Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চান্দিনার পৌর মেয়রের অনিয়ম দুর্নীতির তদন্তে জেলা প্রশাসন

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০২২, ১২:০০ এএম

কুমিল্লার চান্দিনায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত মেয়র শওকত হোসেন ভূইয়ার অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। কুমিল্লার চান্দিনা বাজারের ব্যবসায়ী হাজী শামীম হোসেন এলাকাবাসীর পক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে ওই মেয়রের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন বিষয়টির তদন্ত করছে। এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, চান্দিনা মেয়রের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগে দাবি করা হয়, মেয়র ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে নিয়মিত অর্থ আত্মসাত করে যাচ্ছেন। এরমধ্যে ড্রেন পরিষ্কার, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার, ক্ষুদ্র মেরামত, কম্পিউটার মেরামত, কোভিড সুরক্ষা সামগ্রী ক্রয়, মশক নিধন, পানির লাইন মেরামতসহ নানা কার্যক্রমে পৌরসভার ইস্যুকৃত চেক এবং বিল ভাইচার যাচাই করলেই মেয়রের অর্থ আত্মসাতের চিত্র বেড়িয়ে আসবে এবং গত অর্থ বছরে ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প এবং ৭০ লাখ টাকার এডিবি প্রকল্প থেকে তিনি মোটা অংকের কমিশন নিয়েছেন। যার ফলে এ পৌরসভায় প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে।

মাস্টার রোলের মাধ্যমে প্রতিদিন কাগজে কলমে ২০-২৫ জন কর্মচারী কাজ করলেও বাস্তবে তা অনেক কম এবং টিকাদান সুপারভাইজার মো. ওয়াদুদের মাধ্যমে মাস্টার রুল প্রকল্প থেকে মেয়র মাসে ৩০ হাজার টাকা করে কমিশন নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করা হয়। তাছাড়া ছায়কোট হতে তুলাতুলী রাস্তা, ডা. ফিরোজা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা, ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন হাইওয়ে থেকে পূর্ব দিকে পালকি সিনেমা পর্যন্ত রাস্তা মেরামতে অনিয়মও কোরবানপুর ব্রিজের অতিরিক্ত কাজের নামে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করা হয়।

চান্দিনা পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবু কাউছার বলেন, বিভিন্ন ঠিকাদারের লাইসেন্সে মেয়র শওকতের দুই ছেলে অধিকাংশ কোটেশন এবং ঠিকাদারী কাজ করছেন। বর্তমানে এ পৌরসভা মেয়র পরিবারের কাছে জিম্মি। চান্দিনা উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শাহ সেলিম প্রধান বলেন, গত দেড় বছরে মেয়র এতো অর্থ কোত্থেকে পেলো? মেয়রকে নিয়ে আমরা বিব্রত। তার কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।
অভিযোগকারী হাজী শামীম হোসেন বলেন, মেয়র শওকত হোসেন ভূইয়া এবং তার ছেলেরা পৌরসভাকে নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। মেয়রের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে আমরা এলাকার বাসিন্দারা দফায় দফায় বৈঠক করে তাকে এসব না করতে আহবান করেছি। কিন্তু মেয়র ও তার সিন্ডিকেট পৌর নাগরিকদের কোনো আহবানে সাড়া দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে এলাকাবাসীর পক্ষে আমি বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধমে মেয়রের সকল অনিয়ম, দুর্নীতির বিচার প্রত্যাশা করছি।

এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মেয়র শওকত বলেন, আমি এবং আমার ছেলেরা কোনো অনিয়ম-দুর্নীতিতে জড়িত নই। যথাযথ বিধি অনুসরণ করেই পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছি। আমার বিরুদ্ধে একটি চক্র মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্তেই আমি নির্দোষ প্রমাণিত হবো।

প্রসঙ্গত, শওকত হোসেন ভূইয়া ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মেয়র পদে নির্বাচিত হন। একই বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ