পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের দায়ের করা আপিল সর্বসম্মতিক্রমে খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সুপ্রিম কোর্টের এ রায় নিয়ে কোনো ধরনের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া না দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিচার বিভাগ যে স্বাধীন এটা তারই বহিঃপ্রকাশ। সুতরাং তারা যে রায় দিয়েছেন সে বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানোর প্রয়োজন নেই। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান বলে একাধিক মন্ত্রী নিশ্চিত করেছেন।
সংসদে আনা সংবিধানের সংশোধনী উচ্চ আদালতে অবৈধ ঘোষণার পরও বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, রাষ্ট্র চলবে সংসদের সিদ্ধান্তে। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মেনন বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কারণে সংসদের সিদ্ধান্ত বাতিল হতে পারে না। কারণ সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে ১৯৭২ সালে আমাদের মূল সংবিধানে বিষয়টি ছিল। সংসদ যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেটি কিন্তু মূল সংবিধানকে কোনোভাবেই ক্ষুণœ করেনি।
এর আগে এ রায়ে হতাশা প্রকাশ করলেও রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইনি কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, এ রায়ের মাধ্যমেই প্রমাণিত হয়েছে বিচার বিভাগ স্বাধীন। বিচার বিভাগ স্বাধীন বলেই এ রায় দিতে পেরেছে। তার আগে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের দায়ের করা আপিল সর্বসম্মতিক্রমে খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। আদালতের নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১ ঘণ্টা ২৬ মিনিট পর গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সকাল ১০টা ২৭ মিনিটে এই রায় ঘোষণা করেন। এ দিকে এ রায়কে জনগণের বিজয় হিসেবে দেখছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান জাতীয় সংসদের যে কম্পোজিশন তাতে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদের ওপর ন্যস্ত থাকলে সেখানে চরম দলীয় কর্তৃত্বের প্রতিফলন ঘটত এবং নিরপেক্ষতা ও ন্যায়বিচার ক্ষুণœ হতো। বিচারকদের নানাভাবে প্রভাবিত করতে তারা চাপ প্রয়োগের সুযোগ পেত। সুপ্রিম কোর্টের এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের ফলে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দলের আদালতের ওপর অনাকাক্সিক্ষত হস্তক্ষেপের নিশ্চিত সম্ভাবনা দূর হলো। তিনি বলেন, সরকার বিচার বিভাগকে করায়ত্ত করার যে দুরভিসন্ধি করেছিল, আজ সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে সেই চক্রান্ত ব্যর্থ হলো। ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণায় সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, রাষ্ট্র চলবে সংসদের সিদ্ধান্তে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কারণে সংসদের সিদ্ধান্ত বাতিল হতে পারে না। কারণ সংসদ জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে ১৯৭২ সালের আমাদের মূল সংবিধানে বিষয়টি ছিল। সংসদ যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেটি কিন্তু মূল সংবিধানকে কোনোভাবেই ক্ষুণœ করেনি। বিচারক অপসারণ ক্ষমতা সংসদে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আগেই অবৈধ ঘোষণা করেছিল হাইকোর্ট। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে দিয়েছে আপিল বিভাগ। ফলে সামরিক সরকারের আমলে বিচারক অপসারণ বিষয়ে করা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলই বহাল রইল। মেনন বলেন, যেহেতু সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন সেটা নিয়ে আমরা নিশ্চয়ই সংসদে আলোচনা করব।
বর্তমান সরকার ২০০৯ সালের শুরুতে ক্ষমতায় আরোহণের পর দুই দফা সংবিধান সংশোধন করেছে। প্রথম দফায় ২০১১ সালের ৩০ জুন নির্বাচনকালীন তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে পঞ্চদশ সংশোধনীতে নির্বাচিত সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়। এরপর ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বরে বাহাত্তরের সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদকে ফিরিয়ে দেয়ার বিধান পাস হয়। সংবিধানের এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট করেন। ২০১৬ সালের ৫ মে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ বলে রায় ঘোষণা করে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, উচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের অপেক্ষায় থাকবেন তারা। এই রায় দেখেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।