নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবল ম্যাচ এল ক্ল্যাসিকো। গত দশ বছরে ব্যাক্তিগত দ্বৈরথে এটাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন বিশ্বের সর্বকালের অন্যতম সেরা দুই খেলোয়ান লিওনেল মেসি ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। কিন্তু ন্যু ক্যাম্পে আগামীকাল রাতে যখন বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ মুখোমুখি হবে তখন মাঠে থাকবেন না তাদের কেউই।
রোনালদো এখন আর রিয়ালের নয়। লস ব্ল্যাঙ্কোসদের সঙ্গে নয় বছরের সম্পর্ক চুকিয়ে সেরি আর দল জুভেন্টাসে পাড়ি দিয়েছেন পর্তুগিজ তারকা। এর আগে বার্নাব্যুর দলের হয়ে করেন রেকর্ড ৪৫০ গোল। এসময় চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ শিরোপা জেতেন মোট ১৫টি। রোমাঞ্চকর এই ম্যাচের ঠিক এক সপ্তাহ আগে মেসির অনুপস্থিতির বিষয়টাও নিশ্চিত হয়।
এমন আগুনে ম্যাচে মেসির অনুপস্তিতি বিশ্বব্যাপি বার্সেলোনা ভক্তদের যে ব্যাথিত করেছে তা না বললেও চলে। ন্যু ক্যাম্পে সেভিয়া ম্যাচে যেদিন আর্জেন্টাইন নক্ষত্র হাত ভেঙে মাঠে কাতরাচ্ছিলেন সেদিন কাতালান সমর্থকদের চোখে মুখে ছিল রাজ্যের বিষ্ময়। কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দেও সেদিন বিষন্নতা ঢেকে রাখতে পারেননি। ম্যাচ জিতে সেদিন রিয়ালের চেয়ে পরিস্কার সাত পয়েন্টে এগিয়ে গিয়েও তাই একরাশ হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে কাতালানরা।
২০০৭-এর ডিসেম্বরে পর এবারই প্রথম এল ক্ল্যাসিকো ম্যাচে রোনালদো অথবা মেসি কেউই থাকছেন না। মাঝের সময়টাতে ক্ল্যাসিকো মহারণকে নতুন ছন্দে বেধে রুপায়ন করেন অমিয় এক ফুটবল ধারায়। এক্ষেত্রে প্রশ্ন এসেই যায় দুই মহাতারকার দ্বৈরথে কে ছিলেন সেরা? এক্ষেত্রে ফুটবল জাদুকর বেশ এগিয়ে। ২৬টি গোল ও ১৪ বার গোলে সহায়তায় ক্ল্যাসিকো ইতিহাসের সফলতম খেলোয়াড়ের নাম লিওনেল মেসি।
এখন প্রশ্ন হল, এমন ম্যাচে মেসির অবর্তমানে বার্সায় কে আলো ছড়াবেন? রিয়ালের হয়ে রোনালদোর ভূমিকা নেবেন কে? দুই তারকা অবর্তমানে ম্যাচের ধরণটাই বা কেমন হবে?
রোনালদোবিহীন রিয়াল
গোল যেন সোনার হরিণ
প্রথমে স্বীকার করতেই হবে জিনেদিন জিদানের পদত্যাগ ও রোনালদোর দল ছেড়ে যাওয়া বার্নাব্যু দলে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। সেই প্রভাবটা কেমন? লা লিগার পয়েন্ট তালিকায় তাকালেই উত্তর পেয়ে যাবেন। সেখানে শীর্ষ ছয়েও নেই রিয়ালের নাম! শেষ চার ম্যাচের তিনটিতেই হার। এসময় তারা গোলই করতে পারে মাত্র একটি। শেষ হার দুটো আবার আলাভেস ও লেভান্তের মত মধ্যম সারির দলের কাছে। দলের এমন ভরাডুবি শঙ্কায় ফেলে দিয়েছে কোচ হুলেন লোপেতেগির ভাগ্যকেও।
সবচেয়ে বড় সমস্যা অবশ্যই গোল করতে না পারা। সম্প্রতি ক্লাব ইসিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় গোলহীন থাকার রেকর্ড গড়ে দলটি। ভেলান্তের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানের হারে গোল করে সেই ক্ষরা দূর করেন মার্সেলো। পরের ম্যাচে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে করিম বেনজেমা ও মার্সেলোর গোলে ভিক্টোরিয়া প্লাজেনকে হারায় তারা।
২০১৭ সালে রিয়ালের ডাবল জয়ের সাফল্যে একাই ৪৮ গোল করেন রোনালদো। আলভারো মোরাতা ও হামেস রড্রিগুয়েজরাও ভূমিকা রাখেন তাতে। তাদের কেউই এখন নেই। বিনিময়ে দলে ভিড়েছেন কেবল মারিয়ানো দিয়াজ। দলে রয়েছেন গ্যারেথ বেল, ইসকো, মার্কো অ্যাসেনসিও ও বেনজেমাদের মত তারকারা। যে কোন কোচই এমন খেলোয়াড়দের দলে ভেড়াতে চাইবেন। ডি বক্সে তারা খেলছেনও চমৎকার। কিন্তু চূড়ান্ত লক্ষ্য হিসেবে বলকে জালে পাঠানোই যেন হঠাৎ ভুলে গেছেন তারা। এমন দশায় দলের স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ইসকো রোনালদো সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা তার জন্যে কাঁদতে পারি না যে এখানে থাকতে চায়নি।’ তবে পরিস্তিতি কিন্তু বলছে ভিন্ন কথা।
মেসির শূণ্যতা পূরণ
মিশন ইমপসিবল
সেভিয়া ম্যাচে পাঁচবারের বর্ষসেরা ইনজুরিতে পড়ার পর কোচ ভালভার্দেকে প্রশ্ন করা হল, মেসির অভাব পূরণ করবেন কি দিয়ে? ভালভার্দের সরল উত্তর, ‘আমি জানি না।’ দুই দিন পর মেসির সহযোদ্ধা জর্ডি আলবা বলেন ‘মেসির কোন বিকল্প হয় না’। মেসিকে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হিসেবেও মূল্যায়ন করেন তিনি। আলবার কথার সাথে দ্বিমত পোষণ করার মত ফুটবল বোদ্ধা পাওয়া ভার। এবার চলুন মেসির বিকল্প হিসেবে ভালভার্দের হাতে যারা আছেন তাদের পরিসংখ্যানের দিকে চোখ বুলানো যাক।
এক্ষেত্রে এগিয়ে উসমান ডেম্বেলে। ফরাসি ফরোয়ার্ডের গতি ও যোগ্যতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলবেন না। তবে বার্সার মত দলে টিকে থাকতে যেটা প্রয়োজন সেভাবে জ্বলে উঠতে পেরেছেন কম সময়ই। ২৬ ম্যাচে তার নামের পাশে ৬ গোল ও ৭ অ্যাসিস্ট। মুনির এল হাদ্দাদি ৯৬ ম্যাচে করেছেন ২১ গোল, সহায়তা ১৩ বার। রাফিনহে ৮২ ম্যাচ খেলে ১২ গোলের পাশাপাশি করেন ১০বার গোলে সহায়তা। অবশ্য মূল একাদশে তাদের সুযোগ হয় কমই। অধিকাংশ ম্যাচেই তারা খেলেছেন বদলি হিসেবে।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ম্যাচে রাফিনহে অবশ্য একাদশে নেমে দারুণ খেলা উপহার দেন ইন্টার মিলানের বিপক্ষে। বার্সাও সেদিন দুর্দান্ত খেলে ২-০ গোলে ম্যাচ জিতে নেয়। স্বভবতই এদিনও শিষ্যদের কাছ থেকে একই পারফর্মান্স চাইবেন ভালভার্দে।
মার্সেলোর সামনে সুযোগ
রক্ষণদুর্গ আগলে রাখার
মেসি না থাকায় রিয়ালের হয়ে সবচেয়ে বড় সুফল ভোগ করবেন মার্সেলো। রোনালদোর সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে যিনি খেলেছেন নয় বছর। ব্রাজিল রাইটব্যাক এদিন বেশ জায়গা পাবেন খেলার জন্যে। মেসির মত খেলোয়াড় যদি বিপক্ষ দলে থাকে তাহলে আপনি বেশি উপরে উঠতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে গোল খাওয়ার সম্ভবনা অনেক বেড়ে যাবে। মেসি না থাকায় রক্ষণ সামলে আক্রমণেও বেশি অবদান রাখতে পারবেন মার্সেলো। ক্ল্যাসিকোর নতুন নায়কের সম্ভব্য তালিকা করতে গেলে তাই উপরের দিকেই রাখতে হবে মার্সেলোর নাম। ঘরের মাঠে নিশ্চয় নায়ক হওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবেন না ফিলিপ কুতিনহো, লুইস সুয়ারেজ, জর্ডি আলবারাও।
এল ক্ল্যাসিকোয় মেসি ও রোনালদো
রোনালদো বনাম বার্সেলোনা মেসি বনাম রিয়াল মাদ্রিদ
৩০ ম্যাচ ৩৮
৮ জয় ১৭
২৬% জয়ের হার ৪৪.৭%
১৮ গোল ২৬
১ গোলে সহায়তা ১৩
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।