Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এক রাতেই যেভাবে বদলে গিয়েছিল সউদী সিংহাসনের উত্তরাধিকার

রয়টার্স-এর বিশেষ প্রতিবেদন

| প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : বিন নায়েফের জায়গায় বাদশাহ-পুত্র মোহাম্মদ বিন সালমানকে সউদী যুবরাজ (ক্রাউন প্রিন্স) ঘোষণার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। ভ্রাতুষ্পুত্রকে সরিয়ে নিজ ছেলেকে যুবরাজ ঘোষণার বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের সিদ্ধান্ত অনেকের কাছেই প্রাসাদ ষড়যন্ত্র হিসেবে পরিচিতি পায়।
এবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে ২১ জুনের সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। বিন নায়েফের ঘনিষ্ঠ সূত্রসহ প্রাসাদের বিভিন্ন সূত্র উদ্ধৃত করে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে কীভাবে এক রাতের ব্যবধানে সউদী সিংহাসনের উত্তরাধিকার বদলে গিয়েছিল। উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বেও ছিলেন ক্রাউন প্রিন্স বিন নায়েফ। সন্ত্রাসবিরোধী কথিত যুদ্ধেও ছিল তার নেতৃস্থানীয় ভূমিকা। বাদশাহর পর তিনি ছিলেন সবচেয়ে ক্ষমতাবান।
নায়েফের ঘনিষ্ঠ সূত্রকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেতরে ভেতরে তার দ্বারা চ্যালেঞ্জ অনুভব করছিলেন বাদশাহ সালমান। আর এরই এক পর্যায়ে ২১ জুন প্রাসাদে যাওয়ার পর তাকে পদত্যাগ করতে বলেন বাদশাহ, আনুগত্য স্বীকার করতে বলেন তার প্রিয়তম ছেলে মোহাম্মদের কাছে। একটি সূত্র রয়টার্সকে জানায়, সেদিন রাত ১১টায় রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠক ডেকেছিলেন বাদশাহ সালমান। তার আগেই বাদশাহর ছেলে মোহাম্মদের ফোন পান বিন নায়েফ। তার কাছে তখন এটি ‘স্বাভাবিক নিয়মের ডাক’ই মনে হয়েছিল। প্রাসাদে উপস্থিত হওয়ার পর সালমানের ছেলে মোহাম্মদ তাকে বলেন, বাদশাহ তার অপেক্ষায় রয়েছেন। বেনামি সূত্রে রয়টার্স জানিয়েছে, এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সউদী আরবের উত্তরাধিকার নির্ধারণ কমিটির সদস্যদের কাছে শাহী ফরমান যায়, যে কমিটিতে রাজ পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা থাকেন।
তিনি বলেন, ওই সময়ে প্রাসাদের একটি কক্ষে বিন নায়েফকে বলতে গেলে আটক রাখা হয়। সেখানে আর কেউ ছিল না। কেড়ে নেওয়া হয় তার মোবাইল ফোনটি। এই সময়ের মধ্যে তার দেহরক্ষীদেরও বদলে দেওয়া হয়। এরপর রাজদূত ছোটেন উত্তরাধিকার নির্ধারণ কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর আনতে। ৩৪ সদস্যের মধ্যে তিনজন বাদে সবাই বিন নায়েফের পদচ্যুতির সিদ্ধান্তে সই করেন। প্রাসাদের বেনামি সূত্রকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স দাবি করে, যারা বাদশাহর সিদ্ধান্তের পক্ষে ছিলেন তাদের সবার ফোন কল রেকর্ড করা হয় এবং তা বিন নায়েফকে শোনানো হয়। তাকে বোঝানো হয় যে তোমার পক্ষে কেউ নেই।
রাতভর চিন্তার পর ভোরের আগেই হাল ছেড়ে দেন বিন নায়েফ; তিনি প্রাসাদের উপদেষ্টাকে বলেন যে বাদশাহর সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি। খুব সংক্ষিপ্ত একটি বৈঠকেই সব সারা হয়ে যায়। পদত্যাগে রাজি হওয়ার কথা জানিয়ে কাগজে সই করে দেন তিনি।
বাদশাহর আদেশে গ্রেফতার হলেন সউদী প্রিন্স
সউদী রাজপরিবারের একজন তরুণ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কয়েকজনকে তিনি শারীরিক ও মৌখিকভাবে নিপীড়ন করছে এমন ভিডিও প্রকাশ হওয়ার পর তাকে আটক করা হলো। ভিডিওটি অনলাইনে ভাইরাল হয়ে গেলে বাদশাহ সালমান তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে। ভিডিওটি ইতোমধ্যেই পুরো আরব বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে সউদী প্রিন্সকে গ্রেফতারের ভিডিও ফাঁস হয়ে সেটিও অনলাইনে ভাইরাল হয়ে গেছে। দেশটির একটি অনলাইন পত্রিকায় ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা যায় আটক হওয়া প্রিন্সের লম্বা কালো চুল রয়েছে এবং এসময় তিনি কালো রংয়ের টি-শার্ট পরিহিত ছিলেন। যে কোন ব্যক্তিকে কোন ধরনের নিপীড়ন বন্ধ করতে বাদশাহ সালমানের আদেশে জোর দেয়া হয়েছে। সূত্র : বিবিসি।



 

Show all comments
  • জামাল ২১ জুলাই, ২০১৭, ৩:৩৫ এএম says : 0
    অনেক কিছুই হয় আবার নতুন কিছু হতে পারে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সউদী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ