Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বৃষ্টির প্রভাবে লাগামহীন সবজি বাজার

মরিচের দাম কেজিতে ১৪০ টাকা বেড়েছে

| প্রকাশের সময় : ২৯ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : টানা বৃষ্টি ও বৈরি আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে নিত্যপণ্যের বাজারে। কাঁচা বাজারে এই প্রভাব পড়েছে সবচেয়ে বেশি। চারদিন আগের ৬০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি এখন বাজারে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ হিসাবে চারদিনের ব্যবধানে প্রতি কেজি মরিচের দাম ১৪০ টাকা বেড়েছে। এছাড়া সব ধরনের সবজির দাম দেড় থেকে দ্বিগুণ হয়েছে। রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুলসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে সবজি, মাছসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়ার জন্য অব্যাহত বৃষ্টিপাতকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলেছেন, সারাদেশে বৃষ্টির কারণে সবজির উৎপাদন পর্যায়ের কৃষকরা মারত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ফলে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে এর প্রভাব পড়েছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, ষড়ঋতুর এই দেশে রোদ-বৃষ্টি-শীত এসব থাকবেই। এগুলোকে অযুহাত হিসেবে দেখিয়ে দাম বাড়ান ব্যবসায়ীরা। কিন্তু পরবর্তীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কোনো পণ্যের দাম কমানো হয় না।
পলাশী বাজারে সবজি বিক্রেতা হাসান বলেন, বৃষ্টির কারণে কাঁচাপণ্যের সরবরাহ কমে গেছে। ফলে বেশি দাম দিয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পণ্য কিনতে হচ্ছে। আমরাও বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করছি। এদিকে ক্রেতা খারুইল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ঠুনকো অজুহাতে দাম বাড়িয়ে অসৎ ব্যবসায়ীরা বাজার দখলে নিয়ে নিছেন, আমরা অসহায়। গত তিনদিন সকল সবজির দাম দ্বিগুণ বেড়েছে বলেও তিনি জানান।
পাইকারি ব্যবসায়ী জানান, শুনেছি বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। কৃষকরা আগে মোকামে ৫ থেকে ৭ মণ করে সবজি উঠাতেন। এখন তারা দেড় থেকে ২ মণের বেশি সবজি মোকামে তুলতে পারছেন না। ফলে তাদের কাছ থেকে আমাদের বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। তাছাড়া বৃষ্টির কারণে আমাদের পরিবহন খরচও বেশি গুণতে হচ্ছে। আমরা নিরুপায় হয়ে বেশি দাম নিচ্ছি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ ১০ টাকা বেড়ে কেজি প্রতি ৪০ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ২৮ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে বেগুন কেজি প্রতি ৬০-৮০ টাকা; শিম ১২০ টাকা; হাইব্রিড টমেটো ১৬০ টাকা; দেশি টমেটো ১০০ টাকা; শশা ৫০ টাকা; চাল কুমড়া ৫০-৫৫ টাকা; কচুর লতি ৬০-৬৫ টাকা; পটল ৫০-৬০ টাকা; ঢেঁড়স ৫০-৬০ টাকা; ঝিঙ্গা ৬০ টাকা; চিচিঙ্গা ৫০-৬০ টাকা; করলা ৫০-৫৫ টাকা; কাকরোল ৫০ টাকা; পেঁপে ৪০-৫০ টাকা; কচুরমুখী ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিটি ফুলকপি ৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ টাকা এবং লেবু হালি প্রতি ২০ থেকে ৪০ টাকা; পালং শাক আঁটি প্রতি ২০ টাকা; লালশাক ২০ টাকা; পুঁইশাক ৩০ টাকা এবং লাউশাক ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদি বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের দামেই স্থিতিশীল রয়েছে অধিকাংশ মুদি পণ্যের দাম। বাজারে কেজি প্রতি ছোলা ৮৫ টাকা; দেশি মুগ ডাল ১৩০ টাকা; ভারতীয় মুগ ডাল ১২০ টাকা; মাসকলাই ১৩৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল ১২৫ টাকা; ভারতীয় মসুর ডাল ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। দারুচিনি ৩৬০ টাকা; জিরা ৪৫০ টাকা; শুকনা মরিচ ২০০ টাকা; লবঙ্গ ১৫০০ টাকা; এলাচ ১৬০০ টাকা; চীনের আদা ১২০ টাকা এবং ক্যারালা আদা ১৪০ টাকা; হলুদ ১৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে ভোজ্য তেলের দাম গত দুই সপ্তাহ আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ব্র্যান্ড ভেদে ৫ লিটারের বোতল ৫৩০-৫৪০ টাকা; প্রতি লিটারে ১-২ টাকা বেড়ে ১০৭ টাকা থেকে ১০৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা স্বর্ণা চাল ২ টাকা কমে প্রতি কেজি ৪৪ টাকা, পারিজা চাল ৪৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মিনিকেট (ভালো মানের) ৫৪ টাকা, মিনিকেট (সাধারণ) ৫২ টাকা, বিআর২৮ ৪৮ টাকা, সাধারণ মানের নাজিরশাইল ৫০ টাকা, উন্নত মানের নাজিরশাইল ৫৫ টাকা, পাইজাম চাল ৪৮ টাকা, বাসমতি ৫৩ টাকা, কাটারিভোগ ৭২-৭৩ টাকা এবং পোলাও চাল (পুরাতন) ১০০ টাকা, (নতুন) ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকার ভেদে প্রতি কেজি রুই মাছ ২৫০-৩৫০ টাকা, সরপুঁটি ৩৫০-৪৫০ টাকা, কাতলা ৩৫০-৪০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০-১৮০ টাকা, সিলভার কার্প ২০০-২৫০ টাকা, চাষের কৈ ২৫০-৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাঙ্গাস প্রতি কেজি ১৫০-২৫০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা, মাগুর ৬০০-৮০০ টাকা, প্রকার ভেদে চিংড়ি ৪০০-৮০০ টাকা, প্রতিটি ইলিশ ৮০০-১২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে ছোট দেশি মুরগির দাম গত সপ্তাহের বাড়তি দামে প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা দরে। এছাড়া ব্রয়লার মুরগি ৫ টাকা বেড়ে ১৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা এবং পাকিস্থানি লাল মুরগি ২০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ