নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসর বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা সাফল্য কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট। ২০১৫ বিশ্বকাপে তা অর্জিত হয়েছে মাশরাফির নেতৃত্বে। আইসিসির শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশ দল র্যাঙ্কিংয়ের কঠিন সমীকরণ মিলিয়ে এ বছরের জুনে অনুষ্ঠেয় আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে মাশরাফির নেতৃত্বেই। ১১ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে ক্রিকেটে বিস্ময়কর উন্নতির গ্রাফে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেয়া মাশরাফিকে ঘিরে এবার আবর্তিত হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দারুণ কিছুর স্বপ্ন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে ইংল্যান্ডের সাসেক্সে ১০ দিনের অনুশীলন এবং আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় ওয়ানডে টুর্নামেন্ট থেকে আত্মবিশ্বাসের রসদ নিতে চান বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়ক। আজ দিবাগত রাতে (রাত ১টা) ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ছে বাংলাদেশ দল। ইংল্যান্ড যাত্রার আগে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি মিডিয়াকে সে লক্ষ্যের কথাই জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনের নির্বাচিত অংশ পাঠকের সামনে উপস্থাপন করছেন শামীম চৌধুরী
সফরের তিনটি ধাপ, সাসেক্সে অনুশীলন, আয়ারল্যান্ড সফর এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি?
মাশরাফি : ক্যাম্পটা তো প্রস্তুতির জন্য। আয়ারল্যান্ডে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ বলতে পারেন। সেখান থেকে (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির) উইকেট কতটা আলাদা হবে, তা বলা যাচ্ছে না। আয়ারল্যান্ডে এখন শীত মৌসুম। আর ইংল্যান্ডে মাত্র গ্রীষ্ম শুরু হয়েছে। সুতরাং দুই রকম আবহাওয়ায় উইকেটের আচরণ দুইরকম হতে পারে। ১০-১২ দিনের ক্যাম্পটা আমাদের খুব কাজে লাগবে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে কয়েকটা প্রস্তুতি ম্যাচ এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচ পাবো। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচের আগে আত্মবিশ্বাসটা ঠিকঠাক রাখতে পারি, তাহলে ভালোই হবে।
বাস্তবসম্মতভাবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ দল কী আশা করছে?
মাশরাফি : বাস্তবতার দৃষ্টিতে খুব কঠিন সফর হতে যাচ্ছে। প্রতিপক্ষ যারা আছে, তাদের দিকে তাকালে মনে হয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আমাদের জন্য সহজ হবে না। আমরা ওই কন্ডিশনে ইংল্যান্ডকে দুইবার হারিয়েছি। কার্ডিফে একবার অস্ট্রেলিয়াকেও হারিয়েছি। আমার কাছে এখনো মনে হয় এটা সম্ভব। আমরা কিভাবে মানসিক প্রস্তুতি নেবো, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। এখন যেহেতু গ্রীস্ম সবেমাত্র শুরু হয়েছে, তাই এ সময় ইংল্যান্ডের আবহাওয়া দ্রুত পরিবর্তন হবে। এটাও মাথায় রাখতে হবে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে আমরা যেমন চেয়েছিলাম, তেমনই হয়েছে। কিন্তু নিউজিল্যান্ড সফরকে সামনে রেখে ক্যাম্প ছিল। তারপরও ওই সিরিজে ব্যর্থ হয়েছি।
আয়ারল্যান্ডের সিরিজকে কী চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রস্তুতি হিসেবে নিচ্ছেন? না ওই সিরিজে জেতার লক্ষ্য?
মাশরাফি : অবশ্যই জেতার লক্ষ্য থাকবে। অনেক হিসাব-নিকাশের ব্যাপার আছে। ওই সফরে জিততে পারলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভালো কিছুর সুযোগ তৈরি হবে। না পারলে আমাদের উপর চাপ বেড়ে যাবে। কারণ, মানসিক প্রস্তুতিটা ভালো না হলে সবকিছুই কঠিন হয়ে যাবে। ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে তো ফাইনাল নাই, তাই ফেভারিটের প্রশ্ন আসছে না। র্যাঙ্কিংয়ের দিক থেকেও এই সফরটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতির আগে কিছু অনুশীলন ম্যাচ হেরে গিয়েও বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনাল খেলেছে? এবার বাংলাদেশ কতো দূর যেতে পারে?
মাশরাফি : বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে জেতা বড় ব্যাপার ছিল না। আত্মবিশ্বাসটাই ছিল বড় ব্যাপার। গত বিশ্বকাপে আমরা একটা ম্যাচ জিতেছিলাম (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে) খুব গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জেতার পর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় আমাদের। আইসিসির টুর্নামেন্টগুলোতে সাধারণত ২৫০ থেকে ৩৫০-এর উইকেট দেয়া হয়। আমরা যদি মানসিকভাবে প্রস্তুত হয়ে শুরুটা ভালো করতে পারি, তাহলে অনেক কিছুই হতে পারে। তবে আমরা এমন একটা গ্রæপে পড়েছি, যে গ্রæপ থেকে আমরা কতোদূর যাবো, তা আগেভাগে বলা যাচ্ছে না। কঠিন, তবে ভালো করা অসম্ভব নয়।
প্রতিপক্ষ বিবেচনায় আপনার ব্যক্তিগত এবং দলের চাওয়া কী?
মাশরাফি : ২০-২৫ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে আমরা চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছি, এত বড় কিছু আশা করা ঠিক হবে না। এখানে মানসিক যুদ্ধটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। বড় বড় দলের বিপক্ষে তাদের কন্ডিশনে খেলা, কাজটা সহজ হবে না। ওরা যতটা সহজে পারবে, কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিয়ে প্রতিপক্ষদের চেয়ে দুই গুণ বেশি কষ্ট করতে হবে।
ওয়ানডতে গত কয়েকটা সিরিজে বাংলাদেশের সফলতা কমে এসেছে। টি-টোয়েন্টি অবসরের পর কী ভাবছেন?
মাশরাফি : আফগানিস্তানের বিপক্ষে যে ম্যাচটা আমরা হেরেছিলাম, তা ছিল অপ্রত্যাশিত। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেও হেরেছি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটা কষ্টদায়ক ছিল। বিশেষ করে প্রথম ম্যাচে হারের পরে। শ্রীলঙ্কায় তৃতীয় ওয়ানডেটা আমাদের জেতা উচিত ছিল। নিউজিল্যন্ড থেকে আমরা আলাদা একটা চ্যালেঞ্জে ঢুকেছি। হোমের সঙ্গে অ্যাওয়েতে আমাদের পারফর্ম হয়তোবা আকাশ-পাতাল ব্যবধান। অ্যাওয়েতে জেতা কতটা কঠিন, তা ক্রিকেট বিশ্লেষকরা ভালো বলতে পারবেন। অন্যান্য প্রতিষ্ঠিত দলগুলো কিন্তু অ্যাওয়ে ম্যাচ বেশির ভাগই হারে। আমার বিশ্বাস, এই টিম অ্যাওয়ে ম্যাচে অন্য দলের চেয়ে অনেক দ্রুত সফল হবে।
টি-টোয়েন্টি ছাড়ার পর এখন শুধু ওয়ানডে, অধিনায়ক হিসেবে লক্ষ্যটা এখন কী ?
মাশরাফি : আমাকে এক সময় সরে যেতে হবে, অধিনায়ক হিসেবে আলাদা করে তেমন কোনো লক্ষ্য নেই। এখান থেকে আলাদা করে চাপ নেয়ার কিছু নেই।
সাধারণত লম্বা সফরে এক সময়ে এসে অবসাদ, ক্লান্তি দেখা যায়? অবসাদ কাটানোর জন্য বিশেষ কোনো পরিকল্পনা কী আছে?
মাশরাফি : এত বড় সফর এটাই প্রথম নয়। অতীত বলে, শেষের দিকে অবসাদে ভুগেছি। এমন হয়েছে, একটা সেশন খুব ভালো খেলে পরের সেশনটা খুব খারাপ হয়েছে। তবে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে লম্বা সফরে কিন্তু আমরা পুরো টুর্নামেন্ট ভালো খেলতে পেরেছিলাম। জয়ের ভেতরে ছিলাম, পয়েন্ট টেবিলে সবসময় এমন একটা অবস্থায় ছিলামÑ যাতে ভালো জায়গায় যেতে পারি, এমন অবস্থানে ছিলাম। তাই ক্লান্তি আসেনি। এবার শুরুতে ক্লান্তি ব্যাপারটা দূর করতে পারে। দলে এক সঙ্গে ১৭-১৮ জনের সবাইকে এক সঙ্গে রাখা, বিশেষ করে যাদের খারাপ সময় যাবে তাদেরকে এক করে রাখাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের মতো থাকতে হবে।
মানসিক প্রস্তুতিটা কিভাবে নিতে চান?
মাশরাফি : শ্রীলঙ্কার সফরে প্রস্তুতি ম্যাচে আমরা সাড়ে তিন শ’ চেজ প্রায় করে ফেলেছিলাম। অথচ, একই রকম উইকেটে মূল ম্যাচে আমরা ২৮০ রান তাড়া করতে পারিনি। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় বা তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে এক উইকেটে এক শ’ রান করার পর আমাদের ইনিংসে ধস নেমেছে। তাই কিছু জায়গায় আমাদের আরও দৃঢ় হতে হবে। ২৮০/২৯০ রান আমাদের ইংল্যান্ডে করতেই হবে, বা চেজ করতে হবে।
এবার তো পাঁচ পেস বোলার নিয়ে যাচ্ছেন? বোলিং কম্বিনেশন কেমন হবে?
মাশরাফি : পাঁচ জন পেস বোলারের সঙ্গে সাকিব আছে, মিরাজ আছে। রিয়াদও এখন দারুণ বোলিং করা শুরু করেছে, যদিও টি-টোয়েন্টিতে। মূল বোলার সবাই ভালো করছে। ওখানে যাওয়ার পর দেখা যাবে উইকেট কেমন হবে। তবে ম্যাচে তিন জন পেসার খেলার সম্ভাবনাই বেশি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।