ইনকিলাব ডেস্ক : নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে প্রদত্ত ১৩ দফা শর্ত মানা না মানার ব্যাপারে কাতারের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক জবাব পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে সউদী জোট। মধ্যস্থতাকারী দেশ কুয়েতের মাধ্যমে কাতারের আমিরের লিখিত জবাব হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছে তারা। তবে কাতারের কাছ থেকে কী জবাব এসেছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। সউদী জোট এখন বলছে, যথাসময়ে কাতারের কাছে জবাব পৌঁছে যাবে। এদিকে, মঙ্গলবার রাতে রাজধানী দোহায় জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েলের সঙ্গে বৈঠকের পর কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমান আলে সানি আবারো জোর দিয়ে বলেছেন, সউদী আরব ও তার মিত্ররা যেসব দাবি দিয়েছে তা মেনে নেয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তিনি বলেন, দাবিগুলো অবাস্তব এবং বাস্তবায়নযোগ্য নয়। তিনি বলেন, এসব দাবি আসলে সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত নয় বরং কাতারের বাক-স্বাধীনতা বন্ধের চেষ্টা। অপরদিকে কাতারের ব্যাপারে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিতে গতকাল বুধবার কায়রোতে গেছেন সউদী জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। খবরে বলা হয়, কাতারের কাছ থেকে জবাব পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে সউদী জোট। কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ দোহার সঙ্গে সউদী জোটের বিরোধ নিরসনে অন্যতম মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা পালন করছেন। গত সোমবার ১৩ দফা শর্তের ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান জানাতে কুয়েত যান কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কুয়েতের আমিরের কাছে কাতারের আমিরের হাতে লেখা চিঠি হস্তান্তর করা হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানায়, গতকাল বুধবার সকালে সউদী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের টুইটার অ্যাকাউন্টে কাতারের জবাব হাতে পাওয়ার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। ওই টুইটে বলা হয়, কুয়েতের মন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল-সাবাহ এর কাছ থেকে সউদী মন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের কাতারের জবাব হাতে পেয়েছেন। সউদী নিউজ এজেন্সিতে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, যথাসময়ে কাতারের কাছে জবাব পৌঁছে যাবে। প্রসঙ্গত, জঙ্গিবাদে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগ এনে গত ৫ জুন কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সউদী আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মিসরসহ কয়েকটি দেশ। এ অভিযোগকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে তা নাকচ করে দেয় দোহা। কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দুই সপ্তাহ পর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য আল-জাজিরা বন্ধ করে দেয়াসহ কাতারকে ১৩ দফা শর্ত বেঁধে দেয় চার দেশ। শর্ত পূরণে ১০ দিনের সময়সীমা দেয়া হয়। সে সময়সীমা শেষ হওয়ার পর ২ জুলাই রোববার সেই সময়সীমা দুই দিন বাড়ানোর কথা জানায় সউদী সূত্র। এরইমধ্যে সে সময়সীমা শেষ হয়েছে। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, সউদী জোটের শর্তগুলো মানবে না দোহা। নিজ দেশের পক্ষে একটি যথাযথ সংলাপ দাবি করেছিলেন তিনি। একই কথার পুনরাবৃত্তি করে মঙ্গলবার দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সউদী জোটের দেওয়া শর্তগুলো খুবই অবাস্তব ও মানা অসম্ভব। কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এই শর্ত মানা সম্ভব না হলেও সংলাপের মাধ্যমে এই সংকট সমাধান করতে চায় কাতার। আল-জাজিরা, বিবিসি।