নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
জাহেদ খোকন : অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সভাপতি এ এস এম আলী কবীরের অভিযোগ খন্ডন করে যেখানে বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস বলছেন, ১০ লাখ ৪৭ হাজার টাকা উত্তোলনের ক্ষেত্রে সভাপতির মৌখিক অনুমতি ছিল। সেখানে জাতীয় ক্রীড়া পুরষ্কারপ্রাপ্ত সংগঠক আলী কবীর বলছেন অন্য কথা। তিনি বলেন,‘আমার মনে পড়ে না চেঙ্গিস আমাকে বলেছিলেন ওই টাকা উত্তোলনের বিষয়ে।’ আলী কবীর যোগ করেন, ‘গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত একমাসে ফেডারেশনের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে মোট ২৫ লাখ ৪৭ হাজার টাকা তোলা হয়েছে। এই টাকার মধ্যে আগে তোলা ১৫ লাখের ব্যাপারে আমি জেনেছি ৪০তম জাতীয় সিনিয়র অ্যাথলেটিক্স চলাকালে। কিন্তু বাকি ১০ লাখ ৪৭ হাজার টাকা তোলার ব্যাপারে কিছুই জানিনা। তাই আমার অনুমতি থাকার প্রশ্নই ওঠে না। এ ব্যাপারে লিখিত কোনো প্রমাণও নেই।’ তিনি আরও বলেন,‘ ইব্রাহিম চেঙ্গিস আমার ছোট ভাই। তিনিও আমাকে বড় ভাই হিসেবেই শ্রদ্ধা করেন। গেল প্রায় চার বছর তিনি স্বচ্ছতার ভিত্তিতেই কাজ করে গেছেন। কিন্তু মেয়াদের শেষ দিকে এসে জট পাকিয়েছেন। ভুল আমারও হতে পারে, তারও হতে পারে। তাই তাকে সব সময়ই বলেছি, যে কোনো কাজের লিখিত প্রমাণ রাখতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চেঙ্গিস তা রাখেননি। আমি ফেডারেশনের শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি সব সময়ই। দায়িত্বকালে এ ব্যাপারে চেঙ্গিসও আমাকে সহযোগিতা করেছেন। মতের অমিল থাকতে পারে, তাই বলে তার সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ নেই। বড় ভাই হিসেবে আমার দায়িত্ব ছিলো তার ভুল-ত্রুটিগুলো ধরিয়ে দেয়া। আমি সেই চেষ্টাই করেছি। একবারও বলিনি তিনি টাকা অত্মসাৎ করেছেন। বলেছি আমাকে না জানিয়ে টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।’
সভাপতির বিরুদ্ধে অনেকেরই অভিযোগ তিনি নাকি সর্বশেষ কমিটির মেয়াদকালে গেল চার বছর নিয়মিত ফেডারেশন অফিসে আসেননি। এবং পৃষ্ঠপোষক আনার ক্ষেত্রে কোনো ভ‚মিকাই রাখেননি। এ প্রসঙ্গে আলী কবীরের কথা,‘দেশের ক্রীড়া ফেডারেশনগুলোতে যারা দায়িত্ব পালন করেন তারা সব সময়ই স্বেচ্ছাশ্রম দেন। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ফেডারেশনের কোনো সদস্যই বেতনভুক্ত নন। তাই তাদেরকে নিয়মিত অফিস করতে হয়না। যখনই আমাকে দরকার পড়েছে তখনই আমি ফেডারেশন অফিসে গিয়েছি। বিশেষ করে নির্বাহী কমিটির সভাগুলোতে নিয়মিতই আমার উপস্থিতি ছিল। আর পৃষ্ঠপোষক আনার ক্ষেত্রে আমি সব সময়ই সাধারণ সম্পাদকের ইচ্ছার প্রধান্য দিয়েছি। এখানে আমি সহযোগিতা করিনি বললে ভুল হবে।’
এ এস এম আলী কবীর প্রথমবার অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সভাপতি হন ২০০৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। এই মেয়াদে তিনি ২০০৮ সালের ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তখন সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মোশারফ হোসেন শামীম। মাঝে ৯ মাসের বিরতিতে ২০০৯ সালের ১২ আগস্ট দ্বিতীয়বার সভাপতির দায়িত্ব পান আলী কবীর। তার দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কারপ্রাপ্ত সাবেক কীর্তি অ্যাথলেট মো: শাহ আলম। কিন্তু চার বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই শাহ আলমকে পদ থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, আলী কবীরের অসহযোগিতার কারণেই নাকি মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই চলে যেতে হয়েছিল শাহ আলমকে। ২০১১ সালের ২৭ নভেম্বর তার চেয়ারে ভারপ্রাপ্ত করে বসানো হয় স্বীকৃত বিএনপি নেতা মো: মনজুর মোরশেদকে। যিনি সর্বশেষ কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। আর ২০১৩ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত হয়ে সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসেন ইব্রাহিম চেঙ্গিস। যিনি মেয়াদ শেষ করেই গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিদায় নেন। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নেয়া প্রসঙ্গে শাহ আলম বলেন,‘নির্বাচনে জয়ী হয়েই ২০০৮ সালের ২৯ অক্টোবর সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসি আমি। কিন্তু দুঃখের বিষয় অজ্ঞাত কারণে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার এক বছর আগেই আমাকে বিদায় নিতে হয়। আমি বলব, তখন সুকৌশলেই আমাকে সরানো হয়েছিল। ব্যাপারটি সভাপতি এ এস এম আলী কবীরকে জানালে তিনি তখন বলেছিলেন,‘সামনের বার্ষিক সাধারণ সভায় সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে আবার আপনাকে ফিরিয়ে আনা হবে’। কিন্তু তিনি পরে কোনো আলোচনা করেছিলেন কিনা তা আমি জানিনা।’
পরপর দু’টি নির্বাচিত কমিটির সাধারণ সম্পাদকের মেয়াদকালে আলী কবীর সভাপতি ছিলেন। একজনকে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বিদায় নিতে হলেও অন্যজন মেয়াদপূর্ণ করেই যান। তবে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে! এক্ষেত্রে কী বলা যায়?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।