পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : আবাসন খাতের ব্যবসায়ীরা ঋণ নিয়ে কানাডা, সিঙ্গাপুর, ইউএসএ, মালয়েশিয়া এবং সুইজারল্যান্ডে অট্টালিকায় বসবাস করছে। ব্যাংকের অর্থ মেরে বিদেশে বিলাসী জীবনযাপন করছে। ব্যাংকের গ্রাহকদের আমানতের অর্থ নানা কৌশলে বিদেশে অর্থ পাচার করে সেখানে সেকেন্ড হোম গড়ে তুলছে তারা। গৃহঋণের এই অর্থ দেশে থাকলে কর্মসংস্থান হতো এবং দেশের অর্থনীতি চাঙা থাকতো।
গতকাল রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) আয়োজিত ‘হোমলোন অব ব্যাংকস: ট্রেন্ড অ্যান্ড ইমপ্যাক্ট’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন।
বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী বলেন, মানুষের মাথা গোজার ঠাঁই হচ্ছে ঘর। সুতারাং এই খাতে ঋণের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে। তবে এই ঋণ হতে হবে স্বল্পসুদের। এই ঋণ যাতে গ্রামের মানুষ পায়-তারও ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি বলেন, গৃহঋণের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা আছে। সেগুলোর সমাধান প্রয়োজন। ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে যে সব প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে- তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠানো হবে।
বৈঠকে বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি প্রফেসর ইয়াছিন আলী বলেন, এসব অসাধু আবাসন ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকে আবার ঋণ নিয়ে ফ্ল্যাট তৈরি করে বিক্রি করেছে; কিন্তু তার রেজিস্ট্রেশন দেয়নি। এর কারণ হচ্ছে, তারা লোন পরিশোধ করছে না। তাই ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন দিতে পারছে না। তাই গ্রাহকরা ফ্ল্যাট কিনেও রেজিস্ট্রেশন পাচ্ছেন না। এখানে সরকারের দেখার বিষয় রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি, এখানে অনেক প্রকল্প পড়ে আছে; কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না। এখানে চাহিদা বাড়ছে না। এক্ষেত্রে রেগুলেটরের ভূমিকা পালন করতে হবে। ঋণ দিয়ে ফ্ল্যাট বিক্রি বাড়াতে হবে। বিভিন্ন ধরনের ইনসেনটিভ দিতে হবে।
ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঋণের ব্যাপারে তিনি বলেন, ব্যাংকের উঁচু স্তরের কর্মকর্তারা ২-৩ শতাংশ সুদে ঋণ নিচ্ছে; অথচ নিচের স্তরের কর্মকর্তারা ঋণ পায় না। ব্যাংকের বড় কর্মকর্তারা এই বৈষম্য বাড়া্চ্েছন- এটা বন্ধ করতে হবে।
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি প্রফেসর হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ফ্ল্যাট বা বাড়ি রেজিস্ট্রেশন করার সময় ব্যাংকের কাছে মর্টগেজ আছে কিনা তা শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংক থেকে গৃহঋণ নিলে তা বাড়ির সামনে সাইন বোর্ডে উল্লেখ করতে হবে। অনেক ব্যবসায়ী এবং বাড়ির মালিক ব্যাংক ঋণ নিল্ওে তা সেই নিয়ম মেনে সাইনবোর্ডে উল্লেখ করে না। এছাড়া গৃহঋণে প্রভিশন ২ শতাংশের জায়গায় ১ শতাংশ হলে ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে আরও উৎসাহবোধ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের কান্ট্রি হেড আব্রার আনোয়ার বলেন, গৃহঋণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে উচ্চ সুদ বড় বাঁধা। আগামীতে গৃহঋণে সুদহার আরও কমিয়ে আনতে হবে।একইসঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের গৃহঋণের সুযোগ দিতে হবে।
বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এস. কে. সুর চৌধুরী বলেন, মানুষ গৃহ নির্মাণে যাতে সহজে ঋণ পায়- সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সহজ শর্তে ও স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে মধ্যবিত্তের মাথাগোজার ঠাঁই হয়।
তিনি বলেন, গৃহঋণের নানা দিক বিশ্লেষণ করে নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। আশা করা হচ্ছে, এই নীতিমালা প্রণয়ণ হলে গ্রাহকরা সহজে ঋণ পাবেন।
গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের প্রফেসর এবং ডিরেক্টর মহিউদ্দিন সিদ্দিক; সহযোগী অধ্যাপক মো. আলমগীর এবং ড. মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সীমান্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুখলেসুর রহমা এবং বিআইবিএমের পরিচালক (গ.উ.ক) ড.প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জী।
মূল প্রবন্ধে তারা বলেন, অন্যান্য সব ঋণের চেয়ে গৃহঋণে খেলাপি সবচেয়ে কম। ২০০৬ সালে ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের রেশিও ছিল ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। তখন গৃহঋণে খেলাপি ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ২০১৬ সালে খেলাপি ঋণের হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। কিন্তু গৃহঋণে তা মাত্র ৩ দশমিক ১২ শতাংশ। এতে আরও বলা হয়েছে, গৃহঋণের অধিকাংশই পায় শহরের মানুষ। মোট ঋণের ৮৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় শহরের মানুষ। সেখানে গ্রামের মানুষ ঋণ পেয়েছে সাড়ে ১৬ শতাংশ। আবার ঋণের অধিকাংশ অর্থই বাড়ি নির্মাণের পেছেনে ব্যয় হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।