পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : গরু রক্ষার নামে ভারতীয় হিন্দু কর্তৃক সেই দেশের সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর ধারাবাহিক নির্যাতন, হত্যার ঘটনায় নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের রক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কার্যকর ভ‚মিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ সরকারের প্রতিও আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, সরকার যেন প্রতিবেশী দেশটিতে জাতিগত মুসলিম নিধন বন্ধে ভারত সরকারকে নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে তাগিদ দেয়।
বিবৃতিতে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, দেশটিতে নিয়মিত বিরতিতে গো হত্যার অভিযোগে, গরু বহনের অভিযোগে নির্মমভাবে পিটিয়ে মারছে মুসলমানদেরকে। এবং আশ্চর্যজনকভাবে এই সন্ত্রাসের টার্গেট হচ্ছে মুসলমানেরা, যদিও মুসলমানেরাই একমাত্র স¤প্রদায় নয়, যারা গরুর গোস্ত খায়। এই গরুর ইস্যুটাকে মুসলমান স¤প্রদায়ের উপরে সহিংসতার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এবং সবচেয়ে উদ্বেগজনক হচ্ছে, সরকারি পর্যায়েও এই সহিংসতা উস্কে দেয়ার জন্য হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিবিদেরা হিংসাত্মক কথা বলেন। এই গো হত্যার জন্য সহিংসতায় শুধু উন্মত্ত জনতাই জড়িত নয় নয়, বরং তার পেছনে রীতিমতো রাষ্ট্রীয় সমর্থনও আছে।
বিবৃতিতে হেফাজত মহাসচিব আরো বলেন, বিজেপি শাসিত এবং বিজেপি প্রভাবিত এলাকায় প্রতিদিনই গো-রক্ষাবাহিনীর তান্ডবের শিকার হচ্ছেন মুসলিম ও দলিতরা। গো-রক্ষার নামে সর্বত্র সন্ত্রাস ও ভয়ের রাজত্ব তৈরি করা হচ্ছে। গো-হত্যা আদতেই হয়েছে কিনা, তার সত্যাসত্য বা প্রমাণ-অপ্রমাণের কোন বালাই নেই। গো-রক্ষাবাহিনীর দুষ্কৃতীকারীরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে বা গুজব রটিয়ে আক্রমণ করছে নীরিহ মুসলিম ও দলিতদের। আর তাদের এই বেআইনী ও অপরাধমূলক কাজের সাফাই গাইছে আরএসএস এবং বিজেপি নেতারা।
জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, গো-রক্ষার বিষয়টা সামনে আনা হয় হিন্দু জাতিগোষ্ঠীর প্রভাব বলয় তৈরির বাসনা থেকেই। গো-রক্ষার নামে যা করা হচ্ছে, তা একই সাথে মুসলমান ও দলিত-বিরোধী এবং ফলতঃ এটা ব্রাহ্মণ্যবাদ প্রতিষ্ঠার চিন্তা। বর্তমানে এই হিন্দুত্বের ধারণায় পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং গো-রক্ষার বিষয়টি সম্পূর্ণ ভাবেই মুসলমান-বিরোধী একটি বৈশ্বিক হিন্দু জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজে লাগানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ভারত নিজেকে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র বলে দাবী করে। কিন্তু নিজেই তার বিভেদাত্মক পরিচয়বাদী হিন্দু রাজনীতির স্বার্থে রাষ্ট্রীয়ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনকে উস্কে দিচ্ছে; যা শুধু দুঃখজনকই নয়, ভবিষ্যতের উপমহাদেশের রাজনীতির জন্য ভয়াবহ এক অশনি সংকেতও এটা। তিনি বলেন, নর-হত্যা কোন ধর্মেই অনুমোদন দেয়া নেই। সেই কথাটা ভুলে গিয়ে হিন্দুত্ববাদীরা গরু হত্যার বদলা হিসেবে নিরীহ মানুষ হত্যা করছে। তাহলে ধর্ম কোথায় থাকে? যেখানে ধর্ম মানুষকে সুউচ্চ আসনে বসায়, সেখানে ধর্ম রক্ষার নামে মানুষের অপমান, অমর্যাদা এবং প্রাণহানী; আর যাই হোক ধর্ম হতে পারে না।
বিবৃতিতে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, আমরা ভারতের সা¤প্রতিক গো-রক্ষার রাজনীতিতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠিত। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে গো-রক্ষার উন্মত্ততায় অহরহ চলতে থাকা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে আন্তর্জাতিক নিরপেক্ষ তদন্ত করে ভারতীয় রাজনীতির সহিংসতা থেকে সংখ্যালঘু মুসলমান স¤প্রদায়কে হিন্দুত্ববাদিদের জাতিগত নিপীড়ন থেকে রক্ষা করার জন্য আমরা উদাত্ত আহŸান জানাচ্ছি। পাশাপাশি আমরা এটাও চাই যে, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সংখ্যালঘু মুসলমানদের রক্ষায় ভারত সরকারকে বাংলাদেশ সরকার যেন নিজেদের গভীর উদ্বেগের কথা জানিয়ে গো-রক্ষার নামে জাতিগত মুসলিম নির্যাতন ও হত্যা বন্ধে জোর তাগিদ দেয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।