Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পাইকগাছার জিসি সড়কে কপোতাক্ষ নদে ব্রিজ নির্মাণে জনদুর্ভোগ লাঘব

প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন

| প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবু হেনা মুক্তি, খুলনা থেকে : ২০০৯ সালের ২৫ মে প্রলয়ঙ্করী ঘুর্র্ণিঝড় আইলার  তান্ডবে  লন্ডভন্ড হয়েছিল খুলনার কয়রা উপজেলাসহ গোটা দক্ষিণ উপকূলের বিভিন্ন জনপদ। আইলার জলোচ্ছ¡াসের তান্ডবে উপকূলের শতাধিক মানুষের প্রাণহানিসহ বিলিন হয়েছিল ঘরবাড়ী রাস্তাঘাট দালানকোটাসহ সব কিছু। শতশত বছরের পুরান জনপদগুলির কোন চিহ্নই ছিলনা। উন্নয়ন বঞ্চিত বৃহত্তর খুলনার মানুষের শেষ ভরসাস্থল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদন্যতায় সরকার আইলায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কয়েক দফায় কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তারই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæত এবং এলজিইডি’র বাস্তবায়ন পাইকগাছার আরএন্ডএইচ-বাঁকা জিসি সড়কে কপোতক্ষ নদের উপর ৩১৫.০০ মিঃ দীর্ঘ ব্রীজটি এখন জনকল্যানের সূতিকাগার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
সূত্রমতে, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার পাইকগাছা আরএন্ডএইচ-বাঁকা জিসি সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ। প্রায় ১১.০০ কিঃ মিঃ পাকা সড়কটি কপোতক্ষ নদ দ্বারা বিভক্ত। কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার জনসাধারণকে ইতোপূর্বে তাদের গুরুত্বপূর্ন কাজে আশাশুনি উপজেলা ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলাসহ ভোমরা ও বেনাপোল স্থল বন্দরে যাতায়াতের জন্য তালা-আঠারোমাইল ঘুরে অনেক সময় ব্যয় করে যেতে হয়েছিল। বর্তমানে পাইকগাছার আরএন্ডএইচ-বাঁকা জিসি সড়কে কপোতক্ষ নদের উপর ৩১৫.০০ মিঃ দীর্ঘ ব্রীজ নির্মিত হওয়ায় কয়রা ও পাইকগাছার জনসাধারণ ব্রীজটি ব্যবহার করে প্রায় ২৫ কিঃ মিঃ কম দূরত্বে স্বল্প সময়ে সাতক্ষীরা সদরসহ ভোমরা ও বেনাপোল স্থল বন্দরে যাতায়াত করতে পারছে। তাছাড়া ব্রীজের দু’পাশে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ব্যাংক, প্রাইভেট হাসপাতাল, ঐতিহাসিক স্থান (বৈজ্ঞানিক স্যার পিসি রায় এর পৈত্রিক ভিটাবাড়ী ও জন্মস্থান) অবস্থিত থাকায় ব্রীজটি ব্যবহার করে এলাকার ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজার হাজার জনসাধারণ উপকৃত হচ্ছে। দূর্গম এলাকার জনসাধারণের দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় আধুনিকায়নের রুপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিগত ২৩ জুলাই ২০১০ তারিখে কয়রা উপজেলার জনসভায় এই ব্রীজ নির্মাণের প্রতিশ্রæতি প্রদান করেন। তারই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ইউনিয়ন অবকাঠামো উন্নয়ন (খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলা) শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে একুশ কোটি টাকা ব্যয়ে উক্ত ব্রীজটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন  হওয়ায় কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার জনসাধারণের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয় প্রতিশ্রæতি পূরণ হলো এবং অত্র অঞ্চলের দীর্ঘ দিনের জনদুর্ভোগ লাঘব হয়েছে।
উল্লেখ্য, মা মাটি প্রকৃতি যেমন সবকিছু উজাড় করে মানুষকে সহায় করেছে তেমনি প্রকৃতির রুদ্র রোষেও ক্ষতবিক্ষত হতে হয় নিমেষেই। তবু শত বাধা বিপত্তি প্রতিকুলতার মাঝেও লোনা হাওয়ার মানুষগুলো বেঁচে থাকার নতুন স্বপ্ন দেখে। সিডরের ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই গত ২০০৯ সালের ২৫ মে আইলায় লন্ডভন্ড করে দেয় গোটা উপকুলীয় অঞ্চল। গত ৮ বছরে অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে নিজের ঘরে মাথা গোজার ঠাই করেছে কয়েক লাখ পরিবার। অবশ্য এখনো মানুষের দুর্দশার শেষ নেই। অধিকাংশ বাঁধ মেরামত হলেও বেশকিছু বাঁধ এতোদিনেও পাউবো আটকাতে পারেনি।  তবে সরকার আইলার মানুষের পাশে থেকে বেঁচে থাকার অনুপ্রেরনা জুগিয়েছে, করেছে সংগ্রামী। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুদীর্ঘ বেদনা বিধুর অধ্যায় আইলায় ক্ষতিগ্রস্তদের জীবন থেকে ৮ বছর কেড়ে নিলেও সংগ্রাম মুখর জীবনের অধিকারী কালজয়ী এসকল উপকুলীয় অঞ্চলের মানুষ শত প্রতিকুলতার মাঝেও ঘুরে দাড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছে। দুর্যোগে ক্ষতবিক্ষত মানুষগুলোর জীবনে যেন ভোরের সোনালী সূর্য উকি দিচ্ছে।





 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ