পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস টাইমস : ক্ষুদ্র উপসাগরীয় দেশ কাতার বিশে^র বৃহৎ সন্ত্রাসবাদ সমর্থক বলে সউদী নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযোগের পর কিভাবে দেশটির বিচ্ছিন্নতা সাধিত হয়েছে সে ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে রিপাবলিকান সিনেটর বব কোরকার বলেছেন, কাতার সন্ত্রাসবাদের প্রতি যে সমর্থন দিচ্ছে তার চেয়ে সন্ত্র্রাসবাদের প্রতি সউদী সমর্থনের পরিমাণ অনেক বেশী।
কথা হচ্ছে, বব কোরকার ক্যাপিটল হিলে যে সে লোক নন। তিনি হচ্ছেন মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির চেয়ারম্যান, সুতরাং তিনি অন্য যে কারো মতই মধ্যপ্রাচ্য সঙ্কট নিয়ে কথা বলার যোগ্য। তবে তিনি পরে যা বলেছেন তা আরো উল্লেখযোগ্য। সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যখন গত মাসে কাতারের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক ও পরিবহন অবরোধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেন তখন তিনি বলেন, আমি মনে করি যে এটি এক যুবরাজের নতুন ভুল যিনি আমার মতে সউদী আরবের জন্য ভবিষ্যত সম্ভাবনা হতে পারেন।
সুতরাং তার কথার মধ্যে সউদী আরবের ভবিষ্যতের প্রতিনিধিত্বকারী নয়া তরুণ নেতার প্রতি প্রচ্ছন্ন প্রশংসাও রয়েছে যিনি একজন সংস্কারক হিসেবে তার দেশকে অধিকতর আধুনিক ও স্থিতিশীল পথে চালিত করবেন। তবে বলা হয়েছে যে ভুল করে এই নতুন যুবরাজ বিগত কয়েক বছরের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের বৃহত্তম সঙ্কটের সৃষ্টি করেছেন। ৫ জুন সউদী আরব, ইউএই, বাহরাইন ও মিসর ইরানের সাথে ঘনিষ্ঠতা ও সন্ত্রাসবাদে সমর্থন দানের জন্য অভিযুক্ত করে কাতারের সাথে খাদ্য সরবরাহ বন্ধসহ সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে। নয়া সউদী শাসকের আবেগপ্রবণ ‘প্রিন্স হ্যালে’র মত আচরণের ঘটনা এটাই নতুন নয় যা সমস্যার সম্ভাবনাময় উৎস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
ডেভিড ইগনাশিয়াস ওয়াশিংটন পোস্টে বলেন, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে সাক্ষাতকারী প্রায় আধা ডজন সউদী পর্যবেক্ষক বলেছেন সউদী আরবকে পুনর্গঠন করে একটি অধিকতর গতিশীল দেশে পরিণত করার সম্ভাবনা তার মধ্যে আছে যা দেশটিকে তার নিরাপত্তা ও প্রতিবেশীদের থেকে রক্ষায় অনেক বেশী সক্ষম করবে।
তবে অনেকেই উদ্বিগ্ন যে তিনি তার একগুঁয়েমিতার জন্য , কখনো কখনো তার বেপরোয়া ব্যবহারের মধ্য দিয়ে তার দেশকে পর্বত চূড়া থেকে নামিয়ে আনতে পারেন।
কিছু পর্যবেক্ষক সউদী আরব ও কাতারের মধ্যকার তীব্র লড়াইকে দু’ দেশের দুই নতুন নেতার মধ্যে ইচ্ছাশক্তি বা ‘ইগো’র লড়াই হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ৩১ বছর বয়স্ক সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সুলতান কাতারের আমির ৩৭ বছর বয়স্ক তামিম বিন হামাদ আস সানির চেয়ে ৬ বছরের ছোট।
সউদী আরবের আক্রমণের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার পর কাতারের আমিরের জনপ্রিয়তাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সউদী বৈরিতার মুখে তার দেশের মানুষ তার পাশে সমবেত হয়েছে।
গতমাসে কাতারের বিরুদ্ধে আক্রমণের তীব্রতা দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে কোরকার ঘোষণা করেন যে তিনি বিরোধে লিপ্ত দেশগুলোতে সকল অস্ত্র বিক্রয় বন্ধ করবেন।
তার এই পদক্ষেপে যে দেশটি বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে সে দেশটি হচ্ছে সউদী আরব যে সবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০০ বিলিয়ন পাউন্ডের অস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে।
কোরকার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের ঘনিষ্ঠ বন্ধ্।ু টিলারসন কাতার ও তার প্রতিপক্ষ দেশগুলোর মধ্যে আপস-মিমাংসার জন্য উপসাগর অঞ্চলে গিয়েছিলেন গিয়েছিলেন এবং ব্যর্থ হয়ে দেশে ফিরেছেন।
তার সফর থেকে যে ফল মিলবে তার প্রকৃত কোনো নিশ্চয়তা ছিল না, তবে এটা সুস্পষ্ট হয়েছে যে টিলারসনের সহানুভূতি কার প্রতি। তিনি বলেন, আমি মনে করি কাতারের অবস্থান স্পষ্ট এবং তা যুক্তিসঙ্গত।
সন্ত্রাসবাদের প্রতি সউদী সমর্থনের পরিমাণ কাতারের চেয়ে বেশী বলে টিলারসনের মন্তব্য এ মাসের গোড়ার দিকের একটি মন্তব্য একটি রিপোর্টের প্রতিধ্বনি করে যাতে যুক্তরাজ্যে ইসলামী উগ্রবাদের সমর্থনে সউদী অর্থায়ন সম্পর্কে তদন্তের আহবান জানানো হয়েছে।
দি হেনরি জ্যাকসন সোসাইটি বলে, উগ্রবাদ এগিয়ে নেয়ার জন্য উপসাগর অঞ্চলের বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা এবং ইরান যখন দোষী , সেক্ষেত্রে যারা সউদী আরবের তাদের স্থান নিঃসন্দেহে তালিকার উপর দিকে।
এ সপ্তাহে যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসবাদের অর্থায়নকারীদের ব্যাপারে তাদের তদন্তের ফল প্রকাশ না করার ব্রিটিশ সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে অভিযোগ উঠেছে যে মন্ত্রীরা সউদী আরবের সমালোচনা এড়াতে চান।
এপ্রিল মাসে সউদী আরব সফরকারী প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র বিরুদ্ধে রিপোর্ট গোপন রাখার মাধ্যমে সউদী আরবের কাছে নতজানু হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কারণ তাকে ব্রেক্সিট-উত্তর কালে আরব বিশে^ যুক্তরাজ্যের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারের বিনিয়োগ নিশ্চিত করা দরকার।
কিন্তু সবেমাত্র যুক্তরাজ্যে ৫ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগে কাতারের ঘোষণার পর তেরেসা মে দোহাকেও দূরে ঠেলতে চাইবেন না।
ক্ষুদ্র প্রতিবেশীর প্রতি কঠোরতার পরিচয়ে সউদী নেতৃত্বাধীন জোট যে সব দেশ এখনো কাতারের সাথে ব্যবসা অব্যাহত রেখেছে তাদের সাথে সকল বাণিজ্য স্থগিত রাখার হুমকি দিয়েছে।
মস্কোতে ইউএই-র রাষ্ট্রদূত ওমর ঘোবাস বলেন, একটি সম্ভাবনা হচ্ছে আমাদের নিজস্ব বাণিজ্য অংশীদারদের উপর শর্তারোপ এবং বলা যে আপনি যদি আমাদের সাথে কাজ করতে চান তাহলে আপনাকে একটি বাণিজ্যিক পছন্দ নির্ধারণ করতে হবে।
কিন্তু তারপর জানা যায় যে কোনো আমেরিকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এটা করলে তা মার্কিন বর্জন-বিরোধী আইনের আওতায় পড়তে পারে।
কয়েক দশক আগে ইসরাইলকে সুরক্ষা দিতে প্রণীত আইনের আওতায় আমেরিকা সমর্থিত নয় অন্য দেশের এমন কোনো অবরোধে অংশ নিলে মার্কিন কোম্পানিগুলো শাস্তির সম্মুখীন হতে পারে।
তাই উত্তর কোরিয়ার সাথে বাণিজ্য না করা অনুমোদিত, কিন্তু কাতারের মত কোনো দেশের সাথে বাণিজ্য বন্ধ করা যাবে না যে দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সমস্যা নেই।
সব মিলিয়ে কাতার যদি নতি স্বীকার না করে , বিপুল রিজার্ভ থাকার কারণে যা করার লক্ষণ তাদের নেই, সউদী নতুন যুবরাজের জন্য চাল চালার খুব কমই জায়গা থাকবে।
ক্ষুদ্র উপসাগরীয় দেশটিতে তুরস্কের আরো সৈন্য মোতায়েন এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সহযোগিতা চুক্তি দেশটির বর্তমান বিরোধের সহিংস পরিণতির ঝুঁকিকে হ্রাস করেছে।
এ সমস্যার সমাধানের ব্যাপারে সকলের দৃষ্টি এখন অবরোধের মূল হোতা সউদী যুবরাজের দিকে নিবদ্ধ। তবে লন্ডনে কিংস কলেজে রাজনৈতিক ঝুঁকি বিশ্লেষক অ্যান্ড্রিয়াস ক্রিয়েগ উল্লেখ করেন যে এটা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে যার সম্মুখীন হতে নতুন সউদী নেতা হয়ত প্রস্তুত নন।
তিনি বলেন, সউদী আরব আসলে ভেবেছিল যে ট্রাম্প প্রশাসন, বিশেষ করে রিপাবলিকানরা তাদের পক্ষে রয়েছে। সে কারণেই তারা ঘটনার দ্রুত বিস্তার ঘটায়। এখন তারা উপলব্ধি করছে যে সে সমর্থন তাদের প্রতি নেই এবং ট্রাম্প প্রশাসন আসলে তাদের আগের মন্তব্য থেকে সরে গেছে। অর্থাৎ সউদী আরব ধীরে হলেও বুঝতে পেরেছে যে কাতারের ব্যাপারে সে আর ট্রাম্প কার্ড খেলতে পারবে না। আর এটাই এখন ইউএই ও সউদী আরবকে হজম করতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।