Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কক্সবাজারে ফের পাহাড়ধস : নিহত ৫

| প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বান্দরবানে নিখোঁজ মুন্নী বড়ুয়ার লাশ উদ্ধার
ইনকিলাব ডেস্ক : গতকাল ভারি বর্ষণে পাহাড় ও ঘরের দেয়াল ধসে দুই সহোদর শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত পাঁচজন। পাহাড় ধসের ঘটনাগুলো তদারকির জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে কাজ করছে তিনটি টিম। অন্যদিকে বান্দরবানে পাহাড় ধসে নিখোঁজদের সন্ধানে গতকাল মঙ্গলবার ৩য় দিনেরমত উদ্ধার অভিযান চলছে। তবে নিখোঁজ কাউকে পাওয়া না গেলেও মুন্নী বড়ুয়ার লাশ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পাওয়া যায়। সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে রিপোর্ট :
কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজারে পৃথক দুই জায়গায় গতকাল ভারি বর্ষণে পাহাড় ও ঘরের দেয়াল ধসে দুই সহোদর শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অন্তত পাঁচজন। ভারি বৃষ্টির পর পাহাড়ধসে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের কাইম্যার ঘোনা এলাকায় ঘুমন্ত অবস্থায় মাটি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যায় তিন ও চার বছরের সহোদর জিহান ও সায়মা। গুরুতর আহত হয়েছে তাদের বাবা জিয়াউর রহমান (৩৫) ও মা আনারকলি বেগম (২৭)। তাদের দুজনকে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই সময়ে জেলা শহরের লাইটহাউস পাড়ায় পাহাড় ধসে মারা গেছে আরও দুই জন। নিহতরা হলেন মোহাম্মদ শাহেদ (১৮) ও সাদ্দাম হোসেন (২৮)। শাহেদ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। সাদ্দাম হোসেন, দেলোয়ার হোসেন (২৫) ও আরাফাত হোসেন (৩০) কে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদ্দাম মারা যান।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের উপ সহকারী পরিচালক আব্দুল মালেক ও ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মজুমদার পাহাড় ধসে হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে, গত সোমবার সন্ধ্যায় পেকুয়া উপজেলারটৈটং ইউনিয়নের হাসানেরজুম এলাকায় বাড়ির মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা গেছেন আনোয়ারা বেগম(৬০) নামের এক নারী। পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম জানিয়েছেন নিহত আনোয়ারা বেগমের পরিবারকে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম মজুমদার জানিয়েছেন পাহাড় ধসের ঘটনাগুলো তদারকির জন্য একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছন। কক্সবাজার শহরের পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় বসবাসকারীদের সরিয়ে নিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নেতৃত্বে তিনটি টিম কাজ করছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে গতকাল সকাল ছয়টা থেকে গতকাল সকাল ছয়টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ২০৮ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এই প্রবল বৃষ্টির কারণেই পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে।
বান্দরবানে পাহাড় ধসে নিখোঁজদের সন্ধানে অভিযান : নিখোঁজ মুন্নী বড়ুয়ার লাশ উদ্ধার
মো: সাদাত উল্লাহ, বান্দরবান থেকে জানান, বান্দরবানে পাহাড় ধসে নিখোঁজদের সন্ধানে গতকাল মঙ্গলবার ৩য় দিনেরমত উদ্ধার অভিযান হয়েছে। তবে নিখোঁজ কাউকে পাওয়া না গেলেও মুন্নী বড়ুয়ার লাশ চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পেয়েছে বলে জানায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। লাশটি পানির স্রোতে সাংগু নদী হয়ে বাঁশখালীতে গিয়েছেন বলে ধারণা করছেন প্রশাসন।ইতোমধ্য লাশটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গে আছেন বলে জানা গেছে।
এ দিকে টানা ৩য় দিনের বৃষ্টিতে বান্দরবানের সার্বিক পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। বান্দরবান-চট্টগ্রাম ও বান্দরবান রাঙামাটি সড়ক কোমর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বান্দরবানের সাথে সারা দেশের সঠক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। শহরের নীচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।অপরদিকে বান্দরবান পর্যটন এলাকা মেঘলায় গতকাল এক ব্যক্তির অর্ধ গলিত লাশ উদ্ধার করছে পুলিশ। বান্দরবান সেনাবাহিনী জানায়, গত রোববার পাহাড় ধসের পরেই সেনা সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে নেমে পড়ে। তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এক্সবেটার সহ বিভিন্ন মেশিনের সহায়তায় ৩০ জন সেনা সদস্য উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি দমকলবাহিনী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি, ইয়থ গ্রুপ,পুলিশ ও স্হানীয় জনগন উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছেন। এদিকে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিখোঁজ পোষ্ট মাষ্টার জবিউল আলম,ব্যাংকার গৌতম নন্দী ও সি মে চিং মারমার খোঁজ পাওয়া যায়নি। ভারী বর্ষণের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে। জেলা প্রশাসন জানায়, জেলা উপজেলার বিভিন্ন সড়কে পাহাড় ধসে ভাঙন দেখা দেয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছন্ন রয়েছে। পাহাড়ে বসবাসরত পরিবারকে নিরাপদে সরে পডার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। সাংগু ও মাতামুহুরির পানি গতকাল সকালে বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলে ও বিকেলের দিকে কিছুটা কমে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিহত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ