মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
দার্জিলিংয়ের স্কুলগুলোতে বাংলা ভাষা পড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও আলাদা গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে বন্্ধ
ডেকেছে মোর্চা
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পাহাড়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ডাকা অনির্দিষ্টকাল বন্্ধ চলছে। দার্জিলিংয়ের স্কুলগুলোতে বাংলা ভাষা পড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ও আলাদা গোর্খাল্যান্ড রাজ্যের দাবিতে এই বন্্ধ ডেকেছে মোর্চা। যদিও পশ্চিমবঙ্গ সরকার বলছে কড়া হাতে বন্্ধ সমর্থকদের মোকাবিলা করা হবে। বন্্ধ-এ দার্জিলিংয়ে ব্যাঙ্ক বা সরকারি অফিস কিছুই খোলেনি, চলেনি পর্যটকদের বড় আকর্ষণ পাহাড়ের বিখ্যাত টয় ট্রেনও। গত সপ্তাহ থেকেই দার্জিলিংয়ে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে যে সংঘাত চলছে তা মোর্চার ডাকা বনধের প্রথম দিনেই তা চরমে পৌঁছায়, যখন মোর্চার সমর্থকরা লেবং কার্ট রোডে পূর্ত দফতরের অফিসে ও বিজনবাড়ি গ্রামের পঞ্চায়েত কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। সোনাদায় ভাঙচুর চালানো হয় বিদ্যুৎ দফতরের অফিসেও। মোর্চার নেতা বিমল গুরুং আগেই জানিয়েছিলেন, এখন তাদের কর্মীদের ঘরে চুপচাপ বসে থাকার সময় নয়। তার বক্তব্য ছিল, যে স্বৈরতান্ত্রিক নীতি নিয়ে বাংলা তাদের সংস্কৃতিকে আমাদের নেপালি বা গোর্খা জাতিসত্তার ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে সেটা তো রোজ টিভিতে সবাই দেখতে পাচ্ছে। আমাদের লোকজন নীরবে সেটা আর সহ্য করবে না, তারা আন্দোলন করে জেলে যাবে কিন্তু জাতিসত্তার ওপর অন্যায় হস্তক্ষেপ বরদাস্ত করবে না। যে সব ইস্যুতে মোর্চা বন্্ধ ডেকেছে তার মধ্যে একটা হল পাহাড়ের স্কুলগুলোতে বাংলা শেখানো চলবে না- যদিও রাজ্য সরকার বলছে বাংলা ভাষাশিক্ষা হবে পুরোপুরি ঐচ্ছিক। তবে পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা, মোর্চার নিয়ন্ত্রণে থাকা গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের হিসেবনিকেশ পরীক্ষা করানোর যে উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, তা ভÐুল করতেই এই বনধের ডাক দিয়েছেন বিমল গুরুং। মিস ব্যানার্জি অবশ্য দাবি করেছেন, মোর্চার হুমকিতে ভয় পাওয়ার পাত্রী তিনি নন। দু’পক্ষের এই অনড় অবস্থানে আপাতত প্রবল সমস্যায় পড়েছেন পর্যটকরা। পাহাড়ে বেড়ানোর পরিকল্পনা বাতিল করে তাদের এখন তড়িঘড়ি সমতলে ফেরার বাস বা গাড়ি জোগাড় করতে হচ্ছে। সোমবার এই পর্যটকদের অনেকেই বলছিলেন, যেভাবে অফিস-কাছারিতে আগুন দেওয়া হচ্ছে বা রাস্তাঘাটে দাঙ্গার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে শিগগিরি দার্জিলিং থেকে বিদায় নেওয়া ছাড়া তাদের সামনে কোনও রাস্তা নেই। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাও জানিয়ে দিয়েছে, দার্জিলিংয়ে আসা পর্যটকদের ভালমন্দের কোনও দায়িত্ব তারা নেবে না। পাহাড়ে এই আতঙ্ক আর অস্থিরতার বীজ অবশ্য নিহিত আছে দার্জিলিংয়ের জাতিগত ও প্রশাসনিক কাঠামোতেই, বিবিসিকে বলছিলেন উত্তরবঙ্গের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও সাবেক এমপি দেবপ্রসাদ রায়। একদিকে আবেগ, অন্যদিকে সংবিধান। একদিকে নেপালি জাতিসত্তার প্রশ্ন, পৃথক গোর্খাল্যান্ডের মধ্যে দিয়ে যারা তার স্বীকৃতি দাবি করছে অন্যদিকে পশ্চিমবাংলার দৃষ্টিকোণে এই রাজ্যের অখÐতা বজায় রাখার প্রশ্ন। এই দুটোর মধ্যে কিছুদিন পর পর সংঘাত হতে বাধ্য, বলছিলেন তিনি। মি রায় মনে করেন, দেশের সংবিধান সংশোধন করে দার্জিলিংকে যদি একটি অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলের মর্যাদা দেওয়া যায় ও নেপালি ভাষাভাষী সংখ্যালঘুদের হাতে তার কর্তৃত্ব দেওয়া যায় তবেই সম্ভবত এই সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান বেরোতে পারে। কিন্তু আপাতত দার্জিলিং পাহাড় আরও এক দফা প্রবল অস্থিরতার দিকেই এগোচ্ছে বলে ঘটনাপ্রবাহ ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিবিসি, এনডিটিভি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।