Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বগুড়ায় বাড়ছে মসুর ডাল চাষ

| প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : বগুড়ায় মসুর ডালে ভালো ফলন পেয়েছেন চাষিরা। অনুক‚ল আবহাওয়া আর উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে জেলায় এবার ভালো ফলন পেয়েছেন মসুর ডাল চাষিরা। কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া জেলায় সম্প্রতি মসুর ডাল চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুরুতে সারিয়াকান্দি ও দুপচাঁচিয়া, আদমদীঘি ও শিবগঞ্জ উপজেলায় কিছু কিছু এলাকায় মসুর ডালের চাষ হলেও এখন কমবেশি জেলার ১২টি উপজেলাতেই মসুর ডাল চাষ হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বগুড়ায় মসুর ডাল চাষ হয়েছে। এর বিপরীতে ফলন ধরা হয়েছে দেড় হাজার মেট্রিক টন। বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলার বেশিরভাগ উপজেলায় ধান, মরিচ, সবজি, আলু ও পাট চাষ হয়ে থাকে বেশি। এর সাথে গত কয়েক বছরে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে মসুর ডালের আবাদ। শুরুতে জেলার পূর্বে সারিয়াকান্দি এবং পশ্চিমাঞ্চল আদমদীঘি, দুপচাঁচিয়া, কাহালু ও শিবগঞ্জ উপজেলায় মুসর ডাল চাষ হতো। এর সাথে বর্তমানে জেলা সদর, নন্দীগ্রাম, শেরপুর, ধুনট, সোনাতলায় মসুর ডালের ভালো চাষ শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মসুর ডালের দাম বৃদ্ধির কারণে স্থানীয় চাষিরা মসুর ডাল চাষে বেশ আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
কৃষি অধিদপ্তর বলছে, জেলায় ১ হাজার ৪শ’ হেক্টর জমিতে মসুর ডাল চাষ হয়েছে। এর বিপরীতে ফলন পাওয়া গেছে ১ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন। গত মার্চ থেকেই নতুন মসুর ডাল বাজারে কেনাবেচা শুরু হয়েছে।
বগুড়ার যমুনা নদী অঞ্চল সারিয়াকান্দি, ধুনট, নন্দীগ্রাম উপজেলায় এবার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমিতে মসুর ডাল চাষ হয়েছে। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দেশী জাতের উচ্চ ফলনশীল মসুর চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। উচ্চ ফলনশীল জাতের মসুর চাষে কৃষকদের ব্যাপকভাবে উৎসাহিত করায় চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। চাষিরা বলছেন, কৃষি অফিস থেকে উন্নত জাতের বীজ সরবরাহের পাশাপাশি কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। কৃষি কর্মকর্তাদের সহযোগিতা নিয়ে মাঠ পর্যায়ে ভালো ফলন পাওয়া গেছে। বগুড়ার নন্দীগ্রামের বর্ষণ গ্রামের আশরাফ আলী, মামদুদ, মামুন, আজিজ মৃধা, ভাটরা গ্রামের মোজাম্মেল, জামালপুর গ্রামের নাসির উদ্দিন মসুর ডাল চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছে। নন্দীগ্রাম এলাকার মসুর চাষিরা জানান, স্থানীয় বাজার থেকে দেশী মসুর বীজ কিনে কার্তিক মাসের শেষ দিকে জমিতে ছিটিয়ে রোপণ করা হয়। রোপণের ৫০ দিনের মাথায় ফুল আসতে শুরু করে। ৯০ দিনের মাথায় ডাল তুলে নেয়া হয়। এ চাষে পানির প্রয়োজন খুবই কম। শুধু রোপণের পূর্বে মাটি ভিজিয়ে নেয়ার কাজে পানির প্রয়োজন হয়। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার কৃষক আব্দুল হান্নান জানান, ৩ বিঘা জমিতে মসুর কলাই চাষ করেছেন। বিঘাপ্রতি ফলন হয়েছে দুই থেকে আড়াই মণ করে। জমির ফলন নিয়ে একই কথা জানালেন জব্বার আলী, মজিবর রহমান, তাহেরা, মঞ্জুয়ারা বেগম, হোসেন আলীসহ চরাঞ্চলের একাধিক মসুর কলাই চাষি। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার বর্ষণ গ্রামের ডালচাষি আশরাফ আলী বলেন, দেশী জাতের মসুর চাষ করে প্রতি বিঘা জমিতে আড়াই থেকে ৩ মণ ফলন পাওয়া যায়। গত বছরও ডাল চাষ করেছি। ভালো ফলনের সাথে বাজারে দামও এবার ভালো পাওয়া গেছে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক চন্ডি দাস কুন্ডু জানান, কৃষি সম্প্রসারণ থেকে কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে চাষিদের সাথে কৃষি কর্মকর্তারা কথা বলে পরামর্শ এবং সময়মতো মসুর ডাল চাষে আগ্রহী করা তোলা হয়। জেলায় আগের থেকে মসুর ডাল চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। কমবেশি সব উপজেলায় মসুর ডাল চাষ হচ্ছে। চলতি মৌসুমে জেলায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এর বিপরীতে ফলন ধরা হয়েছিল দেড় হাজার মেট্রিক টন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বগুড়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ