Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বুড়ি তিস্তার অবৈধ দখল মুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীসহ পানি সম্পদমন্ত্রীকে চিঠি উলিপুর পৌর মেয়রের

| প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : তিস্তার প্রবেশ মুখ থেতরাই সুইচ গেট থেকে উলিপুর গুনাইগাছ ব্রিজ-ব্রহ্মপুত্র নদী পর্যন্ত বুড়ি তিস্তার নদীর অবৈধ দখল উচ্ছেদে প্রধানমন্ত্রী, পানি সম্পদমন্ত্রী, সচিব এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজিকে চিঠি দিয়েছে উলিপুর পৌরসভার মেয়র তারিক আবুল আলা চৌধুরী।
গতকাল রোববার উলিপুর পৌরসভার মেয়র তারিক আবুল আলা চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় ব্রিটিশ আমল থেকে তিস্তা নদীর প্রবেশ মুখ থেতরাই (পুরাতন সøুুইচ গেট) থেকে শুরু করে দলদলিয়ার অর্জুন, ঘাটিয়ালপাড়া, উলিপুর পৌরসভার নারিকেল বাড়ি ভায়া হয়ে গুণাইগাছ ব্রিজ তবকপুর-বজরা-চিলমারী ব্রহ্মপুত্র নদে প্রবাহিত হয় বুড়ি তিস্তা। ব্রিটিশ আমলে থেতরাই বন্দর থেকে বড় বড় নৌকা বুড়ি তিস্তা দিয়ে চলাচল করত। ব্যবসায়ীরা ধান, চাল, পাটবোঝাই নৌকা গুণাইগাছ ব্রিজের কাছে আটকে রেখে উলিপুরে ব্যবসা করত। আবার অনেক ব্যবসায়ী ধান, চাল, পাটবোঝাই নৌকা নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদী দিয়ে জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীতে ব্যবসা করতে যেত। এছাড়া আদিকাল থেকে বুড়ি তিস্তা নদীতে হাজার হাজার কৃষক সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দিতেন। এ বুড়ি তিস্তা নদীতে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ ও জেলেরা মাছ ধরতেন। বুড়ি তিস্তা নদীর দুই পাড়ের কৃষকরা শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তুলে ইরি-আমনসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করত। পরে বুড়ি তিস্তা নদী রক্ষায় ১৯৭৭ সালে থেতরাই সøুইচ গেইট থেকে উলিপুর গুণাইগাছ ব্রিজ পর্যন্ত খনন প্রকল্প নেয়া হয়। ওই সময় নদীর দুই ধারের জমির মালিকদেরকে সরকার কোটি কোটি টাকা দিয়ে জমি খনন করে। সেই জমির মালিকগণ সরকারি টাকা নেয়ার পরেও জমি বাদেও অবৈধভাবে বুড়ি তিস্তা দখল করে চাষাবাদ করে আসছে। তাদের অবৈধ দখলের কারণে থেতরাই থেকে উলিপুর গুণাইগাছ ব্রিজ ভায়া হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের প্রবাহ পথ বন্ধ থাকায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। অল্প বৃষ্টি হলে উলিপুর উপজেলার বিশাল একটি অংশ পানিতে তলিয়ে যায়। অথচ সরকার কোটি কোটি টাকা বুড়ি তিস্তা নদীর সংস্কারের জন্য ব্যয় করেছে। ১৯৯৩ সালে তিস্তা তীব্র ভাঙ্গনে থেতরাই পুরাতন সøুইচ গেইটটি বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে আবারো ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বুড়ি তিস্তা খননে নতুন প্রকল্প চালু করে। এর পরে ২০০২ সালে আবারো একটি প্রকল্প চালু করা হয়। কিন্তু পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিছু কর্মকর্তার কারণে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু দুঃখের বিষয় বুড়ি তিস্তা নদীর সেই ঐতিহ্য আর নাই। থেতরাই থেকে গুণাইগাছ ব্রিজ পর্যন্ত বুড়ি তিস্তা নদী অবৈধ দখলে থাকার কারণে এলাকার হাজার হাজার কৃষক তার পাট জাগ দিতে পারছেন না, জেলেরা মাছ ধরতে পারছেন না, সাধারণ মানুষ গোসল করতে পারছেন না এবং কৃষক পানি নিয়ে ইরি-আমনসহ বিভিন্ন ফসল আবাদ করতে পারছেন না। বর্তমানে পানির জন্য মরুভ‚মিতে পরিণত হয়েছে। তাই তিস্তা নদীর প্রবেশ মুখ থেতরাই (পুরাতন) সুইচ গেইট থেকে উলিপুর গুণাইগাছ ব্রিজ-তবকপুর-বজরা এবং ব্রহ্মপুত্র মুখপর্যন্ত বুড়ি তিস্তার নদী অবৈধ দখল উদ্ধার ও খননের প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা প্রদানের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উলিপুর পৌরসভার মেয়র তারিক আবুল আলা চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, বুড়ি তিস্তা উদ্ধারে আমার পৌরসভার নাগরিকরা আন্দোলন করে আসছে। তাদের একটাই দাবিÑ বুড়ি তিস্তা নদী বাঁচাও, উলিপুর বাঁচাও। এর পরও জেলা প্রশাসন ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবাহী প্রকৌশলী কর্মকর্তাদের টনক নড়ছে না। এখন পর্যন্ত বিষয়টি তদন্ত করে নাই। আমি সরেজমিন তদন্ত ও নদী পুনঃখননের দাবি করছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেয়র


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ