Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বহেড়ার অনন্য গুণ

| প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বহেড়া একটি অনন্য ঔষুধি গুণের ফল। বহেড়ার আরেক নাম বিভিতকি। তবে আমাদের দেশে বহেড়া নামেই বেশি পরিচিত। ভেষজবিদদের গবেষণায় মহৌষুধি হিসেবে পরিচিত ত্রিফলার মধ্যে বহেড়া অন্যতম।
বহেড়া ফলটি উপমহাদেশের প্রাচীনতম আয়ুর্বেদিক ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বহেড়া বিশেষভাবে পরিশোধিত হয়ে এর ফল, বীজ ও বাকল মানুষের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে ও চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে আদিকাল থেকে। ভেষজবিদদের বহেড়া নিয়ে দীর্ঘ গবেষণায় বিভিন্ন উপকারিতার কথা উল্লেখ করেছেন। বহুগুণে ভরা বহেড়া মানবদেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করে। এছাড়া বহেড়ার রয়েছে অসংখ্য ঔষুধি গুণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, প্রতিদিন খালী পেটে বহেড়া ফল ভেজানো এক কাপ পানি খেলে দীর্ঘজীবী ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া যায়।
এবার জেনে নেয়া যাক বহেড়া ফলের ঔষধিগুণগুলোÑ
# শরীরের জন্য মারাত্মক অস্বস্তিকর একটি রোগ হচ্ছে শ্বেতী রোগ। সাধারণত, এ রোগের তেমন কার্যকরি ঔষধ পাওয়া যায় না। এ রোগের জন্য বহেড়া বীচির শাঁসের তেল বের করে নিয়মিত শ্বেতীর উপর লাগালে শ্বেতী রোগ নিরাময়ে সহায়ক হয় এবং অল্পদিনেই গায়ের রঙ স্বাভাবিক হয়।
# রক্ত আমাশয় কষ্ট পেলে প্রতিদিন পানির সাথে বহেড়ার চ‚র্ণ মিশিয়ে পান করলে দ্রæত আমাশয় রোগ ভালো হয়।
# অনেকের অকালে চুল পেকে যাওয়া এটাও একটা রোগ। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য বহেড়া ফলের বীচি বাদ দিয়ে শুধু খোসা নিয়ে পানি দিয়ে ভালোভাবে মসৃণ করে বাটুন, এবার বাটা মিশ্রণটি এক কাপ পানিতে গুলে সেই পানি ছেঁকে নিয়ে মাথার চুল ধুয়ে ফেলুন। এভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে চুল পাকা বন্ধ হওয়াসহ আরো অনেক উপকার পাওয়া যায়।
# কফের সমস্যায় আধা চা চামচ বহেড়া চূর্ণ ও পরিমাণ মতো ভালো ঘি এক সাথে গরম করে তার সাথে মধু মিশিয়ে খেলে দ্রæত কফের সমস্যা দূর হয়।
# মাথায় টাক পড়লে বহেড়ার বীচির শাঁস অল্পপানিতে মিহি করে বেটে মাথার টাকে নিয়মিত লাগালেও মাথার টাক ভালো হয়ে যায়।
# শরীরের কোনাে স্থানে ফুলে গেলে বা ব্যথা হলে বহেড়ার ছাল বেটে একটু গরম করে নিয়ে ফুলো জায়গায় প্রলেপ দিলে ব্যথা ও ফুলো কমে যায়।
বহেড়া ও গাছ চেনার উপায় :Ñ
আমাদের দেশের বনাঞ্চল ও গ্রামে-গঞ্জে এই গাছের দেখা মেলে। বহেড়া গাছ ১৫-২৫ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। এর বাকল ধূসর ছাই রঙের। পাতা দেখতে কাঁঠাল পাতার মতো মোটা, স্থান ভেদে ও জায়গার ধরন বুঝে এটা প্রায় ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। এর ফুল ডিম্বাকৃতির, প্রায় ১ ইঞ্চির মতো লম্বা। কাঁচা পাকা বহেড়া ফলের রঙ সবুজ থাকে। পেকে গেলে লাল হয়। এরপর শুকিয়ে গেলে ক্রমশ এ রং বাদামি হয়ে যায়। ফলের বাইরের আবরণ মসৃণ ও শক্ত এবং ভেতরে একটিমাত্র শক্ত বীজ থাকে। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রæয়ারি মাসের ভেতর এ ফলটি বেশি পেকে থাকে।

কাজী এমএস এমরান কাদেরী।
সাংবাদিক, কলামিস্ট।
বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম।
ধসৎধহশধফবৎর@মসধরষ.পড়স



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন