বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
হাতিয়া উপজেলা সংবাদদাতা : নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহের বেহাল দশা। বিদ্যুৎ বিভাগের অনিয়মের কারণে গত ১ সপ্তাহ ধরে বেশ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ৩টি জেনারেটরের মধ্যে ২টি জেনারেটর কয়েক দিন যাবত বিকল রয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে আদালতের নির্দেশ থাকলে ও বর্তমানে ১৮ ঘণ্টায় ১ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে না। মাস্টাররোলে কর্মরত বাবলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে শহরের আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ফল দোকান, সেলুন দোকান, মোবাইল দোকান অটোরিক্সাচার্জসহ বিভিন্ন জোনে অবৈধভাবে মিটার বাণিজ্য, ভিআইপি লাইনসহ সাইট কালেকশনের মাধ্যমে প্রতিমাসে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। পুরো এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কোন মাথাব্যথা নেই বলেই মনে করছেন সচেতন মহল। ফলে হাতিয়ার জনগণের, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়া, ব্যবসা-বাণিজ্যে বিঘœ ঘটছে। তার পাশাপাশি হাতিয়ায় কর্মরত জাতীয় পত্রিকার সাংবাদিকদের সংবাদ প্রেরণে সমস্যা দেখা দেয়। জানা গেছে, পিডিবি হাতিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্রে বিদ্যুৎয়ের চাহিদা ২ মেগাওয়াট। ৩টি জেনারেটর দিয়ে ৭/৮শ’ কিলোওয়াট উৎপাদন হতো। এতে প্রতিদিন গ্রাহকদের ৪/৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। কিন্তু সম্প্রতি একের পর এক জেনারেটর অচল হয়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়। বর্তমানে মাত্র ১টি জেনারেটর সচল রয়েছে তাহা দিয়ে মাত্র ১৬০ ও ১৮০ কিলোওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। এতে উৎপাদিত ১৬০/১৮০ কিলোওয়াট দিয়ে ২/৩ ঘণ্টার বেশী বিদ্যুৎ থাকে না। এতে কার্যত হাতিয়া বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক একাধিক গ্রাহক এ প্রতিবেদককে জানান, প্রতিবছর জেনারেটর মেরামতের নামে লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ হয়। নাম মাত্র টেন্ডার দেখিয়ে এই লাখ লাখ টাকা হাতিয়া বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ভাগ-ভাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করে। আর এর ভোগান্তি পোহাতে হয় হাতিয়ার সাধারণ গ্রাহককে। বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও ভূতুড়ে বিল ও মিনিমাম চার্জ পরিশোধ করতে হয় হাতিয়ার সাধারণ গ্রাহকদের। পূর্বের ২টি জেনারেটরের ও এবছর ২টি নতুন জেনারেটর আনা হলেও কিছু কিছু এলাকায় গত কয়েক দিন ধরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে উপজেলা বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে। পুরাতন ২টি জেনারেটরের মধ্যে ১টি সচল থাকলেও তাহা দিয়ে মাত্র ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোওয়াট উৎপাদন করা সম্ভব। পূর্বের ২টি জেনারেটরের মধ্যে ১টি নষ্ট ও বাকী ১টি গত ২ দিন নষ্ট ছিল। এবছর ২টি নতুন জেনারেটর আনা হলেও এই ২টি জেনারেটর মধ্যে ১টি প্রথম থেকে নষ্ট। বাকী ১টি ১ সপ্তাহ পূর্বে নষ্ট হয়ে গেছে। পুরাতন ইঞ্জিন দিয়ে যে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় তাহা দিয়ে উপজেলা পরিষদ এলাকা এবং ভিআইপি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। আর পুরো এলাকায় লোডশেডিং করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।
অভিযোগ রয়েছে, লাইনম্যানগণ ও মাস্টাররোলে কর্মরত বাবলু হাতিয়া বিদ্যুৎ বিভাগের সব ছেয়ে বড় ক্ষমতাধর কর্মকর্তা। এদের অনিয়মের কারণে এ গরমের মৌসুমে সাধারণ গ্রাহক এইচএসসি পরীক্ষার্থী, স্কুল, কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়াসহ দোকানদারদের ব্যবসা-বাণিজ্য টিভি কম্পিউটার বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে হাতিয়ায় কর্মরত জাতীয় পত্রিকার সাংবাদিকদের সংবাদ সরবরাহ। জেনারেটর বিকল হলেও কিন্তু থেমে নেই বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া ও অবৈধ সাইড কানেকশন দেয়া। প্রতিদিনই চলছে বিদ্যুতের লাইন, খুঁটি লাগানো ও মিটার সংযোগ দেয়ার কাজ। নাম প্রকাশে অনিশ্চুক একাধিক গ্রাহক এ প্রতিবেদককে জানান, প্রতিবছর জেনারেটর মেরামতের নামে নাম মাত্র টেন্ডার দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়া বিদ্যুৎ অফিস ও নোয়াখালী বিদ্যুৎ অফিস ভাগ-ভাটোয়ারা করে আত্মসাৎ করছে। আর এর ভোগান্তি পোহাতে হয় সাধারণ গ্রাহককে। বিদ্যুৎ ব্যবহার না করেও ভূতুড়ে বিল পরিশোধ করতে হয় গ্রাহকদের
এদিকে হাতিয়া উপজেলায় ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুতের দাবি জানিয়েছেন হাতিয়া ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা ও ওছখালী বাজার বনিক সমিতির সভাপতি আলা উদ্দিন। তারা বলেন, আমরা ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুতের দাবিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট এবং তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন স্থানে স্মারকলিপিসহ বিক্ষোভ-মিছিল করেছি। কিন্তু তার কোন সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
হাতিয়া পিডিবির আবাসিক প্রকৌশলী মোঃ মশিউর রহমান বলেন, ৩টি জেনারেটরের মধ্যে ২টি জেনারেটর বিকল হওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, ২টি নতুন জেনারেটর আনা হলেও ২টি জেনারেটর মধ্যে ১টি প্রথম থেকে নষ্ট। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ১টি ইঞ্জিন মেরামত করা হলে কিছুটা লোডশেডিং কমবে বলে আসা করছি। জেনারেটর মেরামতের নামে টাকা আত্মসাতের বিষয় অস্বীকার করেন। মাস্টাররোলে কর্মরত বাবলুর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।