পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : শীতের শুরু থেকেই বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা ও বাঙ্গালী নদীর পানি কমতে থাকায় নিজেদের অভাব দূর করতে নদীর ঢালে চাষ করেছে ‘কালো বোরো ধান’। এই চালের ভাত সুস্বাদু হওয়ায় সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট, গাবতলী ও বগুড়া সদর অঞ্চলে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলনও পাওয়া যায় ১২ থেকে ১৪ মণ। জানা গেছে , বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা মূলত নদী বেষ্টিত। উপজেলা সদরের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে বাঙালি ও যমুনা নদী। নদী দুটি বর্ষাকালে বন্যার সৃষ্টি করে।
বন্যার পর নদীর ঢালে চাষিরা এবার কালোবোরো ধান চাষ করেছে। সু স্বাদু হওয়ায় এ জাতের চালের আশপাশের ৫টি উপজেলায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজি চাল বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। এরই মধ্যে ধানের গাছ থেকে শীষ বেরুতে শুরু করেছে। অল্প পরিশ্রম ও নাম মাত্র খরচে সোনালী ধানের শীষ দেখা দেয়ায় চাষীদের মুখে হাসি ফুটছে। বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিস ও স্থানীয় বোরো চাষীদের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মধ্য দিয়ে বাঙ্গালী ও যমুনা নদী প্রভাহিত হওয়ায় দু’ধারে জেগে ওঠে অনেক ঢালু চর। এসব ঢালু চরের উর্বর পলিমাটিতে চাষীরা অধিকহারে স্থানীয় জাতের বোরো ধানের চারা রোপণ করেন।
বিশাল বিশাল জেগে ওঠা চরে ফাঁকা রাখতে চান না বলেই সাধ্যমতো যে যতটুকু পারেন জমিতে ধান রোপণ করেন। বীজতলায় চারা তৈরীর পর তা রোপণ শুরু হয়। চৈত্র মাসের মাঝামাঝি থেকে ফলন পাওয়া যায়। নদীর নিকটে হওয়ায় নদীর পানিতেই ধানের গাছ বড় হতে থাকে। কীটনাশক ও অন্য কোন রাসায়নিক সারের প্রয়োজন হয় না। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলায় প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ইরি-বোরো ধান চাষ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৪শ’৩০ হেক্টর জমিতে। তবে এর মধ্য স্থানীয় জাতের কালো-বোরো ধান চাষ হয়েছে প্রায় সাড়ে ১২’শ হেক্টর। উন্নত জাতের ধান প্রতি বিঘা থেকে প্রায় ২৪/২৫ মণ উৎপাদন করা গেলেও কালো-বোরো ধান প্রতি বিঘায় সর্বোচ্চ ১৬ থেকে ১৭ মণ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয় চাষিরা ঘরে এই ফলন তোলার কিছুদিন পর আবার অন্য ধান ঘরে তোলে। ধান ঘরে তোলার পর চৈত্র মাসে খড় বিক্রি করে অনেক টাকা হাতে পায় নদী পাড়ের সংগ্রামী চাষীরা।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার হাসনাপাড়া গ্রামের বোরা চাষি এফাজ উদ্দিন জানান, জমির মালিক কে তা না ভেবে সুযোগ বুঝে চাষীরা ঢালু চরে কালো-বোরো ধান চাষ করে থাকে। তিনি নিজে এবার প্রায় ৫ বিঘা জমিতে ধান রোপণ করেছে। প্রাপ্ত ধান দিয়ে পরিবারের ৩/৪ মাসের চালের সংস্থান হবে। এছাড়াও চৈত্র মাসের খরার সময় ঘাসের দুষ্প্রাপ্যতা দেখা দেয়। ওই খড় থেকে গবাদী পশুর আপদকালীন চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়।
ধান চাষি আব্দুর রহমান জানান, ধান চাষ করে ঘরে ফলন নেওয়ার পর পরের তিন চারমাস চালের অভাব থাকে না। এছাড়া খড়ও পাওয়া যায়। আবার অনেকেই এই ঋণ চাষ করে বাজারে বিক্রি করে দেয়।
খোলা বাজারে চাল বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি। চাষে খরচ তেমন নেই। পানিও নদীর। শুধু একটু শ্রম দিলেই বিঘা প্রতি ১২ থেকে ১৪ মণ ধান পাওয়া যায়। তাই অনেকেই নিজেদের আর্থিক সামর্থ্য বাড়াতে এই ধান চাষ করে থাকে। সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ শাহাদুজ্জামান বলেন, দেশের সব জায়গায় এ ধানের চাষ হয় না। তবে এ অঞ্চলের পরিশ্রমি চাষিরা আমাদের পরামর্শক্রমে পরিত্যক্ত জমিতে ওই জাতের ধান চাষ করে চালের অভাব অনেকাংশে দূর করে থাকে ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।