পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রাম ব্যুরো : ‘নবীর (সা.) শিক্ষা করো না ভিক্ষা মেহনত করো সবে।’ অথবা ‘ভিখারীর হাত হোক কর্মীর হাতিয়ার’। এই নীতি ও শিক্ষাকে সমাজে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে ধারাবাহিক কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে চলেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। অনেকেই মন্তব্য করছেন এটি সমগ্র দেশের জন্য হতে পারে অনন্য দৃষ্টান্ত। বন্দরনগরীতে কিংবা জেলায় পথেঘাটে সারাদিন অন্যের কাছে হাত পেতেই যাদের দিন আর রাত গুজরান করতে হতো, কখনও এক-আধবেলা খেয়ে কখনও উপোস কাটাতে হতো, তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তোলার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। যে হাতে হাতে ছিল ভিখারীর থালা-বাসন সেই পরমুখাপেক্ষী জীবন-যন্ত্রণা থেকে বের করে আনার জন্য তাদের হাতে ধরা দিয়েছে ‘ভাগ্যের চাকা’। আর তা হচ্ছে সেলাইমেশিন, রিকশা, ভ্যানসহ আরও কতকিছু। ওরা ভিখারীর দুঃসহ জীবন ছেড়ে এসে কাজ করে খাওয়ার শপথ নিয়েছে ‘ভিক্ষাবৃত্তি আর নয় এবার হবো স্বাবলম্বী’। সম্প্রতি চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসনে এসে দায়িত্বভার বুঝে নেয়ার সময়ই জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী একটি আশার কথা শুনিয়েছিলেন, ‘আমি চট্টগ্রামে এসেছি কিছু পেতে নয়, কিছু দিতে’। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি মহানগরী ও জেলার ভিক্ষুকদের স্বকর্মসংস্থানের মাধ্যমেই পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম জেলায় প্রথম ধাপে ১৫টি উপজেলায় ১৫ জন করে মোট ২২৫ জন ভিক্ষুককে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৯১ জন ভিখারীকে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। ভিক্ষুকদের সক্ষমতাসহ বিভিন্ন দিক যাচাই-বাছাইয়ের তাদেরকে স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ব্যবসার উপকরণ, সেলাইমেশিন, রিকশা, ভ্যান, টি-স্টল, ছোট আকারের হাঁস-মুরগির খামারের উপকরণ বিতরণ করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী নিজেই ওদের হাতে কর্মসংস্থানুখী উপকরণ তুলে দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছেন। এর পাশাপাশি কাজে ফিরে আসা ভিখারীদের সেলাইমেশিন ও দর্জি ট্রেডে ভাতাসহ প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। ১৫ উপজেলার ২২৫ জন ভিখারীর পুনর্বাসন সম্পন্ন হলে এমনকি পূর্ণাঙ্গ ডেটাবেজের ভিত্তিতে ধাপে ধাপে আরও ভিক্ষুককে পুনর্বাসনের পদক্ষেপ নেয়া হবে। স্থানীয় তহবিল ও স্বচ্ছল ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান, সমিতির অর্থায়নে এই মহতি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের তদারকিতে নগরী ও জেলায় নাম-ঠিকানা, ছবিসহ পুনর্বাসনযোগ্য ভিক্ষুকদের ডেটাবেজের আওতায় আনা হচ্ছে। ভিখারীর জীবন থেকে কর্মীর হাতিয়ারে পরিণত করার পরও হাল ছেড়ে বসে নেই জেলা প্রশাসন। তাদের কর্মসংস্থান কাজের অগ্রগতি মনিটর করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথেও সমন্বয় করা হচ্ছে।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী এ প্রসঙ্গে বলেছেন, দেশে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার এক নম্বর টার্গেট হচ্ছে সবধরনের দারিদ্র্য কার্যকরভাবে দূরীকরণ। ২০২১ সালের মধ্যে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত এবং মধ্যম-আয়ের বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে আমরা নগরী ও ১৫ উপজেলা মিলে পুরো চট্টগ্রাম জেলায় ‘ভিক্ষুক পুনর্বাসন কার্যক্রম’ বাস্তবায়ন করছি। এভাবে সমগ্র জেলা ভিক্ষুক মুক্ত হলে মানবসম্পদ কাজে লাগানো ও তাদের অবদান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।