রিয়াল। ৩৬তম মিনিটে মার্কো অ্যাসেনসির গোলে স্কোরলাইনে সমতাও আনে। এর আগে অবশ্য ব্যবধান বাড়ানোর অনেকগুলো সহজ সুযোগ নষ্ট করেন নেইমার ও সুয়ারেজ।
বিরতি থেকে ফিরে পাঁচ মিনিটের মাথায় নেইমারের ফি-কিকে পা বাড়িয়ে জয়সূচক গোলটি করেন জেরার্ড পিকে। ৬৪তম মিনিটে উঠে যান মেসি। শেষ দিকে উঠে যাওয়ার আগে ব্যবধান বাড়ানোর ততোধীক সহজ সুযোগ নষ্ট করেন নেইমার ও সুয়ারেজ দুজনই। নইলে আরো বড় ব্যবধানের জয় নিয় মাঠ ছাড়তে পারত বার্সা। অবশ্য এদিন গোল না পেলেও আগের দুই ম্যাচে বার্সার করা তিন গোলই এসেছিল নেইমারের পা থেকে।
সে যাই হোক, মৌসুম শুরুর আগে প্রস্তুতিটা ভালোই হলো বার্সার। নতুন কোচ হিসেবে ভালভার্দের শুরুটাও হলো দুর্দান্ত। হোক না প্রীতি ম্যাচ, তবুও জুভেন্টাস, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদের মত দলের বিপক্ষে টানা তিন জয় দিয়ে বার্সার মত ক্লাবে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করা তো স্বপ্নের মতই ব্যাপার। পুরো দলও ফুরফুরে মেজাজে ফিরেছে স্পেনে, কেবলমাত্র নেইমার ছাড়া!
না; ব্রাজিলিয়ান তারকা সেখান থেকে প্যারিসের বিমান ধরেননি, ধরেছেন চীনের বিমান। ক্লাবের হয়ে একটি বানিজ্যিক প্রমোশনে অংশ নিতে সেখানে পাড়ি দিয়েছেন ২৫ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। ম্যাচ শেষে এদিনও তাকে নিয়ে কথা বলতে হয়েছে ভালভার্দেকে। কিন্তু কন্ঠে তার সেই পুরোনো সুর, ‘আমি সব সময়-ই চেয়েছি অনুমানের উপর কথা না বলতে। আমাদের এখন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই। আমার দিক থেকে বলতে হয়, নেইমার এখনো আমার দলে আছে, আমরা তাকে দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য হিসেবে বিচেনা করি। আমরা মনে করি আগামী মৌসুমেও সে আমাদের সহযোগীতা করবে।’
নতুন মাসে ফুটবল ভক্কদের জন্য অপেক্ষা করছে আরো দুই দুটি ‘এল ক্ল্যাসিকো’। আগস্টেই স্প্যানিশ সুপার কাপের দুই লেগে মুখোমুখি হবে বার্সা-রিয়াল। এর আগে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে জিদানের সামনে। আগামী ৮ আগস্ট উয়েফা সুপার কাপে তারা লড়বে ইউরোপা চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার ইউনাইটডের বিপক্ষে। এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে তিনটি প্রস্তুতি ম্যাচেই হার! এ নিয়ে অবশ্য কোন আক্ষেপ নেই জিদানের। হোসে মরিনহোর বিপক্ষে নামার আগে যথেষ্ঠ সময় পাচ্ছেন বলেই তিনি খুশি। ক্ল্যাসিকোর হারও তাকে স্পর্শ করছে না। ম্যাচ শেষে সাবেক ফরাসি তারকা নিজের মন্তব্যও প্রকাশ করলেন দার্শনিক ভঙ্গিতে, ‘আজ আমরা পুরো দলের দুটো দিক দেখেছিÑ একটি খারপ, অন্যটি ভালো। কার্যত আমরা ৮ তারিখের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করছি ঐ সময়ের মধ্যে নিজেদের পুরোপুরি প্রস্তুত করে তুলতে পারব।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ