বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বিশেষ সংবাদদাতা : চৈত্রের দাবদহে তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যাবার মধ্যে বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে বিদ্যুৎ বিভ্রাট জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে দিচ্ছে। আবহাওয়া বিভাগের মতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মৃদু তাপপ্রবাহ বইছে। ইতোমধ্যে চুয়াডাংগায় তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৩৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুয়েছে। গতকাল যশোরের তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বরিশালে তা ছিল ৩৬.৮ ডিগ্রি। এসবই স্বাভাবিকের চেয়ে ২-৩ ডিগ্রি বেশী। বরিশালে এর আগের দু’দিন তাপমাত্রা প্রায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে পিঠে ছিল। আর এরই মধ্যে স্থানীয় বিতরণ ব্যবস্থায় ত্রæটির সাথে জাতীয় গ্রীড লাইন বারে বারে ট্রিপ করায় দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন অনেকটাই বিপন্ন। শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থাও শোচনীয় পর্যায়ে। শেষ চৈত্রে মূল্য হ্রাস দিয়ে দোকানীরা যে পসরা সাজিয়েছেন, তাও ভেস্তে যেতে বসেছে তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে অসহনীয় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে, যা উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর হয়ে খুলনা বিভাগসহ উত্তরাঞ্চলে যে মৃদুতাপ প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকার কথা জানিয়ে সার দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে আজ সকালের পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়া পরিস্থিতির সামান্য পরিবর্তনের কথাও বলা হয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১০ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গাতে তাপমাত্রার পারদ ৩৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যায়। গতকাল বরিশালে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মাসে দেশের বিভিন্ন এলাকায় একটি মৃদুতাপ প্রবাহ বয়ে যাবার পাশাপাশি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে একটি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাবার কথা বলা হয়েছে। এর সাথে আরো ১-২টি মাঝারী তাপপ্রবাহ বয়ে যাবার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ তার দীর্ঘ মেয়াদী বুলেটিনে। তবে এ তাপ প্রবাহের মধ্যে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতসহ একাধিক বজ্র-বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে।
কিন্তু আবহাওয়ার এ আচরণের মধ্যেই বিদ্যুৎ নিয়ে গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছেন। উৎপাদন ঘাটতি না থাকলেও বিতরণ ব্যবস্থার সীমাহীন ত্রæটির সাথে গত কয়েকদিন ধরে সঞ্চালন ব্যবস্থার ত্রæটিও দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষের চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে। দিনরাতই বিতরণ ব্যবস্থার নানা গোলযোগে বরিশাল মহানগরী সহ-দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। এমনকি এখনো আকাশে মেঘ জমলেই খোদ বরিশাল মহানগরীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এর সাথে সঞ্চালন ব্যবস্থার ত্রæটি দুর্ভোগের পরিধিকে আরো বৃদ্ধি করছে। গতকাল সকালেও ভেড়ামারা-ফরিদপুর-মাদারীপুর-বরিশাল গ্রীড লাইন ট্রিপ করে কয়েক ঘণ্টা দক্ষিণাঞ্চল ছিল বিদ্যুৎবিহীন। ‘সামিট পাওয়ার’এর ১১০ মেগাওয়াটের বরিশাল পাওয়ার স্টেশনটি ট্রিপ করায় পুরো গ্রীড সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায়। ‘অপারেশন বাক আউট’ পদ্ধতিতে দ্রæত গ্রীড সাব-স্টেশন চালু করা হলেও পুরো সিস্টেম পুনর্বাসন করতে প্রায় দু-ঘন্টা সময় লাগে। গত সোমবারও দু’দফায় বরিশালে গ্রীড সিস্টেম ট্রিপ করে। ঐদিন সন্ধার পরে বরিশাল গ্রীড সাব-স্টেশনের ‘ক্যাপসিটর ব্যাংক’ ইকুইপমেন্ট রুমে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এর আগের সপ্তাহটিজুড়েও একাধিকবার বরিশালে গ্রীড লাইন ট্রিপ করায় জন দুর্ভোগ বাড়ে। গ্রীড লাইনসহ-এর সিস্টেম ট্রিপ করলে তা একাধিক জেলা ও বিপুলসংখ্যক উপজেলা ও পল্লী অঞ্চলকে বিদ্যুৎবিহীন করে দিচ্ছে। ফলে বিশাল জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ বাড়ছে।
এব্যাপারে গতকাল ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী-ওজোপাডিক্’োর ডিজিএম অপারেশন-এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, আমরা চেষ্টা করছি নির্বিঘেœ বিদ্যুৎ দিতে। তবে গ্রীড সিস্টেমে কোন সমস্যা হলে তাদের কিছু করণীয় নেই বলে জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।