Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ভাঙন রোধে নেই সঠিক নির্দেশনা

| প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দ্রæত ব্যবস্থা না নিলে বিলীন হবে অ্যাপ্রোচ সড়কও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় ভাঙন রোধে নেই সঠিক নির্দেশনা
জাহাঙ্গীর ভ‚ইয়া, আরিচা থেকে : পদ্মার ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। নদী ভাঙন অব্যাহত থাকলে যে কোন সময় উক্ত ফেরি ঘাট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। বিগত কয়েকদিনে অব্যাহত ভাঙনে বিস্তীর্ণ এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আগে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি সার্ভিস বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন সংশ্লিষ্টরা। এতে এবার ঈদের সময় নির্বিঘেœ বাড়ি ফেরা অনিশ্চিত বলে চিন্তিত দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা। নদীতে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি, নদী ভাঙন এবং এপ্রোচ রাস্তা নির্মাণ না করায় ফেরি সার্ভিস ঠিক রাখা কঠিণ হয়ে পড়েছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, পদ্মায় হঠাৎ করে অসাস্বাভাবিক মাত্রায় পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকায় ফের ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। বিশেষ করে দৌলতদিয়া ৩ ও ৪ নং ফেরি ঘাট এলাকায় ভাঙন রোধে কোন ব্যাবস্থা না নেওয়ায় যে কোন সময় ঘাট দু’টি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যে ২  ও ৩ নং ঘাটের মাঝে এবং ৪নং ঘাটের পূর্বপার্শ্বে নীচের অনেকাংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। ফেরি ঘাট সংলগ্ন একটি মসর্জিদ ঘরও নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এমতাবস্থায় আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন ঘাট কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। জানা গেছে, রাজধানী ঢাকার সাথে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৬টি জেলা এবং পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাথে সড়ক পথে সহজ যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট। এখান দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী ও মালামালবাহী যানবাহন চালাচল করে থাকে। এ রুটে ফেরি সার্ভিস ঠিক রাখতে পাটুরিয়ায় লঞ্চ ঘাটসহ ৫টি এবং দৌলতদিয়ায় ৪টি ফেরি ঘাট রয়েছে। এসব ফেরি ঘাট নির্মাণ এবং রক্ষাণা-বেক্ষণের  দায়িত্বে রয়েছে বিআইডবিøউটিএ’র প্রকৌশল বিভাগ। গতবছর বর্ষা মৌসুমে পদ্মা নদীর অস্বাভাবিক ঘূর্ণন ও প্রবল স্রোতে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট এলাকাটি সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বিআইডবিøউটিএ তাৎক্ষণিক ব্যাবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আপ্রাণ চেষ্টা করে ফেরি ঘাটগুলো নতুনভাবে নির্মাণ করে ফেরি সার্ভিস চালু রাখে। এবারও উক্ত ফেরি ঘাট এলাকায় আবার নতুন করে নদী ভাঙন দেখা দিয়ছে। সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়ার ৩ ও ৪ নং দু’টি ঘাট লঞ্চ ঘাট সংলগ্ন এলাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। ফলে এবার ভাঙন প্রতিরোধে বিআইডবিøউটিএ ২নং ফেরি ঘাটের ওপরে লঞ্চ ঘাটের দিকে প্রটেকশন কাজ শুরু করেছে যা বর্তমানে চলমান রয়েছে। যে কারণে ২ নং ঘাটের নীচ থেকে ৪ নং ঘাট পর্যন্ত এবছর কোন প্রটেকশন বা নতুন ঘাট নির্মাণের কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। গত তিন দিনে প্রায় ৪ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ২ নং ঘাটের নীচের দিকে এবং ৪ নং ফেরি ঘাট এলাকায় ব্যাপক নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ভাঙন রোধে কারা কাজ করবে তার কোন সঠিক নির্দেশনা নেই। অতিদ্রæত ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে ঘাট এলাকার এপ্রোচ রাস্তাসহ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। গতবার পানি উন্নয়ন বোর্ড জিও ব্যাগ ফেলে কিছুটা প্রটেকশনে’র কাজ করছে। কিন্তু এবছর সেগুলো পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে নদী গর্ভে বিলীন হতে চলেছে। এদিকে ৩ ও ৪নং ফেরি ঘাট দু’টি লঞ্চ ঘাট সংলগ্ন এলাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত থাকলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাস্তা নির্মাণ না করায় স্থান্তর করা সম্ভব হয়নি। এমতবাস্থায় যে কোন মহুর্তে ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যোগাযোগ ব্যাবস্থায় বিপর্যয় নেমে আসবে। অপরদিকে পাটুরিয়া ফেরি ঘাট এলাকাতেও নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ৫ নং ফেরি ঘাট এলাকাটি হুমকির সন্মুখীন হয়ে পড়েছে। দ্রæত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিআইডবিøউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন পাঠান বলেন, গত বছরই দৌলতদিয়ার ৩ ও ৪ নং ফেরি ঘাট, লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকায় স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সড়ক ও জনপথ বিভাগ এপ্রোচ রাস্তা নির্মাণ না করায় আমরা ঘাট স্থানান্তর করতে পারছিনা। এ বছর স্থানান্তরের কোন সম্ভাবনা নেই বলে তিনি জনানা। তাই জরুরী ভিত্তিতে উক্ত ঘাটগুলো প্রটেকশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার বলে তিনি মনে করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাটুরিয়া

১৫ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ