পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আলোচনায় সামরিক-সহযোগিতা চুক্তি
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে বাংলাদেশ সফরে আসছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত। দুই দিনের সফরে আগামী ৩০ মার্চ ঢাকায় পৌঁছবেন তিনি। আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রীর নয়াদিল্লি সফরে দুই দেশের মধ্যকার প্রতিরক্ষা সমঝোতা চুক্তি হতে পারে ধারণা করা হচ্ছে। তার আগ মুহূর্তে ভারতীয় সেনাপ্রধানের এই সফরকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, আগামী ৮ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে যে প্রতিরক্ষা সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে, সে বিষয়টি চূড়ান্ত করতেই আসছেন জেনারেল রাওয়াত।
এ সফরে ভারতীয় সেনাপ্রধান প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বলে জানা গেছে। এসময় বিপিন রাওয়াত কয়েকটি কর্মসূচিতেও অংশ নিবেন।
বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হকের আমন্ত্রণে কাঠমান্ডু থেকে ঢাকা আসবেন জেনারেল রাওয়াত। যদিও কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে জেনারেল বেলালের ভারত সফরের ফিরতি হিসেবে ঢাকায় আসছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান। তবে দ্বিপাক্ষিক সামরিক সহযোগিতা উন্নত করার আলোকে সফরটি বিশেষ তাৎপর্য পেয়েছে। সা¤প্রতিক বছরগুলোতে দু’দেশের প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের উচ্চপর্যায়ের নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক সফর বিনিময়ও বেড়েছে।
কূটনৈতিক সূত্র মতে, আগামী ৭ এপ্রিল চারদিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৮ এপ্রিল নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে অনুষ্ঠিতব্য বৈঠকে প্রতিরক্ষাবিষয়ক যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে, সে বিষয়টি চূড়ান্ত করতেই আসছেন জেনারেল রাওয়াত। শেখ হাসিনার এ সফরে উন্নয়ন প্রকল্প, কানেকটিভিটি, অবকাঠামো ও জ্বালানি খাতসহ প্রায় ৩০টির মতো চুক্তি, সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং নথি স্বাক্ষর হতে পারে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে প্রায় ৫০টির মতো দ্বিপক্ষীয় প্রস্তাবিত বিষয় রয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৮-২০টি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয় চূড়ান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরের আগে অন্তত ৩০টি চুক্তির বিষয় চূড়ান্ত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক শাহিদুজ্জামানের মতে, ভারতের সাথে সামরিক সহযোগিতার নেতিবাচক দিকও রয়েছে। তবে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ইশফাক এলাহীর মতে, বাংলাদেশকে তার স্বার্থেই, ভারতের প্রতিরক্ষা সহযোগী হওয়া উচিত। তিনি বলেন, বিশ্বে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী চীন এবং অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হতে যাওয়া ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের এ ধরনের চুক্তির গুরুত্ব রয়েছে। এ নিয়ে কারো উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশ্লেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহেমেদ বলেন, সামরিক চুক্তির বিনিময়ে তিস্তা চুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। আর বাংলাদেশ তা করবে বলে মনে হয় না। করলে বাংলাদেশে তার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হবে। এতটা ছাড় বাংলাদেশ দেবে না।
ভারতীয় সাংবাদিক ও বিশ্লেষক সুবীর ভৌমিক প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে বলেন, ভারত চাইছে যে ভারতের কাছ থেকে বেশি পরিমাণে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র কেনা হোক। বর্তমানে বাংলাদেশে বেশিরভাগ অস্ত্র চীন থেকে কেনে- ভারত সেই জায়গাতে ঢুকতে চাইছে। আর অন্য একটি বিষয় হচ্ছে, কিছু কিছু সন্ত্রাসবাদী তৎপরতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে যৌথ অভিযান বা সম্মিলিত অভিযান চালানোÑ সে রকম একটা সুযোগ তৈরি করার একটা ব্যাপার এ চুক্তির মধ্যে ভারত রাখতে চাইছে।
ভারত কেন এরকম চুক্তি করতে চায়? এ নিয়ে সুবীর ভৌমিক বলেন, ভারত নর্থ-ইস্টার্ন রিজিয়নে তার কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার জন্যই এরকম চুক্তি চাইছে।
সামরিক চুক্তি আত্মঘাতী হবে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বখতিয়ার উদ্দীন চৌধুরী। তার মতে, বাংলাদেশের মানুষ সামরিক চুক্তির কথা শুনে উদ্বিগ্ন হয়েছে। কারণ বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সামরিক চুক্তির প্রয়োজন হলো কেন?
ভারতীয় সংবাদপত্র কুয়োরা লিখেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রতিরক্ষা চুক্তি এমন হওয়া উচিত যাতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে অবাধে ভারতীয় সেনা ও সামরিক সরঞ্জাম পরিবহন করা যায়। তার ফলে ওই সাত রাজ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে। ভারতীয় সেনাবাহিনী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্যের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা ও সেখানের সন্ত্রাসী গ্রæপগুলোর বিরুদ্ধে ৫০ বছর ধরে লড়াই করে আসছে। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য তারা ব্যর্থ হচ্ছে। তাই ভারত এখন বাংলাদেশের ভ‚মিকে ব্যবহার করতে চাচ্ছে।
সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকে সামনে রেখে ব্যস্ত ঢাকা ও দিল্লি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সফরটিকে ‘ঐতিহাসিক’ রূপ দিতে আর সাফল্যমÐিত করতে তৎপর। মন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি পর্যায়ে আগাম সফরও হচ্ছে। ভারতীয় পক্ষ এসব সফরের মাধ্যমে তাদের কাক্সিক্ষত বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতার বিষয়গুলো ঝালিয়ে নিচ্ছেন। আগামী ২ এপ্রিল নয়াদিল্লি সফরে যাবেন অর্থমন্ত্রী এএমএ মুহিত। ইতিমধ্যে দু’জন সিনিয়র মন্ত্রী নয়াদিল্লি সফর করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সন্ত্রাস দমনবিষয়ক একটি অনুষ্ঠানে এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন। উভয় মন্ত্রী নয়াদিল্লিতে ভারতের নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তারা প্রধানমন্ত্রীর সফর, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে মতবিনিময় করেন। অর্থমন্ত্রী আসন্ন সফরে প্রস্তাবিত পাঁচ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তিসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলবেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান (অব.) মঈন উ আহমেদ, জেনারেল (অব.) আবদুল মোবিন এবং জেনারেল (অব.) ইকবাল করিম ভূইয়া ভারত সফর করেন যথাক্রমে ২০০৮ সালের ফেব্রæয়ারি, নভেম্বর ২০১১ এবং এপ্রিল ২০১১ তে। পাশাপাশি নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধান, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড প্রধানও গত বছর ভারত সফর করেন। অপরপক্ষে সাবেক ভারতীয় সেনাপ্রধান (অব.) জেনারেল দলবীর সিং সোহাগ ২০১৫ সালের জুনে বাংলাদেশ সফর করেন এবং সাবেক ভারতীয় বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অরূপ রাহা গত বছরের ফেব্রæয়ারিতে ঢাকা সফর করেন। ভারতের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকরও গত বছরের নভেম্বর মাসে ভারতীয় তিন বাহিনীর উপ-প্রধান এবং কোস্ট গার্ডের প্রধানদের সাথে নিয়ে ঢাকা ঘুরে গেছেন। সে সময়ে তিনি সামরিক চুক্তি করার প্রস্তাব করলেও বাংলাদেশ রাজি না হওয়ায় পরে সামরিক সমঝোতা স্মারক নিয়ে দর কষাকষি শুরু হয়। মনোহর পারিকর ঐ সফরে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সহযোগিতার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টার সঙ্গেও বৈঠক করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বলেন, আমরা ৮ এপ্রিল ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার ওপর একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে যাচ্ছি। তবে সে চুক্তিতে আমাদের প্রতিরক্ষা ও সার্বভৌমত্বের জন্য কোনো হুমকিস্বরূপ কিছু নেই। এমনকি এটা চীনের সাথে আমাদের স্বাক্ষরিত আমব্রেলা প্রতিরক্ষা চুক্তির মতো নয়।
কি আছে প্রতিরক্ষা চুক্তিতে
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সামরিক সমঝোতায় দুই দেশ সম্মতি দিলে প্রশিক্ষণের স্বার্থে সামরিক বিশেষজ্ঞ পর্যবেক্ষকদের সফর বিনিময়ের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ প্রশিক্ষণ পরিচালিত হবে। এছাড়া সামরিক ও শিক্ষামূলক কোর্স বা কার্যক্রমে দুই দেশের বাহিনীর সদস্যরা অংশ নেবেন।
সমঝোতা স্মারকের খসড়ায় আরো আছে, দুই দেশের যুদ্ধজাহাজ এবং উড়োজাহাজের সফর বিনিময়, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক রেখায় সমন্বিত টহলসহ যৌথ ও সমন্বিত অনুশীলন, মহাকাশ প্রযুক্তি সহযোগিতা ও সামুদ্রিক অবকাঠামো উন্নয়নের মতো বিভিন্ন দিক। খসড়ায় প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় দ্বিপাক্ষিক তথ্য আদান-প্রদানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বলা হয়েছে তথ্য নিরাপত্তার শর্তগুলো সমঝোতা স্মারকের নির্ধারিত মেয়াদ শেষেও কার্যকর থাকবে। দুই পক্ষের সই করার দিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য কার্যকর হবে এই সমঝোতা। আর মেয়াদ শেষের অন্তত তিনমাস আগে কোনো একটি পক্ষ লিখিত আপত্তি না জানালে আরো পাঁচ বছরের জন্য এই সমঝোতা কার্যকর হবে। বাংলাদেশের নৌ ও উপকূলরক্ষী বাহিনীর জন্য জাহাজ, সামরিক উপকরণ এবং ট্রেনিং দিয়ে সাহায্য করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে ভারতের তরফ থেকে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস-এর খবরে বলা হয়েছে, ভারত এমন একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি চাইছে যার আওতায় প্রশিক্ষণ, সামরিক সরঞ্জাম বিক্রি এবং দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। তারা আরো জানায়, প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যাপারে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে, তবে এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
সর্বশেষ জানা গেছে, ব্যবসাবান্ধব সামরিক সহযোগিতা কাঠামোর সমঝোতা স্মারক নিয়ে দর কষাকষি করছে বাংলাদেশ ও ভারত। এছাড়া ভারত থেকে সামরিক সরঞ্জাম কিনতে ৫০ কোটি ডলার লাইন অফ ক্রেডিটবিষয়ক পৃথক একটি সমঝোতা স্মারক নিয়েও দর কষাকষি করছে দুই দেশের সরকার। দুই পক্ষের আলোচনায় রয়েছে চিটাগাং ড্রাই ডক, খুলনা শিপইয়ার্ড ও নারায়ণগঞ্জ ড্রাই ডকের সঙ্গে ভারত ইলেকট্রনিক্স ও গার্ডেন রিপ শিপবিল্ডার্সের মধ্যে চারটি সমঝোতা স্মারকের বিষয়টিও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সামরিক সমঝোতা স্মারকে নতুন দু’টি দফা যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া এই স্মারকে আর যেসব বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে, সেগুলো আগে থেকেই কোনও ধরনের চুক্তি ছাড়াই সম্পাদন করে আসছে বাংলাদেশ ও ভারত। এ সমঝোতা স্মারকে যুক্ত করা নতুন দফা দু’টির একটি বাণিজ্যবিষয়ক এবং অন্যটি দুই দেশের সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা সচিবের মধ্যে বার্ষিক আলোচনা সংক্রান্তবিষয়ক দফা।
বাণিজ্যবিষয়ক দফায় বলা হয়েছে, দুই দেশের সামরিক শিল্পের (ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রিজ) সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি বা বেসরকারি খাতের যে কোনও প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিকভাবে টিকে থাকতে সক্ষম, প্রতিযোগিতামূলক দামে পণ্য সরবরাহ, গুণগত মান নিশ্চিতকরণ এবং দুই দেশের জন্য লাভজনক এমন জয়েন্ট ভেঞ্চার বা অন্যান্য ব্যবসা করতে পারবে। তবে এ ধরনের জয়েন্ট ভেঞ্চারে তৃতীয় কোনও পক্ষ থাকলে ওই পক্ষ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে এই দফায়।
সামরিক শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশী কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হলো, বাংলাদেশ অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি, বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি (বিএমটিএফ), চিটাগাং ড্রাই ডক, খুলনা শিপইয়ার্ড ও নারায়ণগঞ্জ ড্রাই ডক। ভারতেরও বেশকিছু সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামরিক শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
স্মারকে নতুন করে যুক্ত করা দফায় রয়েছে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ও প্রতিরক্ষা সচিবের মধ্যে নিয়মিত বার্ষিক আলোচনা হওয়ার বিষয়টি। স্মারকে যুক্ত থাকা অন্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষণ, যৌথ মহড়া, তথ্য বিনিময় এবং অন্যান্য সহযোগিতা। এগুলো কোনও ধরনের চুক্তি ছাড়াই দু’দেশের মধ্যে সম্পাদিত হচ্ছে।
এ সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ কত দিনের জানতে চাইলে সরকারের এক কর্মকর্তা বলেন, এটি স্বল্পমেয়াদের জন্য হবে। তবে কোনও পক্ষ বাধা না দিলে অটো রিনিউয়াল শর্তের আওতায় স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এর মেয়াদ বাড়বে।
এর আগে, ২০০২ সালে সামরিক খাতে কারিগরি সহায়তায় অটো রিনিউয়াল বিধান রেখে বাংলাদেশ ও চীন সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছিল পাঁচ বছরের জন্য। ওই স্মারক এখনও বলবৎ আছে।
এদিকে, ৫০ কোটি ডলার লাইন অব ক্রেডিট দিয়ে বাংলাদেশ কী ধরনের সামরিক সরঞ্জাম কিনতে পারে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, সামরিক বাহিনীর জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ভারত প্রতিযোগিতামূলক দামে সরবরাহ করলে এবং অন্য শর্তাবলী মেনে নিলে প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য কেনা হবে।
প্রসঙ্গত, স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২-২০১৬ মেয়াদে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অস্ত্র আমদানিকারক দেশ ছিল ভারত। তারা তাদের অস্ত্র কেনার জন্য রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল, দক্ষিণ কোরিয়া ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের ওপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে বাংলাদেশ বেশিরভাগ অস্ত্রই সংগ্রহ করে চীন থেকে। এছাড়া, রাশিয়া ও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ থেকেও অস্ত্র সংগ্রহ করে থাকে বাংলাদেশ। এবার ৫০ কোটি ডলারের লাইন অব ক্রেডিট দিয়ে ভারত থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনার পথে এগিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ।
দুই দেশের মধ্যে সামরিক সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষর হবে কিনা জানতে চাইলে সরকারের ওই কর্মকর্তা বলেন, সামরিক বিষয়ে কোনও ধরনের চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক সই না হওয়া পর্যন্ত বলা যাবে না এর ভবিষ্যৎ কী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।