Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছেই

| প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বৈশাখ আসতে আরও সপ্তাহখানেক বাকি। এর মধ্যেই বাজারে নিত্যপণে লেগেছে বৈশাখের হাওয়া। ইলিশের গায়ে যেনো একটু বেশি-ই লেগেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ইলিশের দাম বেড়েছে প্রায় এক থেকে দেড় গুণ। বাড়তির দিকে মৌসুমী শাক-সবজি, চালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামেও।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর একাধিক কাঁচাবাজার ঘুরে অন্যান্য মাছের দাম অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেলেও বাড়তি ছিল ইলিশের দাম। এছাড়া গত সপ্তাহের ব্যবধানে গরু ও খাসির গোশতের দাম কিছুটা কমলেও বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম। বাজারগুলোয় ৬০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি ইলিশের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেড়েছে। রাজধানীর মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা অখিল রাজমুন্সি জানান, গত সপ্তাহে ইলিশ (৬০০ গ্রাম) বিক্রি হয়েছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়। বর্তমানে এর মূল্য ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা।
তিনি বলেন, ইলিশ মাছের যোগান এখন কমে গেছে, তাই দাম বাড়ছে। সামনে আরো কমবে। আগে এই সময়ে বাজারে প্রচুর জাটকা আসত। এখন অভিযানের কারণে ওইটার সাপ্লাইও কমে গেছে। সামনে পহেলা বৈশাখে দাম আরো বাড়তে পারে কি না জানতে চাইলে আদাবর কাঁচাবাজারের মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ জনি বলেন, পহেলা বৈশাখের ইলিশ বিক্রি শুরু হয় ১০ এপ্রিল থেইকা। এই বছর কেমন বেচা-বিক্রি হইব তা জানি না, তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় পাবলিক গতবছর পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশ অনেক কম কিনছিল। তবে নববর্ষের প্রথম দিনে খাদ্য তালিকায় ইলিশের বিষয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরিরত মুনতাসির আহমেদ।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটে বাজার করতে আসা মুনতাসির বলেন, একে তো পহেলা বৈশাখে ইলিশ নিয়ে বাঙ্গালির আদিখ্যেতা আছে, তার ওপর এই নববর্ষকে ঘিরে সুপারশপগুলোর ব্যবসা দেখলে মেজাজ খারাপ হয়।
গতকাল একটি সুপারশপে দেখলাম একটা সাধারণ সাইজের ইলিশের দাম এক হাজার ৫০ টাকা। অন্যান্য মাছের মধ্যে রুই ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতল ২২০ থেকে ৩২০ টাকা, শিং আকার ভেদে ৪০০ থেকে ৬৫০, মাগুর ৫০০ টাকা, শোল ৫০০ টাকা, টেংরা ৪০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি মাঝারি ৪০০ টাকা এবং কাচকি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।
গোশতের মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানে গরু ও খাসির গোশতের দাম কিছুটা কমেছে। প্রতি কেজি গরুর গোশত ৫০০ টাকা থেকে কমে হয়েছে ৪৮০ টাকা। খাসির গোশত ৮০০ টাকা থেকে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় নেমেছে। দেশি মুরগি প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, পাকিস্তানি কক ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। তবে কিছুটা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম; ১৪০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬০ টাকায়।
এদিকে মৌসুম শেষ হওয়ার অজুহাতে বেড়েছে বিভিন্ন সবজির দাম। সব কিছুই বাড়তির দিকে। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে অধিকাংশ সবজির দাম কেজিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মিরপুর কাঁচাবাজারের বিক্রেতা মাসুম হোসেন বলেন, শীত মৌসুম শেষ। পাইকারী বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়েছে মহাজনরা। এজন্য গতসপ্তাহের চেয়ে এ সপ্তাহে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৭৫ টাকা। লাউ প্রতি পিসে কমপক্ষে ৫ টাকা বেড়েছে। যা এখন প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। শিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, শশা ৪০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩৫ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩০- ৪০ টাকা এবং বাঁধাকপি ৩০ টাকা। বেগুন প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে, পেঁয়াজের কলি ২০ টাকা, চাল কুমড়া ২০-২৫ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, ঝিঙ্গা ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, কাকরোল ৪০ টাকা, আলুর দাম ২ টাকা বেড়ে ২০ টাকা কেজি, প্রতি হালি লেবু প্রকারভেদে ২০-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ২৭-৩০ টাকা, ভারতীয় ২০-২৫ টাকা, দেশি রসুন ৮০ টাকা, চীনা রসুন ১৯০ টাকা, দেশি আদা ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে চালের দাম যেনো লাগাম ছাড়া। গত এক সপ্তাহে মানভেদে প্রতিকেজিতে বেড়েছে ৫ থেকে ৭ টাকা। তবে ভোজ্যতেল, ডালসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নিত্যপণ্য

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ