Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাতার শ্রমবাজারে প্রভাব পড়বে না

সাত মুসলিম দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন

| প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০১৭, ১২:০০ এএম


শামসুল ইসলাম : কাতারের সাথে সউদীসহ সাতটি দেশ সর্ম্পক ছিন্ন করায় বাংলাদেশী শ্রমবাজারের প্রভাব পড়বে না। কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র এতথ্য জানিয়েছে। কাতারে প্রবাসী বাংলাদেশী কর্মীরা অত্যান্ত সুনামের সাথে কাজ করে প্রতি মাসে প্রচুর রেমিটেন্স দেশে পাঠাচ্ছে। প্রতি মাসে কাতারে ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার কর্মী যাচ্ছে। কাতারের সাথে মুসলিম দেশগুলোর কূটনৈতিক সর্ম্পক ছিন্ন হওয়ায়  আরব উপসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনীতি বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে। গত তিন দিন যাবত সউদী সরকার কাতারের সাথে স্থলপথ বন্ধ করে দিয়েছে। এতে সউদী থেকে শাকসব্জিসহ অন্যান্য খাদ্যপণ্য আমদানী বন্ধ হয়ে গেছে। কাতার থেকে অন্যান্য দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। কাতারে কর্মরত বাংলাদেশীদের মাঝে চরম আতংক বিরাজ করছে। কাতারের বহু কোম্পানী ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশীসহ সেন্ডিং কান্ট্রি’র কর্মীদের চাকুরি হারিয়ে স্ব-স্ব দেশে ফেরত আসতে হতে পারে। আসন্ন ঈদ-উল ফিতরের ছুটিতে শত শত বাংলাদেশী কর্মী দেশে আসার জন্য মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক এয়ারলাইন্সগুলোতে সস্তায় টিকিট ক্রয় করেছিল। উল্লেখিত এয়ারলাইন্সগুলোর সকল ফ্লাইট বাতিল হয়ে যাওয়ায় টিকিট সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশে ফেরার একমাত্র কাতার এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ও বিমানের ফ্লাইট রয়েছে। তা’ টিকিটের দাম তিনগুণ বেড়ে গেছে। কাতারে কর্মরত অনেকেই টিকিট পাচ্ছে না। কাতার থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছে।
কাতারের রাজধানী দোহাস্থ  বাংলাদেশ দূতাবাসের কনসেলার  (লেবার) ড. সিরাজুল ইসলাম গতকাল টেলিফোনে ইনকিলাবকে বলেন, সউদীসহ সাতটি দেশ কাতারের সাথে সকল প্রকার কূটনৈতিক সর্ম্পক ছিন্ন করায় বাংলাদেশী শ্রমবাজারের উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। বর্তমানে কাতারে সরকারী হিসেব অনুযায়ী ৩ লাখ ৮০ হাজার কর্মী কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিটেন্স দেশে পাঠাচ্ছে। আট থেকে দশ হাজার বাংলাদেশী কাতারে ব্যবসা-বাণিজ্য করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছে। বেসরকারী হিসেবে ৪ লক্ষাধিক কর্মী কাতারে অবস্থান করছে।  সন্ত্রাসবাদীদের মদদ দেয়ার অভিযোগে কাতারের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে সউদী আরব,মিসর, মালদ্বীপসহ সাতটি দেশ। কাতারকে এভাবে একঘরে করার ব্যাপক  প্রভাব পড়তে পারে আরব উপসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতিতে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে। সউদী বিনিয়োগকারীদের কোম্পানীগুলো শিগগিরই বন্ধ হয়ে যাবে। এতে বাংলাদেশীসহ বিদেশী কর্মীরা কর্মসংস্থান হারিয়ে দেশে ফিরে আসতে হতে পারে। গতকাল রাতে কাতারের দোহা থেকে সউদী মহিলা মালিকানাধীন প্যালেস নাজ কন্ট্রাক্টিং  কোম্পানীর বাংলাদেশী ম্যানেজার শাহ আলম অরুন টেলিফোনে এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।  উক্ত কোম্পানীতে ৩০জন বাংলাদেশীসহ ভারত ও নেপালের প্রায় ৭০জন কর্মী কাজ করছে। সউদী মহিলার মালিকানাধীন এ কোম্পানীর ভাগ্যে কি আছে তা’ কেউ কিছু বলতে পারছে না। প্রবাসী ম্যানেজার শাহ আলম অরুন বলেন, সউদী সরকার কাতারের সীমান্ত পথ বন্ধ করে দিয়েছে। সউদী থেকে আমদানীকৃত সকল পণ্য সামগ্রী আসা বন্ধ হয়ে গেছে। ঈদের ছুটি উপলক্ষে বাংলাদেশী কর্মীরা সবচেয়ে বেশি টিকিট সংকটে পড়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক এয়ারলাইন্সগুলোর ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশে আসার টিকিটের দাম তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তা’ পাওয়া যাচ্ছে না। বায়রার সভাপতি ও সাবেক এমপি বেনজির আহমেদ গতকাল রাতে ইনকিলাবকে বলেন, কাতারের সাথে মুসলিম দেশগুলোর কূটনৈতিক সর্ম্পক ছিন্ন হওয়ায় বাংলাদেশী শ্রমবাজারের তেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। তিনি বলেন, কাতার একটি স্বাধীন দেশ। মুসলিম দেশগুলোর সাথে কাতারের সর্ম্পকের অবনতিতে বাংলাদেশের কর্মী যাওয়া বন্ধ হবে না । বায়রা সভাপতি বলেন, কাতারে ফ্লাইট চলাচলে বাধা আসলে এবং কোম্পানীগুলো বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দিলে সংকট সৃষ্টি হতে পারে। তবে কাতারের সাথে বাংলাদেশের সর্ম্পক অত্যান্ত ভালো হওয়ায় শ্রমবাজারে কোনো বিরুপ প্রভাব পড়বে না বলেও বায়রা সভাপতি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কাতার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ