বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মার্কিন হামলায় নিহত ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শীর্ষ নেতা আবু ইব্রাহিমকে নিয়ে জল্পনা-কল্পনা ঘনীভূত হচ্ছে। তাঁর প্রকৃত নাম নিয়েও রয়েছে রহস্য। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিনি আমির মোহাম্মদ সাঈদ আবদে আল-রহমান আল-মওলা নামেও পরিচিত ছিলেন। দুই বছর আগে জিহাদি নেটওয়ার্কে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের অক্টোবরে মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানের সময় আইএসের প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিজেকে বিস্ফোরণে উড়িয়ে দেন। তারপর আইএসের শীর্ষ নেতৃত্বে চলে আসেন আবু ইব্রাহিম।
সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় আইএস প্রধান নিহতসিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় আইএসের প্রধান নিহত
আইএসের শীর্ষ নেতৃত্বে আসার পর ছদ্মনাম গ্রহণ করেন আবু ইব্রাহিম। তাঁর ছদ্মনাম ছিল 'ধ্বংসকারী' বা ডিসট্রয়ার। আইএসের নেতৃত্ব গ্রহণের আগে তিনি ইয়াজিদিদের গণহত্যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। নৃশংসতার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন এই সন্ত্রাসী নেতা। আইএসের সবচেয়ে নাজুক সময়ে বাহিনীর হাল ধরেছিলেন আবু ইব্রাহিম আল কুরাইশি। কয়েক বছর ধরে মার্কিন নেতৃত্বাধীন হামলায় সিরিয়া ও ইরাকে আইএস যখন তাদের স্বঘোষিত 'খিলাফত' হারাচ্ছিল এবং দুর্বল হয়ে পড়ছিল, তখন আইএসের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন তিনি। তাঁর দায়িত্ব গ্রহণের পর পুনরায় চাঙা হতে শুরু করে আইএস। আইএসের এই নব-উত্থান যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তখন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর আবু ইব্রাহিমের মাথার দাম ঘোষণা করেছিল ১ কোটি টাকা (১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। একই সঙ্গে আবু ইব্রাহিমের নাম 'বৈশ্বিক সন্ত্রাসী' তালিকায় যুক্ত করেছিল।
ট্যাক্সি চালক হিসেবে বাড়ি ভাড়া নেন আইএস প্রধান ট্যাক্সিচালক হিসেবে বাড়ি ভাড়া নেন আইএসের প্রধান
উত্তর ইরাকের তাল আফার শহরে ১৯৭৬ সালে জন্মেছিলেন আবু ইব্রাহিম। সেখানে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত ছিলেন তিনি। তাঁর পরিবার তুর্কমেনিস্তান থেকে ইরাকে এসেছিল। এমন একটি অনারব পরিবারে জন্ম নেওয়া আবু ইব্রাহিমের চরমপন্থী গোষ্ঠীতে যোগ দেওয়া ছিল বিরল ঘটনা।
প্রথম পেশাজীবনে আবু ইব্রাহিম ইরাকের প্রয়াত স্বৈরশাসক সাদ্দাম হোসেনের সেনাবাহিনীতে কাজ করতেন। ২০০৩ সালে মার্কিন সেনাদের হাতে সাদ্দাম হোসেন বন্দী হওয়ার পর আবু ইব্রাহিম আলকায়েদায় যোগ দিয়েছিলেন। এর ঠিক এক বছর পর ২০০৪ সালে মার্কিন বাহিনীর হাতে আটক হয়েছিলেন তিনি। সে সময় তাঁকে দক্ষিণ ইরাকের কুখ্যাত বুক্কা কারাগারে আটক রাখা হয়েছিল।
ভয়ংকর নিষ্ঠুর আচরণের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন আবু ইব্রাহিম। তিনি ২০১০ সালে আলকায়েদার ইরাকি শাখার হাল ধরেছিলেন। তারপর ইসলামিক স্টেট অব ইরাক (আইএসআই) এবং তারও পরে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়ার (আইএসআইএস) হাল ধরেছিলেন। সব দলেই তাঁর পরিচয় ছিল 'নিষ্ঠুর নীতিনির্ধারক'। ২০১৪ সালে আবু ইব্রাহিমের সহায়তায় ইরাকের উত্তরের শহর মসুল নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিএন আইএসের প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদি। বিশ্লেষকেরা বলছেন, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নিজেকে বিদ্রোহীদের সিনিয়র পদে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন আবু ইব্রাহিম। তখন তাঁকে 'প্রফেসর' ও 'ডিসট্রয়ার' নাম দেওয়া হয়েছিল। আইএসের মধ্যে যারা বাগদাদির নেতৃত্বের বিরোধিতা করেছিল, তাদের নিষ্ঠুরভাবে দমন করেছিলেন আবু ইব্রাহিম। এ জন্য তাঁকে নিষ্ঠুর নীতিনির্ধারক বলা হতো। প্যারিসের সায়েন্স পো ইউনিভার্সিটির জিহাদি বিশ্লেষক জেন-পিয়েরে-ফিলিয়ু বলেন, আবু ইব্রাহিম সম্ভবত গণহত্যা ও যৌন দাসত্বের মাধ্যমে ইরাকের ইয়াজিদি সংখ্যালঘুদের নির্মূল করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিলেন।
সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিবে গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সময় আবু ইব্রাহীম তাঁর পরিবারের সদস্যসহ নিজেকে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিঃশেষ করে দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এক বিবৃতিতে বলেন, আবু ইব্রাহিম ছিলেন বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হুমকি। এদিকে জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা হ্যান্স জ্যাকব শিন্ডলার বলেন, আবু ইব্রাহিমের মৃত্যু আইএসআইয়ের জন্য এক বিশাল ধাক্কা। এখন দেখার বিষয়, আইএসআইয়ের নেতৃত্ব কে গ্রহণ করে। সূত্র : এনডিটিভি
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।