পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : এশিয়ার একমাত্র মিঠা পানির প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র, হালদা রক্ষায় একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খুব শিগগির এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। গতকাল (সোমবার) চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার অফিসে আয়োজিত হালদা নদীর অনন্য বৈশিষ্ট্য রক্ষা, কাপ জাতীয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্রের পরিবেশ ব্যবস্থা সুরক্ষা, সর্বোপরি পানি প্রবাহ অক্ষুণœ ও দূষণরোধ তথা নদীর পরিবেশ সংরক্ষণবিষয়ক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা মতে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে হালদা নদীর বিষয়ে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। তার ধারাবাহিকতায় বিভাগীয় কমিশনারের উদ্যোগে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বলা হয়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র হালদা নদীতে বড় বড় ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে। কারেন্ট জালসহ ও অন্যান্য জাল দিয়ে মা-মাছ শিকার চলছে। নদীতে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। ফলে হালদা নদী তার অস্তিত্ব ও ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। নদীবিধ্বংসী এসব কর্মকান্ড বন্ধে খুব শিগগির মাঠে নামবে প্রশাসন।
বিভাগীয় কমিশনার মো. রুহুল আমীন জানান, এসব অবৈধ ড্রেজার সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থাসহ অবৈধভাবে মৎস্য নিধনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে মৎস্য অধিদফতরের আন্তরিক ভ‚মিকা প্রয়োজন। এছাড়া মা-মাছের আগমন ও ডিম ছাড়ার সময়কালে হালদা নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা-বোট চলাচলের কারণে প্রাকৃতিক এ মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্রের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। হালদা নদীতে শীঘ্রই ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচল বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হবে। এ আদেশ অমান্য করলে দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একই সাথে হালদা নদীর উন্নয়নে ভবিষ্যতে যুগোপযোগী আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। চট্টগ্রামের ব্র্যান্ডিং মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা রক্ষায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলকে এগিয়ে আসার আহŸান জানান তিনি। হালদা নদী চট্টগ্রামের জন্য ব্র্যান্ডিং। বাংলাদেশের একমাত্র জোয়ার-ভাটার নদী হালদায় কাপ জাতীয় মাছের নিষিক্ত ডিম সংগ্রহ করা হয়। নির্দিষ্ট মৌসুমে মা-মাছ এখানে ডিম ছাড়ে। এ মৌসুমেও মা-মাছ ডিম ছাড়তে শুরু করেছে এ নদীতে। এজন্য নদীটি প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে সর্বত্র পরিচিত। এ নদীটি খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার পাতাছড়ি পাহাড়ি এলাকার একটি ঝর্ণা থেকে উৎপত্তি হয়ে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান উপজেলা ও মহানগরীর চান্দগাঁও থানার কালুঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে মিশেছে।
সভায় উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা হালদা নদীর গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে হালদা চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নদী। এ নদীতে যত্রতত্রভাবে বর্জ্য ফেলা, অবৈধভাবে বালি উত্তোলন, নদীর দু’পাড়ে খোলা পায়খানা স্থাপন, নদীর পাড় দখল করে অবৈধস্থাপনা নির্মাণসহ বিভিন্ন কারণে হালদা তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। নানামুখী হুমকির কারণে হালদা থেকে মা-মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। বিমুখ হচ্ছে হালদা নির্ভর লোকজন।
দেশের উন্নয়ন ও হালদা নির্ভর লোকজনের সুবিধার্থে অবৈধ দখল-দূষণের হাত থেকে এ নদীকে রক্ষা করতে হবে। বিভাগীয় কমিশনার বিভাগীয় মো. রুহুল আমীনের সভাপতিত্বে ও বিভাগীয় পরিচালক (স্থানীয় সরকার) দীপক চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেছন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন, পরিবেশ অধিদফতর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. মাসুদ করিম, রাঙ্গামাটি জেলার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মঞ্জুরুল কিবরিয়া, ফরেস্ট্রি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, সাংবাদিক চৌধুরী ফরিদ, এলজিইডির তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী আশীষ কুমার পাল, ওয়াসার তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী মো. নুরুল আবছার প্রমুখ।
আজ আরেক দফা ডিম দিতে পারে হালদার মা-মাছ
হাটহাজারী উপজেলা সংবাদদাতা ঃ হালদা নদী থেকে গত শুক্রবার সংগৃহীত মা-মাছের ডিমগুলো সনাতন পদ্ধতিতে ক‚য়ার পানি পরিবর্তন করার মধ্যেমে ইতিমধ্যে পোনায় রূপান্তর হয়েছে। এই পোনার বর্তমানে চোখ ফুটেছে ও পোনার রক্ত চলাচলও শুরু হয়েছে বলে মৎস্য কর্মকর্তারাসহ ডিম সংগ্রহকারীরা জানিয়েছেন। আগামী বুধবার বা বৃহস্পতিবার হালদার মা মাছের পোনা বেচা কেনা শুরু হবে। ইতিমধ্যে পোনা ক্রেতারা দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্রতাদের কাছে অগ্রিম বুকিং করে রেখেছে। পোনা বেঁচা কেনার সময় হালদার পাড়ে চাঁদাবাজির আশঙ্কা করছে পোনা বিক্রেতারা।
এদিকে গত শুক্রবার রাতে মুষলধারে বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল ও মেঘের গর্জনের পর রাত আনুমানিক ১২টার সময় মিষ্টি পানির রুপসী হালদায় ডিম ছাড়ে মা-মাছ। উপজেলার মদুনাঘাট থেকে সত্তারঘাট পর্যন্ত প্রায় ২০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নৌকা, জাল, বালতি ও ডিম ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম ধরতে হালদায় নামে।
এদিকে আজ (২৫ এপ্রিল) অমবশ্যার রাত তাই হালদার মা-মাছ আরেক দফা ডিম ছাড়তে পারে বলে জানান সংগ্রহকারীরা। দ্বিতীয় দফা হালদা নদীতে মা-মাছ ডিম ছাড়ার আশায় ডিম সংগ্রহকারীরা ডিম ধরার বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।