Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাজিদের সঙ্গে আঁতাত নয়, আপস করেছিল এপি

ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে জার্মান শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগ

| প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : নাজি শাসকগোষ্ঠীর প্রবল চাপ সত্তে¡ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) নিজের স্বাধীনতা বজায় রেখে বিশ্বকে সত্য ও নিরপেক্ষ তথ্য সরবরাহ করেছে। ত্রিশ ও চল্লিশের দশকে জার্মান শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সহযোগিতার অভিযোগ ওঠায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে মার্কিন সংবাদ সংস্থাটি এ কথা বলেছে। জার্মান ঐতিহাসিক হ্যারিয়েট শারনবার্গ অভিযোগ করেছেন, নাজি শাসকরা নিধনমূলক একটি যুদ্ধকে প্রথাগত যুদ্ধ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। এপি তাদের এ সুযোগ দিয়ে সহযোগিতা করেছে। গত বছরের মার্চে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে শারনবার্গ এ অভিযোগ করেন। শারনবার্গের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নাজি জার্মানিতে নিজস্ব কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এপি একটি প্রতিবেদন তৈরির উদ্যোগ নেয়। কলাম্বিয়া গ্র্যাজুয়েট স্কুল অব জার্নালিজমের সহকারী অধ্যাপক ল্যারি হাইঞ্জারলিং এ প্রতিবেদন প্রণয়ন করেন। ল্যারি একসময় এপিতে সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন। এপির দীর্ঘ পর্যালোচনাটি গত বুধবার প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নাজি জার্মানির নিরন্তর চাপ সত্তে¡ও এপি নিজের স্বাধীনতা বজায় রাখার উদ্যোগ নিয়েছিল। এপির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও এক্সিকিউটিভ এডিটর স্যালি বাজবি এক বিবৃতিতে বলেছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণের আগের সহিংস ও মর্মান্তিক সময়কালে নাজি সরকারের উচ্চাভিলাষ ও নৃশংসতা সম্পর্কে পৃথিবীকে অবহিত রাখার স্বার্থে জার্মানিতে নিজের প্রবেশাধিকার বজায় রাখতে এপি একটি সচেতন সিদ্ধান্তনিয়েছিল। আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি এপি কিছু স্বীকারোক্তিও দিয়েছে। ১৯৩৩ সালে ক্ষমতায় আসার পর নাজি সরকার স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের ওপর দমন-পীড়ন চালায়। কিন্তু এপি তার পরও জার্মানিতে কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। ১৯৪১ সালের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বযুদ্ধে অংশ নেয়ার আগ পর্যন্তএপি জার্মানি থেকে সংবাদ ও ছবি পরিবেশন করেছে। নিজেদের প্রতিবেদনে এপি স্বীকার করেছে, আপস অথবা শর্ত ছাড়া জার্মানিতে ওই প্রবেশাধিকার মেলেনি। ১৯৩৫ সালে নাজি সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী এপি ছয়জন কর্মীকে বরখাস্ত অথবা অন্যত্র স্থানান্তর করেছিল। জার্মান সরকার ওইসব কর্মীকে ইহুদি বিবেচনা করায় এ সিদ্ধান্তনেয়া হয় বলে এপির পর্যালোচনায় জানানো হয়েছে। এপির ভাষায়, ‘কঠিন সিদ্ধান্তটি নিতে হয়েছিল। কারণ জার্মানিতে এপির অবস্থান এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করা জরুরি ছিল। এপির বিবৃতিতে বলা হয়, এপির জার্মান ফটো সার্ভিস জার্মান প্রচার মাধ্যমে ছবি সরবরাহ করত। হিটলারের প্রোপাগান্ডা মন্ত্রণালয়ের অধীনে কাজ করত এ সার্ভিস। কর্মীরা সবসময় সরকারি কর্মকর্তাদের চাপের মুখোমুখি হতো। এক্ষেত্রে কেউ কেউ হয়তো অন্যদের চেয়ে বেশি চাপ মোকাবেলা করতে পারত। নাজি আমলে এপির জার্মান ফটোগ্রাফারদের মধ্যে একজন ছিলেন ফ্রাঞ্জ রথ। নিজেদের পর্যালোচনায় সংস্থাটি স্বীকার করেছে, ফ্রাঞ্জ ছিলেন কট্টর নাজি। প্রতিবেদনে জানা যায়, ১৯৪২ সাল শুরুর পর থেকে জার্মান কর্তৃপক্ষ জার্মানি ও জার্মান নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো থেকে এপির লন্ডন ও নিউইয়র্ক অফিসে ছবি পাঠাত। বিনিময়ে জার্মান কর্তৃপক্ষকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এপির সংগৃহীত ছবি দেয়া হতো। মার্কিন কর্মকর্তারাও জার্মানির সঙ্গে এপির এ বন্দোবস্ত অনুমোদন করেছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, এমন বিনিময়ের কারণে নাজি সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হতো। কিন্তু এপির বিশ্বাস,ওই ছবিগুলো মার্কিন নাগরিকদের সামনে যুদ্ধের আরো পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরেছিল। নিউইয়র্ক টাইমস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জার্মান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ