পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দি গার্ডিয়ান : বিস্ময়কর বিজয় অভিযানে ইরাক ও সিরিয়ার বিরাট এলাকা দখলের পর তিন বছর আগে মধ্যযুগে নির্মিত মসুলের আল নূরী মসজিদের মিম্বর থেকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নেতা আবু বকর আল বাগদাদি খিলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিন বছর পর ইরাাকের দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মসুলের প্রায় গোটাটাই এখন ইরাকি সরকারী বাহিনী পুনর্দখল করেছে।
আইএস প্রধানত সিরিয়ার রাক্কা শহর এবং ইরাকের মরুভূমি এলাকার মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। আর বাগদাদি নিখোঁজ, তিনি নিহত হয়েছেন বলে খবর বেরিয়েছিল। মসুলের অধিকাংশ এলাকার মত আল নূরী মসজিদও ধ্বংস হয়ে গেছে। মসুলের অধিবাসীদের এ যুদ্ধে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছে। হাজার হাজার মাানুষ নিহত ও আহত হযেছে।
তাদের এক অংশকে হত্যা করেছে জিহাদিরা, কিছু অংশ উড়ে গেছে আইএস বিরোধী মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের বিমানের বোমায়, কিছু অংশ নিহত হয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধে গুলির মাঝে পড়ে। মসুল ও অন্যত্র জিহাদিদের বহু নিষ্ঠুরতা বিশ^জুড়ে তাদের কুখ্যাত করেছে। মসুলের ১০ লাখের মত লোক এখন গৃহহীন। তাদের অনেকেই অসুস্থ ও পুষ্টিহীনতার শিকার। মসুল পুনর্নির্মাণ হবে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। এ জন্য বছরের পর বছর লাগবে যদি শান্তি বিরাজ করে। তবে রোববারেও কিছু লড়াই চলার খবর পাওয়া গেছে।
ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আল আবাদি মসুল মুক্ত করার জন্য দ্রæত কৃতিত্ব দাবি করেছেন। রোববার তিনি মসুল সফর করেন। তবে আবাদি ও তার পূর্বসূরী নূরী আল মালিকি আইএসের বিজয় অভিযানের শুরুতেই মসুল হারানোর জন্য কিছুটা দায়ী।
ইরাক ও সিরিয়ার বাইরে অল্পসংখ্যক মানুষ আইএসের উত্থান ও ২০১৪ সালে তাদের বিজয় অভিযানের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী করতে পেরেছিলেন। ঘটনা সংঘটনের পর স্পষ্ট হয় যে বাগদাদের শিয়া সরকার সকলের প্রতি সমান নজর না দেয়ার ফলে সুন্নী মুসলমানদের মধ্যে যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয় , তারই সুযোগ গ্রহণ করে শক্তিমান হয়ে ওঠে আইএস। মসুলের কিছু লোক তদের আগমনকে স্¦াগত জানিয়েছিল।
মালিকি ও তাদের সমর্থকদের সুন্নী ও ইরাকের অন্যান্য বৃহৎ সংখ্যালঘু যেমন কুর্দিদের সাথে অর্থবহ ক্ষমতা ভাগাভাগির জন্য বাইরের উদ্যোগ, প্রধানত যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার প্রেক্ষিতে আইএসের সাফল্য অর্জিত হয়।
মালিকির মিত্র ইরানের শিয়া শাসকরাও এর জন্য দায়ী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডবিøউ বুশের অযোগ্যতার কারণে মার্কিন আগ্রাসনোত্তর ইরাকে ইরান যে বিপুল প্রভাব বিস্তাার করতে সক্ষম হয় তা সে সহজে ছাড়তে রাজি হবে কেন?
রামাদি, তিকরিত ও অন্যান্য স্থান থেকে আইএসকে বিতাড়িত করতে ইরান সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়ারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও ইরানের দৃশ্যমান ভুমিকা ও ক্ষতিকর শিয়া-সুন্নী দ্ব›দ্ব নেতিবাচক প্রভাব ফেলা অব্যাহত রাখে।
এক হিসেবে আইএসকে পরাজিত করার ফলে ইরাকের ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়া সেনাবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ করেছে। এখন সাময়িকভাবে চাপা পড়া আরব ও কুর্দি, সুন্নী ও শিয়াদের মধ্যকার বিচ্যুতি রেখা পুনরায জেগে উঠতে পারে।
মসুল কঠিন সময় পাড়ি দিয়েছে। এটি এখনো এক বহু জাতিগোষ্ঠির শহর যেখানে বাগদাদের অ-জনপ্রিয় সরকারের শাসনকে স্বাগত জানানো হবে না।
আইএসের বিরুদ্ধে সাফল্য অর্জনকারী কুর্দিরা মার্কিন বিশেষ বাহিনী ও পশ্চিমা জোটের মিত্র। তারা উত্তর ইরাকে তাদের অস্থায়ী কুর্দি আঞ্চলিক সরকারের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক অনুমোদন লাভের চেষ্টা আরো জোরদার করবে। কুর্দি আঞ্চলিক সরকার ( কেআরজি) সেপ্টেম্বরে গণভোট অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়েছে যা ইরাককে খন্ডিত করতে পারে। তাদের সাথে সিরিয়ার সরকার বিরোধী কুর্দিদের ব্যাপক সহযোগিতা ক্রমশ জোরদার হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র এখন কিছু জটিলতার সম্মুখীন হয়েছে। বিরক্তিকর প্রশ্ন হচ্ছে যে মার্কিন সৈন্যরা আর কতদিন ইরাকে থাকবে এবং তারা কি অনির্দিষ্টকাল ধরে আবাদির সরকারকে সহাযতা দিযে যাবে? পেন্টাগন ইরাাক থেকে সত্ত¡র সরে আসার কথা ভাবছে না। ইরাকি সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখতে তারা ২০১৮ সালে ১২৭ কোটি ডলার চেয়েছে। ইরাকে যদি দীর্ঘকালীন মার্কিন কৌশল থেকে থাকে তবে তা সযতেœ গোপন রাখা হয়েছে।
রাজনৈতিকভাবে বলতে গেলে, মসুলের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নিশ্চিত কোনো পরিকল্পনা আছে। তারা এখানে রাক্কার সাফল্যের আগাম রূপ দেখেছে। ট্রাম্প এখন দাবি করতে পারেন যে তিনি আইএসকে পরাজিত করার তার নির্বাচনী দাবি পূর্ণ করেছেন।
তবে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ আগাম ব্যাপার হয়ে যাবে। আইএস তাদের সব ঘাঁটি হারিয়েছে কিন্তু তাদের বিকৃত মতবাদ বিনাশ হয়নি। তারা অনলাইনে তাদের ঘৃণাপূর্ণ আদর্শ প্রচার অব্যাহত রাখবে। তাদের যোদ্ধারা সম্ভবত সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাবে। এখন তাদেরকে শত্রæর কাছে লড়াইকে নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তার অর্থ দাঁড়াচ্ছে ইউরোপের মাটিতে সম্ভাব্য হামলা। এদিকে যথেষ্ট প্রমাণ আছে যুদ্ধাভিজ্ঞ আইএস যোদ্ধারা ইউরোপে তাদের স্ব স্ব বাড়িতে ফিরে আসছেন। মসুল থেকে পাওয়া খবর ভালো। কিন্তু কথা হচ্ছে, আইএসের পরাজয় ঘটেছে, শেষ হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।