পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. আকবর আলী খান বলেছেন, সিদ্ধান্তহীনতা বাংলাদেশের প্রশাসনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। গতকাল যমুনা টেলিভিশনের ‘চলতে চলতে’ নামক এক টকশো অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আমি সিভিল প্রশাসন সম্পর্কে একটি বই লিখেছি সেখানেও বর্তমান সিভিল প্রশাসন সম্পর্কে অনেক কথাই বলা আছে। আমার চোখে বর্তমান সিভিল প্রশাসনের সর্বোচ্চ যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা যথাযোগ্য মর্যাদা পাচ্ছেন না। প্রশাসনের যে সাধারণ আইনকানুনগুলি আছে সেগুলিও মেনে চলা হচ্ছে না। প্রশাসনের একটি অতিসাধারণ নিয়ম হলো যে, সরকার থেকে কত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত দেওয়া যায়। কিন্তু বর্তমান প্রশাসন এই জায়গায় এখনো দুর্বল। এই সমস্যা সমাধানে কোনো এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগই নেওয়া হচ্ছে না। যার ফলে এই সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। তাই আমার মতে কোনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই সমস্যা সমাধানে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া এগিয়ে আসা।
আকবর আলী খান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে শেখ হাসিনা, বেগম খালেদা জিয়াসহ সবার সাথে কাজ করেছেন। এদের ভিতরে দ্রæততম সিদ্ধান্ত দানে কাকে আপনি এগিয়ে রাখবেন? জবাবে তিনি বলেন, যখন আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হতো তখন তারা সবাই অতি দ্রæত সিদ্ধান্ত দিতেন, তাতে কোনো অসুবিধা নাই। কিন্তু অসুবিধা হলো যে, নৈর্বাক্তিক যে প্রশাসন আছে, সেই প্রশাসন কাজ করছে না। তাই আমার মতে এটার মধ্যে অনেক গতি আনা দরকার।
অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, আমাকে ১৯৭১ সালে প্রমোশন দিয়ে প্রথম সিলেটে ডেপুটি কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ দেয়ার পরে আমাকে সর্বোচ্চা স্থান থেকে বলা হয়, আপনি একজন মন্ত্রীর সাথে আলাপ করে যাবেন। তার পরে আমি যখন মন্ত্রীর সাথে আলাপ করতে যাই তখন তিনি আমাকে বললেন যে, অমুক আওয়ামী লীগের ক্ষমতাবান নেতা আমার শত্রæ; তাকে কোনো সুযোগ সুবিধা দেওয়া যাবে না। তবে আমার লোকগুলোকে আপনাকে দেখে রাখতে হবে। এই কথা শুনে আমার মন এত খারাপ হয়ে গেলো। যে মুক্তিযুদ্ধ করে আমি এখন এক দলের পক্ষের ঠেলা ঠেলি করতে যাবো। এটা কোনো মতেই হতে পারে না। সেই জন্যই আমি সিলেটে যাইনি ডেপুটি কমিশনার হিসেবে।
এই বিষয়গুলো কি বঙ্গবন্ধু জানতেন না? উপস্থাপকের এমন প্রশ্নের জবাবে আকবর আলী খান বললেন, তিনি তখন দেশে ছিলেন না। তাই তিনি এসব জানতেন না। তবে তিনি হয়তো জানতে চেয়েছিলেন যে, আমি কেনো চলে যাচ্ছি। তখন তাকে বলা হচ্ছিল যে, সে হয়তো এখন কিছুটা বিমর্ষ। তিনি হয়তো পরবর্তীতে ভাল সরকারি কর্মচারি হবেন। এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু ওই নোটের মধ্যে লিখলেন যে, বাংলাদেশের জন্য তার প্রয়োজন তাই তাকে ফিরে আসতে হবে। তার পরে তিনি প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে লিয়নে শিক্ষকতা করতে দেন। এর আগে কাউকে দেওয়া হয়নি।
স্যার আপনি তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টাও ছিলেন কিন্তু সেখান থেকে কেনো পদত্যাগ করলেন? জবাবে আকবর আলী খান বলেন, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের প্রথম এবং প্রধান কাজ হলো একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন করা। কিন্তু আমরা প্রথম থেকেই দেখতে পাই, নির্বাচনকে নিয়ে প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন সাহেব পক্ষপাতিত্ব শুর করলেন। তিনি কোনো ভাবেই অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে আসছিলেন না। তার পরেও আমরা অনেক রকমের চেষ্টা করে নিশ্চিত হলাম যে, তিনি একটা সুষ্ঠু এবং সঠিক নির্বাচন করবেন না। তখন আমরা ভাবলাম যে, এই নির্বাচনের অংশীদার হিসেবে আমাদের সরকারে থাকা ঠিক হবে না। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, একবার আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে, যারা সর্বোচ্চ পদে কর্মরত আছেন তাদের নিয়ে একটি কমিটি হবে। কিন্তু পরে তিনি সেই সিদ্ধান্তও অস্বীকার করলেন, কমিটি করতে দিলেন না। তখনই আমরা বুঝে নিলাম যে, আসলে তার নিজেরও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নাই। বাইরে থেকে তার ওপরে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ তিনি অন্য কোনো জায়গা থেকে প্রভাবিত হচ্ছেন। তাই আমি ওখান থেকে নিজে থেকেই সরে গেলাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।