পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নাছিম উল আলম : চীনা অনুদানে চট্টগ্রাম-বরিশাল-মোংলা-খুলনা মহাসড়কের বেকুঠিয়াতে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ কঁচা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ কাজ শুরুর অনিশ্চয়তা কাটছে না। গত বছর চীনা প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফরের সময় প্রায় ৮শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে বেকুঠিয়াতে ‘৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু’ নির্মাণে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। কিন্তু সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় জমি চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়ে দিতে না পারায় এর অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরুই হয়নি। অথচ চীন সরকার সেতুটির চূড়ান্ত নকশা প্রণয়নসহ নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ও পরমর্শক নিয়োগ সম্পন্ন করেছে। গত মার্চেই চীন সরকার সেতু নির্মাণ কাজ শুরুর আগ্রহ প্রকাশ করলেও প্রয়োজনীয় জমি হুকুম দখলের অভাবে পুরো বিষয়টিই এখনো অনিশ্চয়তার কবলে।
অথচ বেকুঠিয়াতে ১ হাজার ৪৯০ মিটার দীর্ঘ বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মিত হলে দেশের ৩ সমুদ্র বন্দর ছাড়াও চট্টগ্রাম-বরিশাল ও খুলনা বিভাগের মধ্যে সরাসরি সড়ক পরিবহন আরো সহজতর হত। এ ছাড়া বরিশাল ও খুলনা বিভাগসহ পায়রা ও মংলা সমুদ্র বন্দরের মধ্যে ফেরিবিহীন সরাসরি সড়ক যোগাযোগও স্থাপিত হবে। নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজসহ পণ্য ও জ্বালানীবাহী নৌযানসমূহের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত রাখতে সেতুটি কঁচা নদীর সর্বোচ্চ জোয়ার থেকে ৬০ ফুট উচ্চতায় নির্মিত হবে।
কিন্তু চীন সরকার অর্থের যোগানসহ সেতু নির্মাণ কাজ শুরুর লক্ষ্যে সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করলেও এখনো ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণে ‘উন্নয়ন প্রকল্প সারপত্র-ডিপিপি’ একনেকে চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ করেনি। ফলে ভূমি অধিগ্রহণ কাজও আটকে আছে আইনী জটিলতায়। সরকারী বিধি বিধান অনুযায়ী কোনো ডিপিপি চূড়ান্ত অনুমোদন লাভ না করলে তার অকুস্থলে কোনো ভূমি অধিগ্রহণের সুযোগ নেই। এ আইনী জটিলতায় বেকুঠিয়া সেতুর সংযোগ সড়ক এবং ওয়ার্ক সেডের জন্য ৩০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি আটকে আছে। অথচ চীন সরকার সব আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে বারবার জমি হস্তান্তরে তাগিদ দিচ্ছে। চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গত মার্চে কাজ শুরু করে ৩০ মাসের মধ্যে বেকুঠিয়ায় প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দফতরেও একাধিক চিঠি প্রদান করে সেতু কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে অপ্রত্যাশিত জটিলতা ব্যাপ্তি লাভের পরে সরকারের উচ্চ পর্যারে সিদ্ধান্ত ও চীন সরকারের একাগ্রতায় তার সুরাহা হয়। গত বছর চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকালে চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে বেকুঠিয়ায় বাংলাদেশ-চীন ৮ম মৈত্রী সেতু নির্মাণের বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ লাভ করে।
কিন্তু এর প্রায় এক বছর পরেও বাংলাদেশ সরকার এখনো সেতু নির্মাণ প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন করেনি। তবে দীর্ঘ কালক্ষেপণের পর সড়ক অধিদফতর ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে বেকুঠিয়া সেতু নির্মাণ প্রকল্পের ডিপিপি গত ১৫ মে প্রি-একনেক-এর অনুমোদন লাভ করে। কিন্তু প্রকল্পের জনবল মঞ্জুরী লাভ না করায় এখনো তা একনেকের সভার জন্য তালিকাভুক্ত হয়নি। সড়ক অধিদফতর থেকে প্রকল্পের জন্য অস্থায়ী জনবল মঞ্জুরী চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হলেও এখনো তা অনুমোদন লাভ না করায় পুরো প্রকল্প আবারো আটকে গেছে।
সেক্ষেত্রে আপতত জমি ভাড়া নিয়ে হলেও কাজ শুরু করা যায় কিনা সে বিষয়টি ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে। গত মাসে সড়ক অধিদফতর ও চীনা নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিনিধি দল পিরোজপুরের বেকুঠিয়ায় সেতু নির্মাণস্থল পরিদর্শন করেন। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনো কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে সড়ক অধিদফ্তরের সেতু নকশা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ইনকিলাবকে জানান, বেকুঠিয়ায় ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণ কাজ শুরুর লক্ষে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
চলতি মাসের মধ্যেই প্রকল্পের ডিপিপি একনেকের অনুমোদন লাভের আশাবাদ ব্যাক্ত করে পরবর্তী কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার সব প্রস্তুতি গ্রহণের কথাও জানান তিনি। এ ব্যাপারে বরিশাল সড়ক সার্কেলের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, কিছু আইনী জটিলতায় আমরা পেছনে থাকলেও সবকিছু অতিক্রম করে দ্রæততম সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজ শুরুর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে ঠিক কবে নাগাদ দেশের অন্যতম বৃহত্তম এ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কেউ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।