নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
চতুর্থ দিনের শেষ ঘণ্টায় স্কোরবোর্ডে উইকেটহীন ৬৭ রান ওঠায় পঞ্চম দিনে ড্রয়ের চ্যালেঞ্জ ছিল বাংলাদেশ দলের। ৯৮ ওভার কোনোমতে পার করে দিতে পারলেই গল এ আর একটি গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রচনা করতে পারতো বাংলাদেশ। তবে চতুর্থ ইনিংসের চ্যালেঞ্জ নিতে পারেনি বাংলাদেশ দল। পঞ্চম দিনে ৩০৫ মিনিটে ১৩০ রান যোগ করতে বাংলাদেশ হারিয়েছে সব ক’টি উইকেট। ড্রয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে এমন হারে ব্যাটসম্যানদের মানসিকতাকে দায়ী করেছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বের চৌম্বক অংশ গল থেকে পাঠিয়েছেন দৈনিক ইনকিলাবের বিশেষ সংবাদদাতা শামীম চৌধুরী
ষ ড্রয়ের কি কোনো আশা ছিল?
মুশফিক : হ্যা, আমাদের সে রকম একটা আশা তো ছিলই। কারণ গতকাল (গত পরশু) ওপেনাররা খুব ভালো ব্যাটিং করেছে। পঞ্চম দিনের প্রথম আধ ঘণ্টা-এক ঘণ্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা ভালো কিছু করতে পারিনি। প্রথম পাঁচজন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলার পর কাজটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। ম্যাচ আর জেতা যাবে না, যখন এটা বোঝা যায় এবং প্রতিপক্ষ লাইন-লেন্থ ঠিক রেখে বোলিং করে যায়, তখন সব কিছু কঠিন হয়ে পড়ে। আজ (গতকাল) সকালে দ্রæত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে ফেলার কারণেই ম্যাচ হেরে আমাদের চড়া মূল্য দিতে হলো।
ষ এই ম্যাচ থেকে কী পেলেন?
মুশফিক : সৌম্য দুই ইনিংসেই ভালো ব্যাটিং করেছে। তামীমও ভালো ব্যাটিং করেছে। বোলিংটাও ঠিকই ছিল। তবে আমাদের যে পরিকল্পনা ছিল, তা আমরা প্রয়োগ করতে পারিনি। তিন বিভাগেই শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাজে খেলেছি। শ্রীলঙ্কাই এই ম্যাচটা জয়ের যোগ্য দাবিদার।
ষ হেরাথের বোলিংকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?
মুশফিক : সে চ্যাম্পিয়ন বোলার। আমরা জানতাম যে, হেরাথই আমাদের অন্যতম বড় হুমকি হবে। বাঁ-হাতি বোলার হিসেবে দারুণ কীর্তি গড়ায় তাকে অভিনন্দন। আশাকরি শ্রীলঙ্কার হয়ে সে আরো অনেক দিন ভালো খেলবে। তবে আমাদের আরো ভালো ব্যাটিং করা উচিত ছিল। উইকেট না খেলার মতো ছিল না।
ষ অ্যাপ্লিকেশন কি ঠিকঠাক ছিল?
মুশফিক : মানসিক অবস্থা ঠিকঠাক না থাকলে একটা বলেই ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যেতে পারে। দ্বিতীয় ইনিংসেও ওদের উপল থেরাঙ্গা যেভাবে ব্যাটিং করেছে, তাকে দেখে মনেই হয়নি তার কোনো সমস্যা হয়েছে। আমাদের ব্যাটসম্যানদের মানসকিতা আমাকে হতাশ করেছে, অধিনায়ক হিসেবে এটাই বলব। গতকালও আমাদের খুব ভালো আশা ছিল। সৌম্য-তামীম দারুণ জুটি গড়েছে। আমরা ভেবেছি, প্রথম সেশনটাও যদি আমরা কম উইকেট হারাই, টিকে থাকতে পারি, তাহলে আস্তে আস্তে আমরা ড্রয়ের দিকেই এগিয়ে যেতে পারব। সেটা আমরা পারিনি। এটা আমাদের জন্য বড় একটা ব্যর্থতা। আমাদের একটা সুযোগ হাতছাড়া হলো।
ষ সৌম্য’র ৪৯ বলে ৫৩ কে কি টেস্টের জন্য ভালো ব্যাটিং বলবেন?
মুশফিক : প্রতিপক্ষ যখন দেখবে আমাদের জয়ের কোনো সম্ভাবনা নেই, তখন নানাভাবে আক্রমণ করবে, সিøপে ফিল্ডার থাকবে, সিলি পয়েন্টে থাকবে, ক্যাচিং পজিশনে অনেকগুলো ফিল্ডার থাকবে। এ অবস্থায় ঠুকে ঠুকে সারাদিন খেলা খুব কঠিন। এ ক্ষেত্রে ন্যাচারাল গেমটাই খেলা উচিত। সে দিক থেকে বলব, সৌম্য গতকাল (গত পরশু) যেটা মারার বল, সেটাই মেরেছে। তবে আজ যেভাবে শুরু করেছে, সেটা হতাশাজনক। এভাবে খেললে দলের জন্য চাপ হয়ে যায়। কারণ আমাদের সবার গড় ৩০-৩৫ এর মধ্যে। তাই যারা সুযোগ পাবে, তাদের উচিত দায়িত্ব নিয়ে খেলা। বিশেষ করে উপরের পাঁচ-ছয়জন ব্যাটসম্যানের উচিত আরো দায়িত্ব নেয়া।
ষ সৌম্য-মুমিনুলের রিভিউ কোনো চাপ তৈরি করে দিয়েছিল?
মুশফিক : সৌম্য বুঝতে পারে নাই, ও বোল্ড হয়েছে কি না। মুমিনুলেরটা বলব, ওরা দুজন আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টপঅর্ডার যদি দুই-তিন ওভারের মধ্যে আউট হয়ে যায়, তাহলে যে কোনো ড্রেসিংরুমেই দুশ্চিন্তা তৈরি হয়ে যায়।
ষ দলের ফোকাস নড়ে গেলো?
মুশফিক : গত দুইটা সিরিজের কথা বলতে পারি, আজকের (গতকাল) মতো খারাপ কিন্তু কোনো ইনিংসে হয়নি। প্রথম ইনিংসে কিন্তু আমরা খারাপ খেলেও ৩১২ করেছি। আজ (গতকাল) ১০ উইকেটে ৯৮ ওভার ব্যাটিংয়ের চ্যালেঞ্জ ছিল। সে সুযোগগুলো মাঠে তৈরি হয়, সেগুলোতে যাতে আমরা আরো সুশৃঙ্খল হতে পারি, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।
ষ অনেকে গ্রামারের বাইরেও শট খেলছে? মানসিকভাবে এটাও কি একটা বাধা নয়?
মুশফিক : ভালো বল, স্ট্যাম্পের বল শট করতে গেলে আউট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বাইরের বল খেলেও রান করতে হবে। এটা আমি বিশ্বাস করি। প্রথম ইনিংসে সাকিবের আউটকে দুর্ভাগ্যজনক বলব। আজ (গতকাল) আমার আউট নিয়েও একই কথা বলব। আমার ক্ষেত্রে লেগ সিøপ ছিল না, শর্ট ফাইন লেগ ছিল না, আমি যদি এই বলে রান না করি, কোন বলটায় করব। এটা বলতে পারেন, আমরা যেভাবে শটটা খেলা দরকার, তা পারিনি। ব্যাটের যেখানে শটটা লাগার দরকার, সেখানে লাগেনি।
ষ একাদশ কি ঠিক ছিল? ওদের স্পিনারররা কিন্তু ভালো খেলেছে?
মুশফিক : আমরা যদি ড্র করতাম, তাহলে কিন্তু এই প্রশ্নটা আসতো না। এই টেস্টটা কিন্তু বোলিংয়ের কারণে নয়, হেরেছি ব্যাটিংয়ে কারণে। এখানে এতটা স্পিন ছিল না যে ব্যাটিংয়ে সমস্যা হওয়ার কথা। তবে প্রথম ইনিংসে এত বেশি পিছিয়ে ছিলাম, তারপর এত বড় একটা টার্গেট, এমন এক পরিস্থিতিতে যে কোনো প্রতিপক্ষ দল অনেক স্বাচ্ছন্দে বোলিং করতে পারে। আর শুভাশিসের ওই ‘নো’ বলটা (কুশল মেন্ডিসের শূন্য রানে) না হলে আরো দুই-একটা উইকেট পড়েও যেতে পারতো। আমার মনে হয়, কিছু কিছু জায়গা আছে যেখানে আমরা নিজেদের প্রতি সুবিচার করিনি। নো বল একটা ক্রাইমের মতো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।