পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চায়না ডেইলি ইউরোপ ও তিব্বত. সিএন : চীন তার বিরুদ্ধে কোনো সুযোগ না নেয়ার জন্য ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, চীনের ভূখন্ড রক্ষায় চীনা সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা ও দৃঢ়সংকল্পের ব্যাপারে ভারত কোনো ভুল ধারণা করে থাকলে তা ত্যাগ করা উচিত। চীনা ভূখন্ডের দোকলামে ভারতীয় সৈন্যদের অনুপ্রবেশের সর্বশেষ জবাবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ হুঁশিয়ারি দিয়ে ভারতকে সৈন্য সরিয়ে নেয়ার আহবান জানিয়েছে।
২৪ জুলাই বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র উ কিয়ান বলেন, চীনা গণমুক্তি ফৌজকে (পিপলস লিবারেশন আর্মি - পিএলএ) ৯০ বছরের ইতিহাস চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতা রক্ষায় তার ক্রমবর্ধমান সক্ষমতা এবং অনমনীয় দৃঢ়তা প্রদর্শন করে। তিনি বলেন, পাহাড়কে ঝাঁকুনি দেয়া সহজ, কিন্তু পিএলএকে নয়।
তিনি অবিলম্বে ভারতীয় সৈন্যদের সীমান্তের নিজ এলাকায় সরিয়ে নিতে ভারতের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, সৃষ্ট সমস্যা নিরসনের এটাই হচ্ছে পূর্বশর্ত ও ভিত্তি।
তিনি বলেন, আমরা ভারতকে তার অন্যায় সংশোধন, উস্কানি বন্ধ ও সীমান্ত অঞ্চলে শান্তি রক্ষার জন্য চীনের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে জোর আহবান জানাচ্ছি।
চীন যে কোনো মূল্যে তার ভূখন্ড, সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা স্বার্থ রক্ষা করবে উল্লেখ করে উ বলেন, বেইজিং এ অঞ্চলে জরুরি পাল্টা ব্যবস্থা নিয়েছে এবং তার লক্ষ্য-নির্ধারিত সৈন্য মোতায়েন ও প্রশিক্ষণ আরো জোরদার করবে।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে ওয়াশিংটনস্থ ইনস্টিটিউট ফর চায়না-আমেরিকা স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো সৌরভ গুপ্ত বলেন, সিকিম অংশে চীন-ভারত সীমানা বিন্যাস সিকিম ও তিব্বত সংক্রান্ত ১৮৯০ সালে গ্রেট ব্রিটেন ও চীনের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির অনুচ্ছেদ দ্বারা নির্ধারিত। তিনি বলেন, অসংখ্যবার বিভিন্ন উপলক্ষে ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওয়াহরলাল নেহরুর প্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিকভাবে তা স্বীকার করে নেন। গুপ্ত বলেন, এবার ভারত চীনের আঞ্চলিক সার্বভৌমত্ব লংঘন করেছে এবং সংলাপের পূর্বশর্ত হিসেবে তাকে অবশ্যই অনুপ্রবেশ করা স্থান থেকে সরে আসতে হবে।
চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং য়ি বলেন, দোকলাম থেকে ভারতীয় সৈন্যদের প্রত্যাহার করে চীন-ভারত সীমান্তে মুখোমুখি অবস্থার সমাধান করা সহজ। ২৪ জুলাই তিনি ব্যাংককে বলেন, দোকলাম সমস্যায় কে ঠিক আর কে ভুল তা সুস্পষ্ট। উর্ধ্বতন ভারতীয় কর্মকর্তারাই প্রকাশ্যে বলেছেন যে চীনা সৈন্যরা ভারতীয় ভূখন্ডে প্রবেশ করেনি। অন্য কথায় ভারত স্বীকার করেছে যে তারা চীনা ভূখন্ডে প্রবেশ করেছে। ওয়াং বলেন, এ সমস্যার সমাধান সহজ, ভারতকে তার সৈন্য সরিয়ে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, ওয়াংই হচ্ছেন চীনের সবচেয়ে উর্ধ্বতন কমর্কর্তা যিনি চীনা ভূখন্ডে ভারতীয় অনুপ্রবেশের ব্যাপারে মন্তব্য করলেন।
চায়না ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ ইনস্টিটিউটের সাউথ এশিয়া স্টাডিজের গবেষক লান জিয়ানজু বলেন, ২৪ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। তিনি বলেন,ভারতকে অবশ্যই বুঝতে হবে যে তারা নির্ধারিত সীমান্ত অতিক্রম করে ভুল করেছে এবং পরিস্থিতি সহজ করার জন্য তাদের সৈন্য প্রত্যাহার করা উচিত।
এদিকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ২৭ ও ২৮ জুলাই বেইজিংয়ে আয়োজিত ব্রিকস দেশগুলোর উচ্চ পদস্থ নিরাপত্তা প্রতিনিধিদের ৭ম বৈঠকে যোগদান করেছেন। গত বুধবার তিনি বেইজিং পৌঁছেন।
তিব্বত ডট সিএন জানায়, বিশেষজ্ঞরা বলেন যে বেইজিং ভারতের সফররত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার সাথে কোনো আপোস আলোচনা করবে না। ভারতের জন্য এ সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে চীনা ভূখন্ড থেকে একতরফাভাবে তার সৈন্য প্রত্যাহার করা।
নয়া দিল্লী টিভি জানায়, চলমান সিকিম বিরোধ নিয়ে দোভাল চীনের স্টেট কাউন্সিলর ইয়াং জিয়েচির সাথে বৈঠক করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র লু কাং বলেন, চীন সুস্পষ্টভাবে অর্থবহ সংলাপের পূর্বশর্ত দিয়েছে যা হচ্ছে দোকলাম মালভূমির চীনা এলাকা থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে।
সাংহাই সমাজ বিজ্ঞান একাডেমির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইনস্টিটিউটের গবেষণা ফেলো হু ঝিয়ং গেøাবাল টাইমসকে বলেন, চীনের অবস্থানের পরিবর্তন হবে না এবং চীনকে ভয় দেখিয়ে একটি আপোসে বাধ্য করার ভুল ধারণা ভারত সরকার ও তাদের মিডিয়ার পরিত্যাগ করা উচিত।
চীনের ফুদান বিশ^বিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক লিন মিনওয়াং বলেন, ভারত যদি সৈন্য প্রত্যাহারে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে বৈঠক ফলপ্রসূ হবে না। চীন যেহেতু ভারতকে এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানের সুযোগ দিয়েছে সে কারণে সে কোনো চরম সময়সীমা বা কোনো চরমপত্র দিতে চায় না।
ব্রিকস বৈঠক
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আগে বলেছিলেন যে কোনো আলোচনা শুরুর জন্য ভারত ও চীন উভয়েরই সৈন্য প্রত্যাহার করা প্রয়োজন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকা বলে, এটা হচ্ছে বেইজিংয়ে দোভাল ও ইয়াংয়ের মধ্যে যখন বৈঠক হবে তাদের মধ্যে সম্ভাব্য সংলাপের নয়া দিল্লীর দেয়া রেডলাইন।
হু বলেন, চীন এটা গ্রহণ করতে পারে না। দোকলাম মালভূমি চীনের এলাকা যা ভারতও স্বীকার করে। তিনি জিজ্ঞেস করেন, ভারতীয় সৈন্যরা সীমান্ত অতিক্রম করার পর আমরা আমাদের নিজের এলাকা থেকে কি করে সৈন্য প্রত্যাহার করতে পারি?
তিনি বলেন, চীন-ভারত সীমান্ত উত্তেজনা বেইজিংয়ে ব্রিকস বৈঠকের উপর প্রভাব ফেলবে না। কারণ এটা ব্রিকসের সাধারণ বৈঠক, সীমান্ত উত্তেজনা নিয়ে জরুরি বহুপাক্ষিক বৈঠক নয়।
লু সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ব্রিকস বৈঠকে গেøাবাল গভর্নেন্স, সন্ত্রাস দমন, ইন্টারনেট নিরাপত্তা, জ¦ালানি নিরাপত্তা, গুরুত্বপূর্ণ বৈশি^ক ও আঞ্চলিক সমস্যার পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়ন বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হবে।
বø্যাকমেইল আচরণ
চীনের রেনমিন বিশ^বিদ্যালয়ের ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী ডিন জিন কানরং বলেন, ভারতের আচরণ কিছুট বø্যাকমেইল করার মত যেহেতু সে জানে চীন চীনা কম্যুনিস্ট পার্টির ১৯ তম জাতীয় কংগ্রেস করবে যা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা।
তিনি উল্লেখ করেন যে পশিচমাঞ্চলীয় সীমান্তের চেয়ে চীনের কাছে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তার পূর্ব উপকূল ও এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চল। জিন বলেন, ভারত মনে করে যে চীন বহির্বিশে^র সাথে সংঘাত শুরু করতে চায় না, তাই সে মনে করে যে সে চীনকে উস্কানি দিতে শক্তি ব্যবহার করতে পারে এবং সে যা চায় তা পাবে।
হু বলেন, ভারতের বø্যাকমেইল ব্যর্থ হবে । যদিও চীনের সমাবেশ করা সৈন্য সংখ্যা বেশী নয়, তাদের গুণগত মান ভারতের চেয়ে উন্নত এবং পিএলএ-র অন্যান্য প্রদেশ থেকে সৈন্য এনে তিব্বত সীমান্তে মোতায়েনের ক্ষমতা রয়েছে। যদি পরিস্থিতির সামরিক সমাধান প্রয়োজন হয় তাতেও চীনের ভয় পাওয়ার কিছু নেই্।
তিনি আরো বলেন, ভারতের ব্যবহার বিশে^র প্রধান শক্তিসমূহ যেমন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ই ইউ ও জাপানসহ অন্যান্য দেশের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়েছে। তার অর্থ হচ্ছে ভারতের আন্তর্জাতিক প্রভাব তত জোরালো নয় যতটা সে মনে করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।