Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পদ্মা সেতুর সাথে খুলনার সরাসরি রেল রুট হচ্ছে না

| প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম


এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসীর স্বপ্নের পদ্মা সেতুর সাথে বিভাগীয় শহর খুলনার সরাসরি রেল সংযোগ হচ্ছে না! ফলে খুলনাঞ্চলের শিল্প বিকল্প, রাজধানীর সাথে সহজ ও সুলভ যোগাযোগে বাণিজ্যের নতুন দিগন্ত এবং সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের বিকাশের সম্ভাবনা ভেস্তে যেতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, পদ্মা সেতুর নকশা অনুযায়ী সেতুর নিচের অংশে রেল এবং উপরের অংশে চলবে অন্য যানবাহন। ফলে একই সময়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকেও রেল সংযোগের আওতায় আনা হবে। যেখানে রাজধানীর কমলাপুর থেকে ছাড়া ট্রেন গেন্ডারিয়া হয়ে ৩৭ কিলোমিটার দুরের মুন্সিগঞ্জের মাওয়া যাবে। সেখান থেকে মূল পদ্মা সেতু দিয়ে যাবে অন্যপ্রান্ত জাজিরায়। আর জাজিরা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ৪২কিলোমিটার এবং পরে ভাঙ্গা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত ৮৭ কিলোমিটার রেল সংযোগ দেয়া হবে। আর এতে পদ্মা সেতুর সাথে সরাসরি রেল সংযোগের বাইরেই থেকে যাবে বিভাগীয় শহর খুলনা। রাজধানীতে যেতে হলে খুলনাবাসীকে যশোর হয়ে যেতে হবে। আর মংলা বন্দরের পন্য বা মালামাল খুলনা হয়ে যশোর ঘুরে যেতে হবে ঢাকায়। এতে বাড়বে সময় ও যাতয়াত ব্যয়।
এসব বিষয়ে জানতে গতকাল রেল মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করা হলে নাম প্রকাশ না করে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানান, স্পর্শকাতর প্রকল্প তাই ডিপিপি (ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোপোজাল) পরিবর্তন করা কঠিন। কোনভাবে ডিপিপি পরিবর্তন করতে চাইলে দু’দেশের মধ্যে পুনরায় আলোচনা হতে হবে।
সূত্রটি জানান, কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া স্টেশন পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রেল লাইনে হবে প্রথম কাজ। পুরো কাজের জন্য গত বছরের ৮ আগস্ট চীনের সরকারী কোম্পানি চায়না রেলওয়ে গ্রæপ লিমিটেডের সঙ্গে স্বাক্ষর হয়েছে চুক্তি। প্রকল্পের বাজেট প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এরমধ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ সরকার আর বাকি ২৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেবে চীন। ঋণচুক্তি এখনো হয়নি, তাই শুরু করা যাচ্ছে না কাজ। ফলে সেতু উদ্বোধনের দিনই পুরো রেল লাইন চালুর পরিকল্পনায়ও আনতে হচ্ছে পরিবর্তন।
মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, কাগজে-কলমে প্রকল্প শুরু ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। তবে চীনের সঙ্গে ঋণচুক্তি না হওয়ায় এখনো শুরু করা যায়নি পদ্মা বহুমুখী সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ। চলতি মাসেই দু’দেশের মধ্যে এ চুক্তি সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়ের সুত্র। তবে সেতু উদ্বোধনের দিনই রেল চলাচল শুরু করার যে পরিকল্পনা ছিলো, যথাসময়ে কাজ শুরু না হওয়ায় তা এখন অনেকটাই কঠিন হবে। নানা প্রাকৃতিক ও কারিগরি জটিলতা। তবু নদীতে চলছে পদ্মা সেতুর কাজ। ২০১৫ সালের শেষের দিকে শুরু, আর ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এ কাজ শেষ হওয়ার কথা।
রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক জানান, “আশা করি, মে মাসেই চুক্তিটা আমরা করতে পারবো। যে লক্ষ্য আমরা নির্ধারণ করেছি এর মধ্যেই এই প্রকল্পটি আংশিক অর্থাৎ ভাঙ্গা থেকে পদ্ম সেতুর এপার পর্যন্ত আমরা যদি শেষ করতে পারি তাহলেও অন্তত পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে।”
পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, “তাদের (রেল মন্ত্রণালয়ের) টার্গেট ছিলো আমাদের সাথেই শুরু করার। তবে এটা কঠিন হবে তাদের জন্য, যেহেতু মূল কাজ শুরু হয়নি।”
প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টরা জানান, চীন সরকারের সাথে চুক্তির বিষয়টি দীর্ঘ দেড় বছর ধরে ঝুলে থাকায় কাজে হাত দেয়া যায়নি এখনো। আর তাই পদ্মা সেতু চালুর প্রথম দিনেই পুরো রেল সংযোগ চালুর বিষয়টি থেকে আপাতত কিছুটা সরে আসতে হচ্ছে মন্ত্রণালয়কে। তবে চলতি মাসেই ঋণচুক্তি সম্পন্ন হলে দেরিতে হলেও রেলে চড়ার সুযোগ পাবেন দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী। তবে সরাসরি রেল সংযোগের বাইরেই থাকলে খুলনাবাসী।##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা সেতু

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৬ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ