পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে সমাবেশে দুই নেতার কোলাকুলি
আইয়ুব আলী : চট্টগ্রাম নগরবাসীর ব্যাপক কৌত‚হল, আলোচনা-সমালোচনা, দলের অভ্যন্তরে দুই বিবদমান পক্ষের টানটান উত্তেজনার পর অবশেষে গতকাল (সোমবার) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে পরস্পর কোলাকুলি করে হাত উঁচিয়ে ধরলেন এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং আ জ ম নাছির উদ্দীন।
এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের মধ্যে রাগারাগি ও মতবিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু যুদ্ধ নয়, মারামারি নয়, খুনোখুনি নয়। আমরা আগামীতে ঐক্যবদ্ধভাবে চলব।’ তবে দুই নেতার মধ্যে দীর্ঘদিন চলে আসা পাল্টাপাল্টি বিরোধ, বাকযুদ্ধ নিয়ে ওই সমাবেশে কোনোই মন্তব্য করলেন না চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।
গতকাল মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে সমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক কর্মী-সমর্থক সমাগমের জন্য আগেই পাল্টাপাল্টি প্রস্তুতি ছিল দুই পক্ষেরই। এ নিয়ে ছিল উত্তেজনাও। সমাবেশে মহিউদ্দিন চৌধুরী ও আ জ ম নাছিরের নামে দুই পক্ষ পাল্টাপাল্টি সেøাগান দিয়েছে। তবে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এবং আ জ ম নাছির উদ্দীন সভাস্থলে হাত ধরাধরি করে কোলাকুলি করায় স্বস্তি ফিরে আসে দলীয় নেতাকর্মী সমর্থকদের মাঝে। এর আগে গত এক সপ্তাহ ধরে পাল্টাপাল্টি সভা-সমাবেশ, সংবাদ সম্মেলন ও বক্তৃতা-বিবৃতিতে দুই নেতা পরস্পরকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণ করে তুমুল বাকযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এর রেশ ধরে মহিউদ্দিন-নাছির সমর্থকদের মধ্যে বিরোধ বেড়েই চলে। এ নিয়ে বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামবাসীর মাঝে গত ক’দিন ধরে নানামুখী আলোচনা-সমালোচনা চলে আসছে এখানে-সেখানে লোকজনের আলাপচারিতায়। মহিউদ্দিন চৌধুরী গত ১০ এপ্রিল লালদীঘি মাঠের সমাবেশে মেয়র নাছিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনেন। আবার মেয়র নাছিরও মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অতীতে ১৭ বছর মেয়র থাকাকালে অনিয়ম-স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আনেন। মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র নাছিরকে ‘অথর্ব’ উল্লেখ করে চট্টগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে তাকে অপসারণে প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠাবেন বলেও হুমকি দেন। তবে মেয়র নাছির এসব অভিযোগ খÐন করে বলেছেন, গত মেয়র নির্বাচনে মনোনয়ন না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে মহিউদ্দিন চৌধুরী তার ঈর্ষা ও অন্তর্জ্বালা থেকে এসব মিথ্যাচার করছেন। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অধিকাংশ কাউন্সিলরও মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তার বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন।
দাবি মানতে হবে Ñমহিউদ্দিন চৌধুরী
মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত সমাবেশে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ করলে দায়িত্ব-কর্তব্য থাকতে হবে। পুলিশের অস্ত্র আছে, আমাদের অস্ত্র নেই। লাঠি হাতে নিয়েছি মারামারি করার জন্য নয়, সাহসের জন্য। আমি সভাপতি হিসেবে সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছিরকে সার্বিক সহযোগিতা করে যাব। তাকে আমাদের দাবি মানতে হবে। আগামীতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে চলব। সাংবাদিকদের উদ্দেশে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আপনারা আমাদের সন্তান। আমাদের ভুল হলে সংশোধন করে দেবেন। আমাদের ভেতর ফাটল ধরানোর জন্য লেখালেখি করবেন না। তিনি বলেন, যুদ্ধ করে বেঁচে আছি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ভারতে আশ্রয় নিয়েছি। তারা আমাদের সহযোগিতা করেছে। ’৭১ সালে পাকবাহিনীর কাছে মাথা নত করিনি। জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকারকে হটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কোটি কোটি মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছেন। আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রাখবেন।
তিনি আমাদের অভিভাবক Ñনাছির
সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সমাবেশে মহিউদ্দিন চৌধুরীর উদ্দেশে বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী আমাদের অভিভাবক। তিনি মুজিবনগর দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল কুষ্টিয়ার বর্তমান মেহেরপুরে জাতির জনকের অবর্তমানে মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়েছিল। মুজিবনগর সরকারের ডাকে মুক্তিসংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু রাজনৈতিক স্বাধীনতা চায়নি। অর্থনৈতিক স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। যারা স্বাধীনতা চায়নি, তারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে প্রতিশোধ নিয়েছিল। কিন্তু দেশের বাইরে থাকায় ভাগ্যক্রমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেঁচে ছিলেন। তার নেতৃত্বে দেশ এখন দ্রæতগতিতে এগিয়ে চলছে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে, যাতে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে হবে। এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বদিউল আলম, অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।