Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আতঙ্ক কাটেনি উপকূলবাসীর

| প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


আইয়ুব আলী : চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ও জেলা প্রশাসনের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে সময়মতো প্রত্যন্ত উপকূলীয় এলাকার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরে যায়। এতে করে জানমালের ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে। দুপুরের পর ধীরে ধীরে ঝড়ো হাওয়া কেটে গেছে। ভারী বর্ষণ থেমেছে। তবে উপকূলে বসবাসরত মানুষের আতঙ্ক এখনো কাটেনি। সোমবার ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাব সম্পর্কে ১০ নম্বর বিপদ সংকেত জারির পর থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকূলীয় ঝুঁকিপূর্ণ লাকায় বসবাসরত মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে ব্যাপক মাইকিং করা হয়। সিটি কর্পোরেশন সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় চসিকের দামপাড়াস্থ বিদ্যুৎ কার্যালয়ে কন্ট্রোল রুম চালু করে।
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ওইদিন সন্ধ্যা থেকে উপকূলবাসীর জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায় সরেজমিন তদারক করেন। চট্টগ্রাম জেলায় সার্বক্ষণিক এ ব্যাপারে তদারক করেন জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী। নগরীর উপকূলীয় সকল ওয়ার্ড কার্যালয় সার্বক্ষণিক খোলা রাখা হয়। সোমবার রাত থেকে চসিকের আশ্রয়কেন্দ্রের লোকজনের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়। এছাড়া এ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার, আশ্রয়কেন্দ্র, যানবাহন নিয়োজিত রাখা হয়। উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহও খোলা রাখা হয়। এছাড়া উপকূলীয় এলাকার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর সম্ভাব্য দুর্যোগ মোকাবেলায় সার্বক্ষণিক তদারকির দায়িত্ব পালন করেন। সিটি কর্পোরেশনের ডাক্তার, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করে মাঠে নিয়োজিত রাখা হয়।
গতকাল (মঙ্গলবার) সকালে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন উপকূলীয় দক্ষিণ পতেঙ্গা, উত্তর পতেঙ্গা, দক্ষিণ হালিশহর পরিদর্শন করেন। তিনি প্রবল বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়া উপেক্ষা করে নাগরিকদের হালচাল, গতিবিধি ও তাদের জীবনমান এবং ক্ষয়ক্ষতি, আশ্রয়কেন্দ্রের মানুষদের খোঁজ-খবর নেন। সিটি কর্পোরেশনের সচিব মোঃ আবুল হোসেন জানান, গতকাল সকালে আশ্রয়কেন্দ্রে এক হাজার মানুষের মাঝে চিড়া, মুড়িসহ শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়।
এদিকে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়। ৬ হাজার ৬শ’ ৬০ জন স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়। জেলা উপজেলা পর্যায়ে সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিলসহ জেলা ও উপজেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়। এছাড়াও জেলায় ২৮৪টি মেডিকেল টিমকে ওষুধ নিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোঃ জিল্লুর রহমান চৌধুরী ইনকিলাবকে জানান, জেলার কর্ণফুলী, আনোয়ারা, বাঁশখালী, সীতাকুন্ড, চন্দনাইশ, মিরসরাই ও বোয়ালখালী উপজেলার উপকূলীয় এলাকার দেড় লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে আশ্রয় নেন। বিপদ কেটে যাওয়ায় মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তিনি জানান, জেলার বাঁশখালীতে গরীব মানুষের বেশকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখন ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। ঘূর্ণিঝড় কেটে গেলেও সামুদ্রিক জোয়ার, ভারী বর্ষণ, পাহাড়ি এলাকায় ধস এবং নিম্নাঞ্চলের মানুষের মধ্যে পানিবদ্ধতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ