Inqilab Logo

শুক্রবার ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৯ ভাদ্র ১৪৩১, ০৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

২১২ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হচ্ছে হালদা তীর সংরক্ষণ প্রকল্প

| প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী : রাক্ষসী হালদা নদীর করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাচ্ছে হালদার তীরবর্তী বসবাসরত কয়েক হাজার পরিবার। হালদা নদীর ভাঙন নিয়ে সম্প্রতি দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় হালদা নদীর ভাঙন নিয়ে সিরিজ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হলে অবশেষে প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টিগোচর হলে গত মঙ্গলবার তিনি একনেকের এক বৈঠকে হালদা নদীর হাটহাজারী ও রাউজান সীমানা হালদার উভর তীর রক্ষাকল্পে ‘তীর সংরক্ষণ’ কাজের জন্য ২১২ কোটি ৮ লাখ টাকা অনুমোদন দেন। ওই প্রকল্পই জিওবি (সরকারি) অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত ও সাধুবাদ জানিয়েছেন হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার হালদা নদীর তীরবর্তী বসবাসরত অসহায় মানুষরা।
হাটহাজারী ও রাউজান এই দুই উপজেলার সীমানার উপর প্রবাহিত এই হালদা নদীর পাড় দীর্ঘদিন ধরে ভাঙতে থাকে। পাড় ভাঙতে ভাঙতে আশপাশের কয়েকশত একর ফসলি জমি হালদা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। পাশাপাশি দুই উপজেলার কয়েক হাজার পরিবারের ঘরবাড়িসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদরাসা এমনকি কবরস্থান পর্যন্ত বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়াও বহু পরিবারের বাপ-দাদার বসতভিটা পর্যন্ত হালদার করাল গ্রাসে হারিয়ে গেছে। এ পরিবারগুলোকে ভিটা ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে। দীর্ঘদিন পর হালদার তীরবর্তী মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। হালদা পাড়ের বাড়িঘর রক্ষার্থে দক্ষিণ হাটহাজারী মদুনাঘাট থেকে শুরু করে উত্তর হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলার সীমানা পর্যন্ত এই তীর সংরক্ষণ কাজ হবে বলে জানা গেছে। গত মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) ঢাকার শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।
তবে এশিয়ার বিখ্যাত মৎস্য প্রজননক্ষেত্র চট্টগ্রামের হালদা নদী। মৎস্য সম্পদের ভরপুর এই হালদা নদী জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্র্ণ অবদান রেখে আসছে। জাতীয় মাছ রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউশ পোনার জন্য এই নদীর আলাদা কদর আছে। এই হালদা নদী মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হিসেবে এশিয়ায় অতি পরিচিত। এই হালদা নদীতে প্রতি মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ ডিম দেয়। এই ডিমগুলো ডিম সংগ্রহকারীরা আহরণ করে ডিম থেকে সনাতন পদ্ধতিতে রেণু উৎপাদন করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহামুদ এমপি জানান, শীঘ্রই এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। এ কাজ শুরু হলে দুই উপজেলার হালদা পাড়ে বসবাসরত সাধারণ মানুষসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি, মসজিদ ও মাদরাসা নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে।
উল্লেখ্য, প্রাচীনকালে হালদা নদীকে সাগর বলা হতো। আনুমানিক ২৫০-৩০০ বছর আগে মেঘনা, যমুনার ন্যায় হালদা নদী প্রশস্ত ছিল। প্রাকৃতিক নিয়মে উত্তর-পশ্চিম-পূর্ব দিকে পাহাড় থেকে বর্ষার সময় পলিমাটি জমতে জমতে চরের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে খালে রূপ ধারণ করেছে। হালদা নদী চট্টগ্রাম জেলাসহ ত্রিপুরা রাজ্যের উদয় নগরের পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, রাউজান উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কালুরঘাট, সিকি মাইল পূর্বদিকে গণ্যেরমার ঘাটে বা হাটের কাছে কর্ণফুলী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। কর্ণফুলীর নামে বঙ্গোপসাগরের সাথে সংযুক্ত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ