Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

নিরাপদ আশ্রয়ে লাখো মানুষ

| প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সাথে রোজাদারদের দুর্ভোগ
রফিকুল ইসলাম সেলিম : দশ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পর উপকূলীয় এলাকার লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে শুরু করেছে। খুলে দেয়া হয়েছে জেলার ৪৭৯টি বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র। উপকূলীয় এলাকার স্কুল-মাদরাসা ও সরকারি বিভিন্ন ভবনেও আশ্রয় নিচ্ছে লোকজন। মহানগরীর দক্ষিণ পতেঙ্গা, হালিশহর, কর্ণফুলীসহ বিভিন্ন এলাকার লোকজনও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে।
মাহে রমজানের রাতে দুর্যোগের ঘনঘটায় আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া মানুষগুলোকে দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এরপরও নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ঘরবাড়ি ছেড়ে লোকজন সাইক্লোন সেন্টারে অবস্থান করছে। নানা আতঙ্ক ও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যদিয়ে গত রাতটি পার করে আশ্রয়কেন্দ্রে হাজারও মানুষ। সম্ভাব্য দুর্যোগ থেকে রেহাই পেতে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে লোকজন রাতভর মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বালা-মুসিবত থেকে পানাহ চেয়ে আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করেন অনেকে। আশ্রয়কেন্দ্রেই তারাবিহ ও সেহেরী সারেন অনেকে।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যেই সন্ধ্যায় মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পর জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিকেল থেকেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা উপকূলে মাইকিং করে লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার আহ্বান জানায়। বিভিন্ন মসজিদের মাইক থেকেও জনগণকে নিরাপদে সরে যেতে বলা হচ্ছে।
ওই আহনে শুরুতে কেউ সাড়া না দিলেও মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পর অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রমুখী হন। মহানগরীর দক্ষিণ পতেঙ্গা ও হালিশহর এলাকার বেশকিছু আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন আশ্রয় নিয়েছে। উপকূলীয় বাঁশখালী, আনোয়ারা, সীতাকুন্ড ও দ্বীপ উপজেলা স›দ্বীপের লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি রেডক্রিসেন্ট ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবক ও জনপ্রতিনিধিরা সার্বিক বিষয়ে তদারক করছেন।
রাতে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম-কক্সবাজারসহ উপকূলীয় অঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি আশপাশের উঁচু ও নিরাপদ ভবনে চলে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিদ্যুৎ, পানিসহ প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা না থাকায় দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হয়েছে লোকজনদের। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের চরম কষ্টের শিকার হতে হয়। চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী সার্বক্ষণিক বিভিন্ন এলাকায় উপস্থিত থেকে এসব কার্যক্রম তদারক করে চলেছেন। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে মহানগরীর উপকূলীয় এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
জেলা প্রশাসক জিল্লুর রহমান চৌধুরী জানান, জেলার ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৮৮০ জন আশ্রয় নিতে পারবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি উপকূলে মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনায় উপকূলবাসীর জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
পতেঙ্গা সৈকত থেকে অস্থায়ী দোকান-পাট সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বিমানবন্দর ও আশপাশের এলাকায় বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে। পতেঙ্গা বিএএফ শাহীন কলেজে খোলা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। সেখানেও অসংখ্য মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
 লালদিয়ার চর, জেলেপাড়াসহ সাগর তীরবর্তী এলাকার লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যেতে শুরু করেছে। লালদিয়ার চর এলাকার একজন বাসিন্দা জানান, পুরুষরা বাসাবাড়িতে থাকলেও নারী ও শিশুদের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের পূর্বভাস অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার সকালে ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অতিক্রম করার কথা রয়েছে। ফলে আজ সকাল পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রমুখী মানুষের ভিড় থাকবে।



 

Show all comments
  • আশিক ৩০ মে, ২০১৭, ২:৪৮ এএম says : 0
    হে আল্লাহ এই রমজানের উছিলায় তুমি তাদের কষ্ট লাঘব করে দাও।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ