বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে গত ৫ বছরে মুসলমান জনসংখ্যার হার কমেছে ০.৪ ভাগ। এই হিসাব বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)। ২০১৬ সালের স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী ২০১২ সালে দেশে মোট জনসংখ্যার ৮৮.৮ ভাগ ছিল মুসলমান। তবে ২০১৬ সালে এটি কমে দাঁড়িয়েছে ৮৮.৪ ভাগে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক আমীর হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, এই হিসাব করা হয়েছে মূলত ধর্মভিত্তিক বিভাজনের পরিসংখ্যান থেকে। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী দেশে গত ৫ বছরে মুসলমানের হার কমলেও অন্য ধর্মের জনগোষ্ঠীর আনুপাতিক হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১২ সালে দেশের অন্য ধর্মের জনসংখ্যার হার ছিল ১১.২ শতাংশ; সেটা ২০১৬ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে মোট জনসংখ্যার ১১.৬ শতাংশে। গত সোমবার বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ‘বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস্ ২০১৬’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি অডিটোরিয়ামে এই রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. আমীর হোসেন। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য বিভাগের সচিব কে এম মোজাম্মেল হক।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, গত দুই বছর ধরেই বাংলাদেশে মুসলিম জনসংখ্যা কমলেও অন্য ধর্ম পালনকারীর হার বাড়ছে। বিশেষ করে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা বাড়ছে। ২০১৫ সালের হিসাবে দেশের মোট জনসংখ্যার ১০ দশমিক ৭ শতাংশ ছিল হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এর আগের বছর ২০১৪ সালে এই হার ছিল ৯ দশমিক ৯ শতাংশ। বিবিএস বলছে, ২০১৫ সালে দেশের মোট জনসংখ্যা ছিল ১৫ কোটি ৮৯ লাখ। এর মধ্যে ওই বছর হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৭০ লাখ। বিবিএসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালে দেশের জনসংখ্যা ছিল ১৫ কোটি ৬৮ লাখ। তখন হিন্দু ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৫৫ লাখ। বিবিএস স্যাম্পল ভাইট্যাল স্ট্যাটিসটিকস্-এর মাধ্যমে প্রতিবছর জন্ম, মৃত্যু আয়ুষ্কাল, বিয়েসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে থাকে।
পরিসংখ্যান ব্যুরোর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব মিলিয়ে বাংলাদেশে এখন মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার। প্রসঙ্গত এর আগে বাংলাদেশে সরকারি আদমশুমারি অনুযায়ী হিন্দু জনসংখ্যা প্রতি বছরই কমছিল। তখন বলা হচ্ছিল, বাংলাদেশে ধর্মীয় বৈষম্য এবং নির্যাতনের মুখে এদের বেশিরভাগই ভারতে চলে যাচ্ছেন। ২০১৬ সালের ২০ নভেম্বর প্রকাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বারকাতের ‘বাংলাদেশে কৃষি-ভূমি-জলা সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক এক গবেষণায় উল্লেখ করেছেন, ১৯৬৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৫ দশকে মোট ১ কোটি ১৩ লাখ হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে ২ লাখ ৩০ হাজার ৬১২ জন হিন্দু ধর্মাবলম্বী দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন; বাংলাদেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আর প্রতিদিন দেশ ছেড়েছেন গড়ে ৬৩২ জন হিন্দু। দেশের হিন্দু-খ্রিষ্টান-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের নেতারা প্রায়ই সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেন সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে নির্যাতিত হয়ে দেশ ছাড়ছে। অধ্যাপক আবুল বারাকাত গবেষণা করে দেখিয়েছেন সংখ্যালঘুরা দেশ ছাড়ছে, সংখ্যালঘু সংগঠনের নেতারা একই দাবী করছেন। অথচ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরীপে দেখানো হয়েছে উল্টো তথ্য। বাংলাদেশে মুসলিম জনসংখ্যার হার কমছে। মানুষ কোন তথ্য বিশ্বাস করবে? সত্যিই কী বাংলাদেশের মুসলিম জনসংখ্যা কমছে! অবশ্য অনেকেই বলছেন, গত কয়েক বছরে প্রচুর ভারতীয় বৈধ-অবৈধ পথে বাংলাদেশে এসে চাকরি করছেন। সেটা কী পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরীপে প্রভাব ফেলছে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।