Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বগুড়ার শেখেরকোলায় অবৈধ বালু উত্তোলন হুমকির মুখে সামুঞ্জা খালের ব্রিজ ও দেড় হাজার বিঘা ফসলি জমি

| প্রকাশের সময় : ২৯ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মাহফুজ মন্ডল, বগুড়া থেকে : বগুড়া সদরের শেখেরকোলা ইউনিয়নের সামুঞ্জা খালে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করায় প্রায় দেড় হাজার বিঘা ফসলি জমি হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগীরা তাদের ফসলি জমি, বাড়িঘর ও সামুঞ্জা খালের উপর নির্মিত সেতু রক্ষায় বালু উত্তোলন বন্ধে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বগুড়া সদর উপজেলার শাখারিয়া গ্রামের আশরাফ ওরফে অনছের আলীর ছেলে মাহফুজার রহমান, ভুট্টো মিয়া, রনজু মিয়া, একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম ও ঠেঙ্গামারা গ্রামের নজরুল ইসলাম প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় অবৈধভাবে দেদারছে বালু উত্তোলন করছে।
শেখেরকোলা গ্রামের ইয়ার আলী মন্ডল, জিল্লার রহমান, মিনহাজ উদ্দীন, আব্দুল জলিল, আব্দুল খালেকসহ শতাধিক এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, বালু উত্তোলনকারীরা প্রথমে সামুঞ্জা খালের পার্শ্বে সামান্য জমি কিনে উক্ত খালে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বোরিং না করে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে থাকে। এভাবে বালু তুলে পাইপের মাধ্যমে সেতুর নিচে ফেলা হচ্ছে। সেখান থেকে ট্রাকে তুলে বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। খালের গভীর তলদেশ থেকে বোরিং করে বালু তোলায় সেখানকার গভীরতা দিন দিন বাড়ছে। এতে চারপাশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। খালের তীরবর্তী আবাদি জমি ও বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। পাশাপাশি সামুঞ্জা খালের উপর কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত আরসিসি ব্রিজটিও ঝুঁকির সম্মুখীন হয়েছে।
নিয়ম অমান্য করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ব্যাপারে স্থানীয় জনসাধারণ প্রতিকার দাবি করে প্রথমে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দেয়া হলে প্রভাবশালীদের তদবিরে তার কার্যক্রম সেখানেই বিলুপ্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার মেলেনি। নিজেদের বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট বিশেষ করে ফসলি জমি রক্ষায় বাধ্য হয়ে গ্রামবাসী বালু ট্রাক যাতায়াতের রাস্তা কেটে ফেলে। ফলে গত কয়েকদিন বালু তোলা বন্ধ রয়েছে। কিন্তু জনসাধারণের এ কাজে চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে বালু দুস্যুরা। গ্রাম থেকে যারা শহরে যায় বিভিন্ন কাজমর্ক করতে তাদের নানাভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছে বালু দস্যুরা। শহরে কাজ করে গ্রামের বেশ কয়েক শ্রমিক এ প্রতিবেদককে অভিযোগ করে বলেছেন, বালু দস্যুদের ভয়ে তারা নিজেদের কর্মস্থলে পর্যন্ত যেতে পারছে না। তারা আরও বলেন, এভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে তাদের অবশিষ্ট জমি উক্ত খালে বিলীন হয়ে যাবে। এছাড়া ব্রিজের পাশে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় সেটি হুমকির মুখে পড়েছে। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হলেও অজ্ঞাত কারণে তারা কোন পদক্ষেপ নেয় না। এ ব্যাপারে বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. আক্তারুন্নাহার জানান, এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা হয়েছে। দ্রুত সামুঞ্জা খাল থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়া হবে। এরপরেও কেউ বালু উত্তোলনের চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বগুড়া

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ