মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ট্রাম্পের নেতৃত্বে বিশ্বে পরমাণু হুমকি আরো জোরালো হওয়ার আশংকা বিশ্লেষকদের
ইনকিলাব ডেস্ক: ঐতিহাসিক শপথ অনুষ্ঠানেই র্যাডিক্যাল মুসলিম সন্ত্রাসবাদকে সমূলে উৎপাটনের আহ্বান জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফেব্রæয়ারির শেষ সপ্তাহে কনজারভেটিভ পলিটিক্যাল অ্যাকশন কনফারেন্সে (সিপিএসি) দেয়া বক্তৃতায় সুনির্দিষ্টভাবে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ইসলামিক স্টেটকে (আইএস) পৃথিবীর সবথেকে বড় শত্রæ উল্লেখ করে তাদের নির্মূল করার প্রতিশ্রæতি দেন তিনি। গত ১৭ মার্চ সামরিক খাতের বরাদ্দ ১০ শতাংশ বাড়িয়ে পরবর্তী বছরের সেই বাজেট প্রস্তাব করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। বিপরীতে বৈদেশিক মানবিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন সেবা খাতে কমিয়ে দেন বরাদ্দ। ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির ধারাবাহিকতা উল্লেখ করে দুই রাজনীতি বিশ্লেষক বলছেন, বাস্তবে মার্কিনিরা তেমন কোনও নিরাপত্তা-হুমকিতে নেই। জাতীয় নিরাপত্তার অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র এবার নিজের সঙ্গেই সামরিক প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। ট্রাম্পের নেতৃত্বে বিশ্বে পরমাণু হুমকি আরও জোরালো হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে তাদের। ২০ জানুয়ারির শপথ অনুানে ট্রাম্প পূর্বসূরিদের ধারাবাহিকতা ভেঙে সরাসরি ইসলাম ও মুসলমান পরিচয় নির্দিষ্ট করে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। বলেন, দেশ থেকে মৌলবাদী সন্ত্রাসবাদ সমূলে উৎপাটিত করা হবে। যারা আমাদের ক্ষতি করবে তাদের আমরা দেশছাড়া করব, জাতির সুরক্ষার জন্য আমরা নতুন পদক্ষেপ নেব। তবে সেই নতুন পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। দেখা গেছে পুরনো বুশ যুগের প্রতিধ্বনি, সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির ধারাবাহিক পদক্ষেপ। উল্লেখ্য, একুশ শতকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধির পরিসংখ্যানে নজর ফেললে দেখা যায়, বিল ক্লিনটনের সময় সামরিক বাজেট ৩০২ বিলিয়ন থেকে ৩১৩ বিলিয়নে পৌঁছায়। জর্জ বুশের সময় এই বাজেট ৩৫৭ বিলিয়ন থেকে হয় ৪৬৫ বিলিয়ন ডলার। ২০০৮ সালে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৬২১ বিলিয়ন ডলার। বরাবরই যুদ্ধের বিপক্ষে কথা বলা বারাক ওবামার সময় এই বাজেট ২০১১ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৭১১ বিলিয়ন ডলারে। তবে পরে অবশ্য এটা কমে ৫৯৬ বিলিয়র ডলারে নামিয়ে আনতে সমর্থ হয় তার প্রশাসন। এবার ট্রাম্প প্রস্তাব করেছেন ২০১৮ সালে সামরিক বাজেট হবে ৬৫০ বিলিয়ন ডলার। তার সামরিক বাজেট ওবামার চেয়ে ৩০ বিলিয়ন ডলার বেশি। সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির ফেলো এবং সিআইএর সাবেক বিশ্লেষক মেলভিন গুডম্যান মনে করেন, ট্রাম্প প্রস্তাবিত বাজেটটি সামরিকতার জাতীয় নিরাপত্তা রীতির বিকশিত ধাপ। স্টিভ ব্যাননের ভাষায় যা প্রশাসনিক অবস্থার বিনির্মাণ।
এদিকে, বার্মিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক জেমস পেট্রাস ২১ শতকের দুই দশকে মার্কিন সামরিকতার এই বিস্তৃতিকে বলছেন অভূতপূর্ব। ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান যে দলের প্রেসিডেন্টই ক্ষমতায় থাক, সামরিক খাত সবসময়ই বেশি গুরুত্ব পেয়েছে। ট্রাম্পের ক্ষেত্রে মিডিয়া সামরিকতা বিস্তারের প্রসঙ্গ এমনভাবে ফলাও করছে যে বারাক ওবামা, জর্জ বুশ কিংবা বিল ক্লিনটনের সামরিকতা বিস্তৃতির প্রয়াস ঢাকা পড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, বিগত ১৮ বছরে যদি সামরিকতাকে বিশ্লেষণ করা হয় তবে একটা বিষয়ই সামনে আসবে। তা হলো মার্কিন সাম্রাজ্যবাদে সামরিকতা সবসময়েই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ২৭ জানুয়ারি মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনে গিয়ে সামরিক খাত পুনর্গঠনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের আদেশ দিয়েছিলেন ট্রাম্প। ওই আদেশের খসড়া হাতে পেয়ে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছিল, পেন্টাগনকে আইএসসহ অন্যান্য জঙ্গি গোষ্ঠীর মোকাবেলা এবং নিটকতম প্রতিদ্ব›দ্বী দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধের সম্ভাব্য ফলাফল যাচাই করে সামরিক বাজেটের একটা ধারণা দিতে বলা হয় ওই আদেশে। যাচাইকৃত সম্ভাব্যতার নিরিখে ২০১৭ সালের বাকি দিনগুলো এবং পরবর্তী ২০১৮ সালের জন্য সামরিক পরিকল্পনা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। পরে কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি উল্লেখ করে, আবারও মুসলিম মিত্রদের নিয়ে ইসলামিক স্টেট (আইএস) নির্মূলের পরিকল্পনার কথা জানান ট্রাম্প। ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।