পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনে ভারতীয় হাই কমিশনের প্রতিনিধি দল
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ভারতীয় হাই কমিশনের ফার্স্ট সেক্রেটারী রমাকান্ত গুপ্তার নেতৃত্বে হাই কমিশনের একটি প্রতিনিধি দল নরসিংদীর ঐতিহ্যবাহী বাউলবাড়ী পরিদর্শন করেছেন। হাইকোর্টের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক নরসিংদীর ঐতিহ্যবাহী বাউল স¤প্রদায়ের জায়গা দখলের প্রেক্ষাপটে বাউল আখড়াধামের সেবায়েত প্রাণেশ বাউল ঝন্টু’র আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তারা এই পরির্দশনে আসেন। পরিদর্শনকালে তারা বাউলবাড়ীর আখড়াধাম ও মেঘনা তীরবর্তী পাঁচশত বছরের ঐতিহ্যবাহী বাউল মেলার জায়গা ঘুরে ঘুরে দেখেন। আখড়াধামের সেবায়েত প্রাণেশ বাউল ঝন্টুসহ বাউল বাড়ীর লোকজন ভারতীয় হাই কমিশনের প্রতিনিধি দলকে বাউলবাড়ীর ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে ধারনা প্রদান করেন। বাউল মেলা অনুষ্ঠানের বিশাল জায়গা এবং বাউলদের শত শত বছরের অবস্থানের চিত্র তুলে ধরেন। জানা গেছে, নরসিংদী জেলা শহরের মেঘনার তীরবর্তী কাউরিয়াপাড়া এলাকায় বাউল স¤প্রদায় পাঁচশত বছর পূর্বে বসতি স্থাপন করে। বাউলরা এখানে স্থাপন করে তাদের ঐতিহ্যবাহী আখড়াধাম। এই আখড়াধামকে ঘিরে পাঁচশত বছর ধরে মেঘনার তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ঐতিহ্যবাহী বাউলের মেলা। প্রতিবছর এই বাউল মেলায় বাংলাদেশসহ ভারতের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাউলরা এসে তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদী পালন করে। বাউল মেলায় আমদানী হয় বাঙালীর গৃহস্থালীর তৈজষপত্র, বাঙালীর যুগযুগের ঐতিহ্যবাহী খাদ্য সামগ্রী, খেলনা সামগ্রী এবং কাপড়-চোপড়। এছাড়া শত শত হকার তাদের বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে এই বাউল মেলায় দোকানপাট স্থাপন করে। ২০০৮ থেকে ১০ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড নরসিংদী শহর রক্ষাবাধ নির্মাণকালে বাউলদের জায়গাসহ বাউলবাড়ীর ঘাট দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় আখড়া ধামের সেবায়েত প্রাণেশ বাউল ঝন্টু বাদী হয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করলে হাইকোর্ট বাউলদের জায়গা দখলের উপর স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। হাই কোর্টের এই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকাবস্থায় সা¤প্রতিককালে পানিউন্নয়ন বোর্ড হাইকোর্টের স্থায়ী নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে রাস্তা নির্মাণের টেন্ডার আহবান করে জনৈক ঠিকাদারকে কাজ বরাদ্দ দেয়। এই অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বাউলবাড়ীর ঘাটসহ বউলদের জায়গা দখল করে রাস্তা নির্মাণ করতে থাকাবস্থায় আখড়া ধামের সেবায়েত প্রাণেশ বাউল ঝন্টু পূনরায় হাইকোর্টের শরনাপন্ন হলে হাইকোর্ট পূনরায় নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। আখড়া ধামের সেবায়েত ঝন্টু হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা জারীর কথা একটি সাইনবোর্ডে লিখে তা ঘটনাস্থলে সেটে দেয়ার পর গভীর রাতে কে বা কারা সাইনবোর্ডটি তুলে নিয়ে যায় এবং হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পূনরায় রাস্তা নির্মানের কাজ চালাতে থাকে পানিউন্নয়ন বোর্ড। এই অবস্থায় ঝন্টু বাউল ঘটনাটি ভারতীয় হাই কমিশনকে জানালে হাই কমিশনের নির্দেশে ফার্স্ট সেক্রেটারী রমাকান্ত গুপ্তার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় বাউলদের আখড়াধাম পরিদর্শন করেন। এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ফাস্ট সেক্রেটারী রমাকান্ত গুপ্তা জানান, তারা হাই কমিশনের নির্দেশে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছেন। তারা পরিদর্শনের সময় প্রাপ্ত তথ্যাবলী ও ঘটনাবলী সম্পর্কে একটি রিপোর্ট হাই কমিশনে পেশ করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।