২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ওষুধের পার্শ¦ প্রতিক্রিয়ায় শরীরসহ মুখে নানাবিধ সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় এসব তথ্য না জানার কারণে রোগী দুশ্চিন্তার মধ্যে জীবনযাপন করতে থাকে। তাই এ বিষয়ে আমাদের সবার স্ব”ছ ধারণা ধাকা একান্ত জরুরি। শুষ্ক মুখ ওষুধের সাথে সম্পৃক্ত সচরাচর পরিলক্ষিত একটি সমস্যা। যারা একসাথে অনেকগুলো ওষুধ সেবন করেন তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এছাড়া ধূমপান, অ্যালকোহল সেবন এবং দীর্ঘমেয়াদে ক্যাফেইনসমৃদ্ধ পানীয় পান করার কারণে শুষ্ক মুখের সৃষ্টি হতে পারে। বিষণœœতানাশক ওষুধ, অ্যান্টিসাইকোটিকস্, উ”চরক্তচাপ নিরোধক ওষুধ, অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিকোলিনারজিক এবং ডিকনজেসট্যান্টস জাতীয় ওষুধের কারণে শুষ্ক মুখ হতে পারে। শুষ্ক মুখের কারণে লালার প্রবাহ কমে য়ায়। লালার প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে দন্ত ক্ষয়ের সৃষ্টি হতে পারে এবং রোগী খাবারের যথাযথ স্বাদ নাও পেতে পারে।
মুখের ফুলাভাব :Ñ পেনিসিলিন, এসপিরিন, সালফারযুক্ত ওষুধ এবং অঈঊ ইনহিবিটর জাতীয় ওষুধের কারণে মুখে ফুলাভাব দেখা দিতে পারে।
মুখের আলসার এবং মিউকোসাইটিস :Ñ অ্যান্টিনিওপ্লাসটিকস্ যেমন মিথোটিক্সেট, ডেক্সোরুবিসিন ও মেলফালান জাতীয় ওষুধ, বারবিচুরেটস্, ড্যাপসোন, সালফোনেমাইডস্, টেট্রাসাইক্লিন, স্টেরয়েডবিহীন প্রদাহ বিনাশকারী ওষুধ, মিথাইল ডোপা, পেনিসিলামাইন, ফিনাইলবুটাজন, প্রোপানলল, স্পাইরনোল্যাকটোন, থিয়াজাইডস, টলবিউটামাইড, ক্যাপটোপ্রিল, ফিনাইটয়েন এবং (সরাসরি সংযোগে এসপিরিন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, ফেনল) জাতীয় ওষুধের কারণে মুখের অভ্যন্তরে আলসার অথবা মিউকাস মেমব্রেনের প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া দেখা দিতে পারে। তাই আপনি দীর্ঘমেয়াদে কোনো ওষুধ সেবন করলে মাঝে মাঝে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। ওষুধজনিত কারণে লাইকেন প্ল্যানাস, ইরাইথিমা মাল্টিফর্ম, পেমফিগয়েড, পেমফিগাস, লুপাস ইরাইথিমেটোসাস জাতীয় সমস্যা মুখের অভ্যন্তরে দেখা দিতে পারে।
লাইকেন প্ল্যানাস সদৃশ্য লাইকেনয়েড রিঅ্যাকশন :Ñ স্টেরয়েডবিহীন প্রদাহ বিনাশকারী ওষুধ, অ্যান্টি এলকোহলিজম (সায়নামাইড), অ্যান্টিবায়োটিকস্ (অ্যামাইনো স্যালিসাইলেট সোডিয়াম, আইসোনিয়াজিড, রিফ্যামপিছিন, স্ট্রেপটোমাইসিন, টেট্রাসাইক্লিন), অ্যান্টিকনভালসেন্টস (কার্বামাজেপেইন, অক্সাকার্বামাজেপেইন, ফিনাইটয়েন, ভালপরেট), অ্যান্টিডায়াবেটিকস (ক্লোরপ্রোপামাইড, গিøপিজাইড, ইনসুলিন, টলবিউটামাইড), অ্যান্টিফাঙ্গালস (এম্ফোটেরিসিন, কেটোকোনাজল), এন্টিহিস্টামিনস (সিনারজিন), উ”চরক্তচাপ নিরোধক ওষুধ (অ্যাটিনলল, ক্যাপটোপ্রিল, মিথাইলডোপা, প্রোপানলল, স্পাইরনোল্যাকটোন), ক্যালসিয়াম চ্যানেল বøকার, ডাইয়্যুরেটিকস্, ইত্যাদি ওষুধ সেবনের পার্শ¦প্রতিক্রিয়া হিসেবে মুখের অভ্যন্তরে লাইকেনয়েড রিঅ্যাকশন দেখা দিতে পারে, যা দেখতে লাইকেন প্ল্যানাসের মতো দেখা যায়।
ইরাইথিমা মাল্টিফর্ম লাইক রিঅ্যাকশন :Ñ অ্যান্টিবায়োটিকস্, অ্যালোপুরিনল, বারবিচুরেটস, স্টেরয়েডবিহীন প্রদাহ বিনাশকারী ওষুধ সেবনের পার্শ¦প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরাইথিমা মাল্টিফর্ম দেখা দিতে পারে।
পেনফিগয়েড লাইক রিঅ্যাকশন :Ñ অ্যান্টিরিউম্যাটিকস্ (পেনিসিলামাইন, আইবুপ্রোফেন, ফেনাসেটিন), কার্ডিওভাসকুলার ড্রাগস (ফিউরোসিমাইড, ক্যাপটোপ্রিল, ক্লনিডাইন), অ্যান্টিবায়োটিকস্ (পেনিসিলিন, সালফোনেমাইড), অ্যান্টিমাইক্রোবায়ালস্ ইত্যাদি ওষুধ সেবনের কারণে মুখের অভ্যন্তরে পেমফিগয়েড জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পেমফিগাস জাতীয় সমস্যা :Ñ এমপিসিলিন, ক্যাপটোপ্রিল, সেফালেক্সিন, ইথামবিউটল, আইবুপ্রোফেন, পেনিসিলামাইন, ফিনাইলবুটাজন, প্রোপানলল, রিফ্যামপিছিন, থিওব্রোমিন জাতীয় ওষুধ সেবনের কারণে মুখের অভ্যন্তরে ফেমফিগাস জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে।
লুপাস ইরাইথিমেটোসাস :Ñ কার্বামাজেপেইন, গ্রাইসিওফুলভিন, মিথাইলডোপা, পেনিসিলামাইন, স্ট্রেপটোমাইসিন, আইসোনিয়াজিড, ক্লোরপ্রোমাজিন ইত্যাদি গ্রæপের ওষুধ সেবনের ফলে লুপাস ইরাইথিমেটোসাস জাতীয় সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পিগমেন্টেশন :Ñ অ্যান্টিম্যালেরিয়াল যেমন ক্লোরোকুইন, হাইড্রো ক্লোরোকুইন, বিউসালফ্যান, ক্লোফাজিমিন, সাইক্লোফসপামাইড, ইস্ট্রোজেন, কেটোকোনাজল, মিনোসাইক্লিন, ক্লোরপ্রোমাজিন এবং জিডোভুডাইন গ্রæপের ওষুধ সেবনে মুখের অভ্যন্তরে এবং জিহŸায় পিগমেন্টেশন বা দাগ পরিলক্ষিত হতে পারে।
মাড়ি বৃদ্ধি পাওয়া :Ñ ক্যালসিয়াম চ্যানেল বøকারস্ যেমন অ্যামলোডিপিন, বেপরিডিল, ডিলটিয়াজেম, ফেলোডিপিন, নিফিডিপিন এবং সাইক্লোসপরিন, ফিনাইটয়েন, সোডিয়াম ভালপোরেট গ্রæপের ওষুধ সেবন করলে মাড়ি বৃদ্ধিসহ মাড়ি ফুলে যেতে পারে।
অতএব, শরীরের যে কোনো রোগের জন্য ওষুধ দীর্ঘমেয়াদে সেবন করলে সবসময় না হলেও মাঝে মাঝে কিছু পার্শ¦প্রতিক্রিয়া মুখে ও জিহŸায় দেখা দিয়ে থাকে। আবার কখনো কখনো এই পার্শ¦প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত মারাত্মক রূপ ধারণ করে। তাই ওষুধ সেবনের বেলায় সবসময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। মুখে কোনো সমস্যা দেখা দিলে আপনার ওষুধ পরিবর্তন করা প্রয়োজন হতে পারে আবার ব্যাপক ভিত্তিতে মুখের চিকিৎসা জরুরি ভিত্তিতে করতে হতে পারে। তাই একটু সচেতন হলে এসব ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ডা. মো. ফারুক হোসেন
মুখ ও দন্তরোগ বিশেষজ্ঞ
মোবাইল : ০১৮১৭৫২১৮৯৭
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।