Inqilab Logo

সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ক্ষমতা পুনর্দখলের পথে তালিবান

প্রকাশের সময় : ৮ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : আফগানিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোর একের পর এক ঘাঁটি ছেড়ে সেনারা ব্যারাকে ফিরছে। সেখানে সদম্ভে অস্ত্র হাতে টহল দিচ্ছে তালিবান যোদ্ধারা। সেনাবাহিনীর এই পিছু হটাকে সরকার রণকৌশল বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলেও বিশেষজ্ঞরা এটিকে সরকারের সুস্পষ্ট পরাজয় এবং তালিবানের ক্ষমতা পুনর্দখলের পথে যৌক্তিক অগ্রগতি বলেই ধরে নিচ্ছেন। তারা এটিকে দেখছেন দেশটিতে চরম অস্থিরতা শুরুর অশনিসংকেত হিসেবেই। গত মাসে হেলমান্দ প্রদেশের মুসাকালা এবং নওজাদ- এই দুই জেলা থেকে সব বিদেশি ও আফগান সেনা সরিয়ে আনা হয়। আর এ মাসেই পার্শ্ববর্তী উরুজগান প্রদেশের মধ্যাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা থেকে সেনারা সরে আসে। সেনা প্রত্যাহারের এই প্রবণতা অন্য এলাকায়ও বিস্তৃত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। যেসব এলাকায় এতদিন সেনা মোতায়েন ছিলো, সেসব স্থানে এতদিন তালিবানবিরোধী সাধারণ মানুষ কিছুটা হলেও ভরসা পেতো। কিন্তু এখন তাদের এই আশঙ্কা তাড়া করে ফিরছে যে কখন তালিবান ঝাঁপিয়ে পড়ে কচুকাটা শুরু করবে। সম্প্রতি সরকারের সঙ্গে তালিবানের শান্তি আলোচনার যে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিলো তাও ফিকে হয়ে আসছে।
কান্তি আলোচনার সম্ভাব্যতা নিয়ে কথা বলতে গত মাসে কাবুলে তালেবান, আফগান সরকার, পাকিস্তান, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা বসেছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় ওই মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় চলতি সপ্তাহে ইসলামাবাদে আফগান সরকার ও তালেবান প্রতিনিধিদের বৈঠক হওয়ার কথা। কিন্তু সেই সম্ভাবনার আগুনে গত শনিবার কঠোর শর্তের জল ঢেলে দিয়েছে তালেবান। তারা বলেছে, আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি সেনা না সরালে আন্তর্জাতিক কালো তালিকা থেকে তালেবান নেতাদের নাম বাদ না দিলে এবং বন্দি তালেবান সদস্যদের মুক্তি না দিলে তারা আলোচনায় বসবে না। সেনাবাহিনী প্রত্যাহার কওে নেয়ার পর মুসাকালা এলাকা থেকে পালিয়ে কাবুল চলে এসেছেন সেখানকার উপজাতীয় নেতা মোহাম্মাদ ইসমাইল। তিনি বলেন, আপনি যখনই সেনা প্রত্যাহার করা এবং বহু কষ্টে অর্জিত ভূখ- ছেড়ে দেয়া শুরু করলেন, তখনই আপনি কার্যত তালেবানের জয় স্বীকার করে নিলেন। ইসমাইল বলেন, ১৫ বছর ধরে যারা জানমাল দিয়ে এই এলাকার নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছিলো, সেনা প্রত্যাহার করে সরকার তাদের সঙ্গে বেঈমানি করেছে। সেনা প্রত্যাহারের ঘটনায় জনমনে এই ধারণা তৈরি হয়েছে, পুরো হেলমান্দের পতন খুব দ্রুত হতে যাচ্ছে। আফগানিস্তানের যে বড় ১৪টি আফিম উৎপাদনকারী জেলা রয়েছে, তার ১০টিই এখন তালেবানের দখলে। তবে সরকার পরাজয় স্বীকার করতে নারাজ।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র দৌলত ওয়াজিরি বলেন, যারা বলছেন সেনা প্রত্যাহারে সরকারের পরাজয় প্রকাশ পাচ্ছে, তারা যুদ্ধের ‘শিল্প’ বোঝেন না। মূলত হেলমান্দের রাজধানী লস্কর গাহের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সেখানে এই সেনাদের আনা হয়েছে। তিনি দাবি করেন, পরে তালেবানের ওপর বড় ধরনের সমন্বিত হামলা চালানো হবে। তবে ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান উড্রো উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলারসের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যান বলেছেন, এমনিতেই আফগান সেনাবাহিনী এখন আগের চেয়ে অনেক খারাপ অবস্থায় আছে। তাদের সামরিক সরঞ্জাম ও অর্থের অভাব রয়েছে। এ অবস্থায় তারা ছেড়ে দেয়া এলাকা আবার খুব শিগগির দখলে নিতে পারবে, তা মনে হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। এএফপি, ওয়েবসাইট।



 

Show all comments
  • Mizan Mulla ৮ মার্চ, ২০১৬, ১০:১০ এএম says : 4
    ইনশা আল্লাহ সেইদিন আর বেশি দুরে নয়।
    Total Reply(0) Reply
  • Tahsin M Rahman ৮ মার্চ, ২০১৬, ১০:১০ এএম says : 0
    alhamdulillah....
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ক্ষমতা পুনর্দখলের পথে তালিবান
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ